নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
টাকা চেয়ে হুমকি ফোন করেছিল যারা, টাকার টোপ দিয়েই তাদের জালে ফেলল পুলিশ।
হাওড়ার শপিং মলে বোমাতঙ্কের ঘটনায় সোমবার গভীর রাতে দুই স্থানীয় যুবককে গ্রেফতার করার পরে এমনই দাবি করেছে হাওড়া সিটি পুলিশ। ধৃত দুই ব্যক্তির নাম রিজওয়ান সেলিম ও মহম্মদ শাকিল। ধৃতদের বাড়ি স্থানীয় কাউজ ঘাট রোডে। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশের ধারণা, ভয় দেখিয়ে তোলাবাজির জন্য ওই দুই যুবক এই কাজ করেছে।
পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, রিজওয়ান শিবপুর এলাকার জগৎ ব্যানার্জি ঘাট রোডের ওই শপিং মলে আগে সল্টলেকের একটি নিরাপত্তা সংস্থার হয়ে রক্ষীর কাজ করত। কিন্তু অনিয়মিত আসার জন্য মাস আটেক আগে তার চাকরি যায়। কয়েক মাস বসে থাকার পরে ওই মল-কর্তৃপক্ষর থেকে টাকা আদায়ের ফন্দি আঁটে সে। এ জন্য পাশের বাড়ির যুবক মহম্মদকে ওই মলে ভাল চাকরির লোভ দেখিয়ে সঙ্গে নেয়। পুলিশের দাবি, পরিকল্পনা মতো রিজওয়ান বেশি টাকা দিয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ছাড়া মোবাইলের একটি সিমকার্ড কেনে। এর পরে রবিবার মলের এক নিরাপত্তাকর্মীর মোবাইলে বার্তা পাঠিয়ে বোমাতঙ্ক তৈরি করে সে। পরে আবার ওই ফোন থেকেই জিটি রোডের পাশে একটি আবাসনের সামনে ১০ লক্ষ টাকা চেয়ে পাঠায় এবং টাকা না আনলে বোমা দিয়ে মল উড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেয়। পরের দিন, সোমবার বিকেলে একই ভাবে ফোন করে টাকা চেয়ে হুমকি দেয়। তার পরে আগের দিনের মতোই ফোনটি বন্ধ করে দেয় ওরা।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরেই ওদের ধরার ছক কষা হয়। যে মোবাইলে হুমকিগুলি আসছিল, সেখান থেকেই দুষ্কৃতীদের বন্ধ ফোনে বার্তা পাঠানো হয়। তাতে লেখা হয় যে, মল-কর্তৃপক্ষ ১০ লক্ষ টাকা দিতে রাজি হয়েছেন। একটি কালো ব্যাগে ওই টাকা রাত দেড়টা নাগাদ মন্দিরতলার একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির সামনে রাখা থাকবে।
পুলিশ জানায়, পরিকল্পনা মতো একটি কালো ব্যাগের নীচে বাক্স রেখে উঁচু করা হয় এবং উপর দিকে কিছু টাকা সাজিয়ে দেওয়া হয়। এর পরে ব্যাগটি ওই নির্দিষ্ট বাড়ির সামনে রেখে সিটি পুলিশের গোয়েন্দাদের একটি দল ওই বাড়ির চারপাশে অপেক্ষা করতে থাকে। পুলিশের দাবি, রাত দেড়টা নাগাদ রিজওয়ান আর শাকিল একটি মোটরবাইক করে এসে ব্যাগটি নিয়ে পালাতে গেলে তাদের ঘিরে ফেলা হয়। ফাঁক গলে মোটরবাইক ও টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায় রিজওয়ান। ধরা পড়ে শাকিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাতেই শিবপুরের একটি গোপন জায়গা থেকে গ্রেফতার করা হয় রিজওয়ানকে। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “টাকার ব্যাগ ও মোটরবাইকটির এখনও খোঁজ মেলেনি। ধৃতদের থেকে দু’টি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে।” |