প্রবন্ধ ৩...
চোখে দেখিনি
কিশোর বয়সে মা বাড়ির লক্ষ্মীপুজোর মিষ্টি কিনতে পাঠিয়েছিলেন। পইপই করে বলে দিয়েছিলেন পনা ময়রার দোকান ছাড়া যেন অন্য কোথাও না যাই। বাজারে অনেকগুলো মিষ্টির দোকান। একটার সামনে আদুড় গায়ে চেয়ারে বসে এক বয়স্ক ভদ্রলোক, সাহস করে তাঁকেই ধরলাম: আচ্ছা, এইটা কি পনা ময়রার দোকান? ভদ্রলোক ধমকের সুরে বললেন: নিজে সন্দেশ খেয়ে চিনতে পারবে? ঘাড় নাড়তেই হাঁক পাড়লেন: ছোঁড়াকে দু’টো সন্দেশ খাওয়া। আমার দিকে ফিরে বললেন: মিষ্টি দিয়েই পরিচয় হোক তবে।
এ বার পুজোর আগে বড় বড় হোর্ডিংয়ে ছোটবেলার প্রিয় লেখকদের ছবি দেখে কৈশোরের অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ল। সুনীল-শীর্ষেন্দু-সঞ্জীব-সমরেশ’দের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের পরিচয়, প্রায় চল্লিশ বছর, খুব কাছ থেকে ওঁদের চিনি। শারদীয় দুপুরে ঠান্ডা মেঝেতে উপুড় হয়ে শুয়ে পুজোসংখ্যায় সুনীলের কাকাবাবু, শীর্ষেন্দুর মজার ভূত, সঞ্জীবের বড়মামা বা সমরেশের অর্জুনের গল্প পড়তাম। সন্তু-অর্জুন-ডোডো-তাতাই আমার বন্ধু ছিল, সুনীল-শীর্ষেন্দু ভারী কাছের লোক।
লেখকদের ছবি না দেখলেও, এঁদের প্রত্যেকের লেখার আলাদা আলাদা স্টাইলটাই মনে তাঁদের অবয়বের ছাপ ফেলে গেছে, পনা ময়রার সন্দেশের স্বাদের মত। ছবি না দেখলেও, ছেলেবেলা থেকেই আরও অনেককেই চিনতাম, তাঁদের কাজের মাধ্যমে। কানে যেমন এখনও লেগে আছে, “খবর পড়ছি দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়।” বীরেন্দ্রকৃষ্ণ বা দেবদুলালের গলাই ছিল তাঁদের পরিচয়। পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের সুরে অজস্র হিট বাংলা গান আজও শুনি; কিন্তু কেমন দেখতে ছিলেন পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় বা গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার? জানতামই না।
তার পর নতুন যুগ এল। সেলেব্রিটির যুগ। এখন আমরা সবাই সবাইকে চিনি। না চিনে কোনও উপায় নেই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.