জনসংযোগের প্রধান হাতিয়ার যখন মা দুর্গা
দিনের ২৪ ঘণ্টাই তাঁদের কাটে বন, জঙ্গল, পাহাড়, টিলা অধ্যুষিত এলাকায়। সঙ্গে থাকে একে-৪৭, ইনসাস রাইফেল, এলএমজি-সহ অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র। জঙ্গি ও দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় ব্যস্ত ত্রিপুরার টিএসআর বাহিনির প্রায় সবাই।
এরই মধ্যে চলছে উপজাতি যুবক, যারা বিপথগামী হয়ে হাতে বন্দুক তুলে নিয়েছে, তাদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য বাহিনীর নিরন্তর প্রয়াস। কখনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কখনও স্বাস্থ্য শিবির, কখনও বা স্থানীয় পুজো-পার্বণে নিজেদের সঁপে দিয়ে সমস্ত গ্রামবাসীকে একই সুরে বেঁধে ফেলার চেষ্টা। এ বারেও রাজ্যে টিএসআর বাহিনীর ১০ নম্বর ব্যাটেলিয়নের শান্তা কুমার, প্রকাশ শীল, অনিল সরকার, সঞ্জিত সরকার, বিশ্বজিৎ দেববর্মা, স্যামুয়েল কুকি, লছমন মিশ্র কিংবা অরুণকুমার বেহরারা মেতে উঠেছেন শারদোৎসবে।
আগরতলার সংহতি ক্লাবের ৫০ ফুটের দুর্গা। ছবি: উমাশঙ্কর রায়চৌধুরী।
নিজেই মূর্তি বানাচ্ছেন শান্তাকুমার। ছোটবেলায় খেলার ছলে পুতুল গড়তেন। জীবনে প্রথম মূর্তি গড়েই পাড়ায় সোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন। টিএসআর বাহিনিতে যোগ দেওয়ার পর নিজের শৈল্পিক সত্তাকে উজার করে দেওয়ার ষোলআনা ইচ্ছাটাই পূরণ করতে পারছেন। ১০ম ব্যাটেলিয়নের শারদোৎসব সেই সুযোগ করে দিয়েছে। খুশি অন্যরাও। অনিল সরকার এবং প্রকাশ শীলরা হাত লাগিয়েছেন মন্ডপ তৈরি ও আলোকসজ্জার কাজে। ডিউটির ফাঁকে ফাঁকেই চলছে কাজ। ষোলআনার মধ্যে ১৫ আনা কাজই প্রায় শেষ। এখন স্রেফ ফিনিশিং টাচ্, জানালেন বাহিনীর আধিকারিক মুক্তাশুক্লা দাস।
এ বারে টিএসআরের পুজোর থিম ওএনজিসি-র ড্রিলিং মেশিন। টিএসআরের হাতেই ত্রিপুরার ওএনজিসি প্রকল্পের নিরাপত্তার দায়িত্ব। ৭০-৭৫ ফুট উঁচু ড্রিলিং মেশিনের সাহায্যে কী ভাবে মাটির নীচ থেকে গ্যাস নির্গত হচ্ছে, সেটাই দেখবেন দর্শনার্থীরা। সবটাই নিজস্ব কারিগরি। এমনকী পুজোর সম্পূর্ণ খরচ-খরচার দায়িত্বও টিএসআর বাহিনির কর্মীদের। জওয়ান লছমন কুমার মিশ্র উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। শিবিরের মন্দিরের পূজারিও বটেন। তিনি জানালেন, ২০০৪-০৫ সালের ঘটনা। এলাকায় জঙ্গি আক্রমণের খবর এল শিবিরে। এক লহমায় ছন্দপতন, দেবী আরাধনায় ব্যস্ত মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান ছেড়ে সহকর্মীরা দৌড়ে গেলেন সংলগ্ন গ্রামে, জঙ্গি মোকাবিলায়। হাতে আগ্নেয়াস্ত্র। বেশ কিছুক্ষণ গুলির লড়াইয়ের পর জঙ্গিরা পিছ্টান দিল। জওয়ানরা ফিরে এলেন শিবিরে। আবার দেবী আরাধনা। আজ রাজ্যে জঙ্গি উপদ্রব কমেছে প্রায় ৯৫ শতাংশ। তাই সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত নিশ্চিন্তে গ্রামের জাতি-উপজাতি সবাইকে নিয়ে চলবে খাওয়াদাওয়া, গান-বাজনা। শারোদৎসবে গা ভাসিয়ে দেওয়া। বাহিনির এক উচ্চপদস্থ কর্তার মন্তব্য, ‘‘এ বারেও শারদীয় উৎসবে বাঙ্ময় হয়ে উঠবে সামাজিক ঐকতানই।’’


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.