উৎসবের আলো জেলেপাড়ার গল্প থেকে
রাজস্থানি স্থাপত্য
বিয়ের পরে এই প্রথম একসঙ্গে কলকাতায় পুজো দেখতে সিডনি থেকে আসছে সৌরভ আর মৌ। তাই ওরা ঠিক করেছে, ছোটবেলার মতো একটা সাবেক পুজো দেখতেই হবে। বন্ধু পাপাইকে ফোনে এ ইচ্ছের কথা জানাতেই অষ্টমীর দিন দু’জনকে চলে যেতে বলল ওর টালিগঞ্জের বাড়িতে।
সেখান থেকেই সকাল সকাল তিন জনে মিলে মুদিয়ালি ক্লাবে অঞ্জলি দেবে। কারণ, এই বছর পুজোয় কোনও থিম রাখছে না ওই ক্লাব। ঐতিহ্য মেনেই পুজো হবে সেখানে। চারটে দিন সাবেক সাজের প্রতিমার দেখা মিলবে ওই পুজো-মণ্ডপে। চার বছর বিদেশে কাটিয়ে তেমন পুজো দেখতেই তো ইচ্ছে করছে ওদের। বন্ধুর কথা শুনে তাই অষ্টমীর প্ল্যানটা ‘লক’ হয়ে গিয়েছে ফোনেই।
তবে আবার কবে পুজো দেখতে কলকাতায় ফেরা হবে, তা জানা নেই। তত দিনে যদি আবার থিম পুজোর ট্রেন্ডটা চলে যায়! তাই বেশ কয়েকটা থিম পুজোও দেখে যেতে চায় সৌরভেরা। পাপাইয়ের কাছেই জানতে চেয়েছে কোথায় কী থিম হচ্ছে। আত্মীয়দের বাড়ি বাড়ি দেখা করার ফাঁকে কয়েকটা মণ্ডপ ঘুরে নেবে বলে ঠিক করেছে ওরা।
যেমন, পাপাইয়ের বাড়ি থেকে বেরিয়ে অষ্টমীর সন্ধ্যাটা ভবানীপুরে মৌয়ের মামার বাড়ি যাওয়ার কথা। ঠিক করা হয়েছে, সেখানে ঢোকার আগেই ‘অবসর’-এর মণ্ডপটা ঘুরে যাবে ওরা। সেখানকার থিম এ বার ‘জেলে’। শুনেই খুব উত্তেজিত মৌ। কয়েক দিন আগেই কোন অস্ট্রেলীয় সহকর্মীকে মন্দারমণির কাছে এক জেলে-পাড়ার গল্প শুনিয়েছে। এ বার পুজো দেখে জেলেপাড়ার আরও খুঁটিনাটি জেনে যেতে পারবে সে।
মৌয়ের ইচ্ছে ছিল এই এক মাসের ছুটির মধ্যে কয়েকটা দিন হরিদ্বার ঘুরতে যাবে। কিন্তু বাবা-মা আগেই জম্মুর টিকিট কেটে ফেলেছেন। কাকার কাছে শুনেছে, তাঁদের পাড়ার পুজো ‘দক্ষিণ-পূর্ব ঢাকুরিয়া সর্বজনীন’ এ বার মণ্ডপ সাজাচ্ছে হরিদ্বারের হরকি পৌরি ঘাটের আদলে। তাই সপ্তমীর রাতটা কাকার বাড়িতেই কাটাবে এ বার। দুধের সাধ ‘থিমে মেটাবে’ মৌ।
ওই কাকার বাড়ি থেকে বেশি দূর নয় ঢাকুরিয়ার ‘শহিদনগর সর্বজনীন’-এর পুজো। সেখানে এ বছরের থিম ‘রাজপুতানা দেশে, মা আপন বেশে”। মণ্ডপ সাজানো হচ্ছে জয়সলমিরের স্থাপত্যের অনুকরণে। রাজস্থানের বিখ্যাত জালির কাজের কথা অনেক বইয়ে পড়েছে সৌরভ। তাই ওই পুজোটাও দেখতে যাবে ওরা। রাজস্থানি কাজের মণ্ডপের ভিতরে দেখা মিলবে সাবেক সাজের প্রতিমার। তা শুনে উৎসাহটা আরও বেড়েছে ওই দম্পতির।
‘বান্ধব সম্মিলনী’র পুজোর কথা সৌরভ অনেক শুনেছে দক্ষিণের বন্ধুদের কাছে। এ বার যখন ঢাকুরিয়ায় যাচ্ছেই, কোনও মতে বাদ দেবে না ওই পুজোটা। কলেজের এক বন্ধুকে ফোন করে জেনেছে সেখানের থিম ‘রাশিচক্র ও দেবীর সাধনা’। ফাইবার গ্লাস, প্যারিস, মাটি আর প্লাইউডে তৈরি মণ্ডপ সাজবে রাশিচক্র দিয়ে। ভিতরে একচালার সাবেক প্রতিমা। একচালার ঠাকুর অনেক দিন দেখেনি ওরা। থিম শুনে সেখানে যাওয়ার ইচ্ছেটা তাই আরও বেড়ে গিয়েছে।
পিকনিক গার্ডেনে সৌরভের দিদির বাড়িতে নবমীর দুপুরে যাওয়ার কথা। গোটা দিন বাড়ি বসে কাটাবে না আগেই জানিয়ে দিয়েছে ওরা। দিদি তাই কাছেই ‘সুনীলনগর সর্বজনীন’-এর পুজো দেখতে নিয়ে যাবে ওদের। সেখানের থিমটা শুনেও পছন্দ হয়েছে কবিতা ভক্ত সৌরভ আর মৌয়ের। এ বার সেখানকার ভাবনা ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’। জীবনানন্দের ভাবনায় সেখানকার মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হবে বাংলার লোক-জীবন এবং প্রকৃতির ছবি।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.