নিজস্ব সংবাদদাতা • কাটোয়া |
স্কুল চত্বরে রয়েছে ট্রান্সফর্মার। তার পাশেই বিদ্যুতের খুঁটি। সেই খুঁটি থেকে নেমে গিয়েছে ‘আর্থিং’ তার। দিন কয়েক আগেই সেই তারে হাত লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় স্কুলেরই এক ছাত্র। তার পর থেকেই প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে পড়ুয়াদের কাটোয়ার খাজুরডিহি মাঝিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না অভিভাবকেরা। গত ৫ অক্টোবর কাটোয়া প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক (পশ্চিম) অন্তরা বিশ্বাস ঘোষ অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকও করেন। কিন্তু অভিভাকেরা জানিয়ে দিয়েছেন ট্রান্সফর্মার সরানো না হলে তাঁরা ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাবেন না।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১ অক্টোবর স্কুল চসাকালীন কলতলায় যায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সোহেল শেখ। ওই কলতলার গা ঘেঁষেই রয়েছে ট্রান্সফর্মার ও বিদ্যুতের খুঁটিটি। বিদ্যুতের খুঁটি থেকে নামা ‘আর্থিং’ তারে হাত লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবন প্রধান ও এক অভিভাবক অশোক সাঁতরার চেষ্টায় কোনও মতে সে প্রাণে বাঁচে। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। ওই দিনই অভিভাবকেরা সিদ্ধান্ত নেন, ট্রান্সফর্মারটি স্থানান্তরিত না করা হলে তাঁরা আর পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠাবেন না। |
অভিভাবকদের দাবিটি প্রশাশনের বিভিন্ন স্তরে চিঠি দিয়ে জানান বৃন্দাবনবাবু। তিনি ওই চিঠিতে দাবি করেন, ২০০৫ সাল থেকে ট্রান্সফর্মারটি স্থানান্তরিত করার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে তো বটেই, বিদ্যুৎ দফতরেও বার বার আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু ট্রান্সফর্মারটি স্থানান্তরিত করা হয়নি। অভিভাবক সানিয়া খাতুন, ঠাকুর দাস সাঁতরাদের কথায়, “প্রধান শিক্ষক বা ওই অভিভাবকের চোখে পড়ে যাওয়ায় সোহেল কোনও মতে প্রাণে বাঁচে। সব সময়ে শিক্ষকরা দেখতে পারবেন এমনটা নাও হতে পারে। তাই পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠাব না বলে জানিয়ে দিয়েছি।”
স্কুলটিতে পড়ুয়ার সংখ্যা মোট ১৬১ জন। শিক্ষকের সংখ্যা পাঁচ। স্কুলের শিক্ষক দীপক সিংহ, পূর্ণেন্দু দে-রা দাবি করেন, এক জন শিক্ষক সব সময়ে দ্বিতল ভবনের নীচের বারান্দায় বসে পাহারা দেন। সেই কারণেই হয়তো দুর্ঘটনার হার বাড়েনি।
অন্তরাদেবী বলেন, “ওই স্কুলে পড়ুয়ারা আসছে না। মিড-ডে মিল বন্ধ। কিন্তু এ ভাবে তো একটা স্কুল চলতে পারে না। ট্রান্সফর্মার সরানোর জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। বিডিও-কে বিষয়টি জানিয়েছি।” কাটোয়া ১ বিডিও আশিস বিশ্বাস বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কাটোয়ার বিভাগীয় বিদ্যুৎ দফতরও। |