|
|
|
|
|
দেবীপক্ষে জাগছেন দেবীরা
নিজস্ব প্রতিবেদন |
|
আর মোটে তিনটে দিন!
স্কুল-কলেজে ছুটি পড়ল বলে। অফিস লক্ষ্মীপুজো অবধি বন্ধ থাকে না বটে, কিন্তু অন্তত সপ্তমী থেকে দশমী ঝাঁপে লাঠি। অর্থাৎ দুপুরে-রাতে জমিয়ে পেটপুজোর ফুরসত। কিন্তু কী খাবেন? কী-ই বা খাওয়াবেন ঘরের রাঁধুনিরা? সে-ই তো থোড় বড়ি খাড়া আর খাড়া বড়ি থোড়। আগের দিনের মা-মাসিমার হাতের সুধা তো বিস্মৃতপ্রায়! কথা হল, যতই নামজাদা হোক না কেন, হোটেলও কিন্তু জোগাতে পারে না বাঙালির পাত থেকে ক্রমশ হারিয়ে যেতে থাকা সেই সব কুলীন ডেলিকেসি। অন্তত সব। অগত্যা বাঙালির মান বাঁচাতে, জান বাঁচাতেও বটে, দুর্গাপুরেরই কয়েক জন ঘরণী মাঠে নামলেন। মনে করিয়ে দিলেন এমনই কিছু ‘ইস্পেশ্যাল’ রান্নার কথা।
|
মাটন পোস্ত |
|
ডলি বসু |
বর্ধমান শহরের নতুনপল্লির বধূ ডলি বসু প্রথম রান্না শিখেছিলেন তাঁর বাবা, প্রাক্তন সেনাকর্মী রাজকিশোর ঘোষের কাছে। আয়কর বিভাগের আধিকারিক সুশান্তবাবুর সঙ্গে বিয়ের পরে রান্নার চর্চা চালিয়ে গিয়েছেন। ডলিদেবীর তৈরি পদটির নাম ‘মাটন-পোস্ত’। তিনি জানান, প্রথমেই শুকনো কড়াইয়ে তেল গরম করে কুচোনো পেঁয়াজ, তেজপাতা, বাদাম দিয়ে ভাজতে হবে। পেঁয়াজে রং ধরলে তাতে হাড় ছাড়া মাংস বা কিমা, নুন, হলুদ, আদাবাটা, লঙ্কাবাটা, রসুনবাটা, টোমাটো ও চিনি দিয়ে কষতে হবে। পরিমাণ মতো জল দিয়ে সেদ্ধ করতে হবে। কিমা সেদ্ধ হয়ে জল শুকিয়ে গেলে নামিয়ে নিতে হবে। এ বার কড়াইয়ে ঘি-গরম করে তাতে বাটা পোস্ত দিতে হবে। আলু সেদ্ধ করে চটকে নিয়ে শুকনো লঙ্কা-সহ আধ কাপ সেদ্ধ মুগডাল শুকনো করে বেটে দিয়ে দিতে হবে। সামান্য নুন দিয়ে একটু নেড়ে নিয়ে পরে সেদ্ধ ডালের বাকিটা দিয়ে দিতে হবে। পেঁয়াজ মেশানো টক দই দিয়ে কষিয়ে তাতে মাংসের কিমা মিশিয়ে ভাল করে নেড়ে নামিয়ে দিতে হবে।
|
কী লাগে |
মাংসের কিমা ২৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ ৫-৬টি, রসুন,
আদাবাটা, ১২টি তেজপাতা, শুকনো লঙ্কাবাটা ও গোটা ২ চামচ।
টমোটো, হলুদ, নুন, চিনি, ঘি, তেল, পোস্ত ৫০ গ্রাম, মুগ ডাল এক কাপ,
বাদাম ২৫ গ্রাম, কিসমিস ২৫ গ্রাম, আলু সেদ্ধ ৪-৫টি, টক দই ২৫০ গ্রাম। |
|
ক্যাপসি পনির |
|
ঈপ্সিতা নন্দী |
১ নম্বর খালুইবিল মাঠের ব্যবসায়ী পরিবারের বধূ ঈপ্সিতা নন্দী শেখালেন ‘ক্যাপসি পনির’। ছেলেবেলায় লুকিয়ে মা মণিকা পালের রান্না দেখে শিখেছেন অনেক কিছুই। তার মধ্যে এটিও একটি। তিনি জানালেন এই রান্নার প্রণালী। কড়াইতে তেল গরম হলে তাতে তেজপাতা দিতে হবে। এর পরে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে নাড়তে হবে যতক্ষণ না তার রং হাল্কা বাদামি হয়। একে একে রসুন, টোমাটো কুচি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ নাড়তে হবে। এর পরে সামান্য হলুদ গুঁড়ো ও স্বাদমতো লঙ্কাগুঁড়ো দিতে হবে। এ বার ক্যাপসিকাম ভেজে তার মধ্যে কুড়িয়ে রাখা পনির ঢেলে দিতে হবে। এ বার আন্দাজমতো নুন-মিষ্টি দিয়ে নাড়তে হবে। তার পরে কিসমিস, কাজু, ধনেপাতা দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।
|
কী লাগে |
৫০০ গ্রাম কুঁড়িয়ে নেওয়া পনির, ক্যাপসিকাম ২০০ গ্রাম,
তিনটি বড় পেঁয়াজ কুচোনো, তিন চা চামচ রসুনকুচো, চার চা চামুচ আদা কুচো,
তিনটি বড় টমোটো কুচো, দেড় চা চামুচ ধনেপাতা কুচো, এক চা চামচ জিরে গুঁড়ো,
চার বড় চামচ সাদা তেল, প্রয়োজন মত ঘি, দেড় চামচ গরম মশলা,
নুন ও মিষ্টি স্বাদমতো, কাজু কিসমিস, তেজপাতা। |
|
সর্ষে চিকেন |
|
চন্দ্রাণী দত্ত |
টিকরহাটের ব্যাঙ্ককর্মী চন্দ্রাণী দত্ত রাঁধতে ভালোবাসেন। কিন্তু সেই অর্থে সময় পান না। মা শান্তিরানি বসুকে দেখতেন দ্রুত নিরামিষ ও আমিষ রান্না করতে। এমনকী মোগলাই রান্নাও করে ফেলতেন আনায়াসেই। মায়ের কাছেই শেখা একটি পদের কথা বললেন। নাম ‘সর্ষে চিকেন’। প্রথমে চিকেনের মাঝারি টুকরোতে টক দই মিশিয়ে ২ ঘণ্টা ধরে ম্যারিনেট করে রাখতে হবে। কড়াইয়ে তেল দিয়ে তাতে শুকনো লঙ্কা, গোলমরিচ দিতে হবে। কুচনো পেঁয়াজগুলি বাদামি করে ভাজতে হবে। টমেটো কুচো, আদা-রসুন বাটা ও সাদা সর্ষের মিশ্রনটি কড়াইয়ে দিয়ে পাঁচ মিনিট কষতে হবে। কষা হয়ে গেলে ম্যারিনেট করা চিকেন দিয়ে নাড়তে হবে। ১০ মিনিট পরে পরিমাণ মতো নুন দিয়ে ঢিমে আঁচে কষতে হবে। মাংস নরম হয়ে গেলে গা মাখা করে এক চামচ মাখন ও এক চামচ গোলমরিচ গুঁড়ো দিয়ে নেড়ে নামিয়ে নিতে হবে।
|
কী লাগে |
চিকেন ৫০০ গ্রাম, সাদা সর্ষে ১৫০ গ্রাম, টক দই ২০০ গ্রাম,
গোলমরিচ ৫-৬টি, গুড়ো গোলমরিচ ১ চামুচ, কাঁচা লঙ্কা ৫-৬টি,
শুকনো লঙ্কা ১টি, পেঁয়াজ ৪টি, টোমাটো ২টি, চিনি ১ চামচ, সর্ষের তেল,
মাখন ১০০ গ্রাম। চার কোয়া রসুন, পরিমাণ মতো নুন ও আদা। |
|
সংকলন: রানা সেনগুপ্ত
ছবি: উদিত সিংহ |
|
|
|
|
|