মাদক মেশানো পানীয় খাইয়ে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। কিন্তু, ছাত্রীর বাড়ির লোকজন থানায় ধর্ষণের বিষয়টি লিখিত ভাবে জানাতে গেলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রবিবার কোচবিহার কোতোয়ালি থানায় ঘটনাটি ঘটেছে। ছাত্রীটির বাড়ির লোকের অভিযোগ, সন্দেহভাজন এক জনের নামোল্লেখ করে থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে সেখানকার পুলিশ উল্টে অভিযোগকারীদেরই লক আপে ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। বর্তমানে ছাত্রীটি কোচবিহার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ছাত্রীর বাবা গোটা ঘটনাটি হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। হাসপাতালের পক্ষ থেকে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “অভিযোগ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা নয়। তাই কেন পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠল তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর পাশাপাশি ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা রুজু করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহারের একটি হাই স্কুলের ওই ছাত্রীটির বাড়ি শহরের উপকণ্ঠে। শনিবার স্কুলে পৌঁছতে তার দেরি হয়ে যায়। স্কুল গেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সে বাড়ি ফিরে আসছিল। রাস্তায় দুই যুবক ছাত্রীটিকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার নাম করে একটি বাইকে তুলে নেয়। পথে মাদক মেশানো পানীয় জাতীয় কিছু খাইয়ে দেয়। প্রায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ওই ছাত্রীকে একটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ছাত্রীকে সেখানেই ধর্ষণ করা হয় বলে তার বাড়ির লোকজনদের অভিযোগ। ওই দিন ছাত্রীটি বাড়ি না-ফেরায় বাড়ির লোকজন এবং আত্মীয়-স্বজন নানা জায়গায় খোঁজ করলেও পুলিশের কাছে যাননি। রবিবার দুই যুবক ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ছাত্রীটির পেটে ব্যথ্যা হচ্ছে বলে তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে পালিয়ে যায়। পরে অপরিচিত একটি মোবাইল নম্বর থেকে ছাত্রীর বাড়ির লোকজনকে ফোন করে হাসপাতালে ভর্তি করানোর বিষয়টি এক যুবক জানিয়ে দেন। এর পরে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে যান। ছাত্রীটি তাঁদের সব কিছু জানালে বাড়ির লোকেরা থানায় যান। ছাত্রীর পিসির অভিযোগ, “আমার ভাইঝি ওকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে। কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলাম। পুলিশ উল্টে আমাদেরই লক-আপে ঢুকিয়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। তাই থানা থেকে ফিরে এসে হাসপাতালে সব জানাই।” ওই ছাত্রীর দাদা দাবি করেছেন, “বোনকে ধর্ষণ করা হয়েছে। সন্দেহভাজন একজনের নামও আমরা পুলিশকে বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অভিযোগ নেওয়া হল না।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রীর বাবা সুপারকে দেওয়া অভিযোগে লিখেছেন, মেয়ের মুখে জানতে পারি তাকে ফুঁসলে অপহরণ করে অত্যাচার করা হয়েছে। কোচবিহার জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুব্রত হালদার বলেন, “ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের নজরে আনা হয়েছে। পুলিশ পদক্ষেপ করলে মেডিক্যাল পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হবে।” |