শ্রমিকপক্ষ কিছুটা সুর নরম করায় ১৯ দিন পরে সোমবার খুলল মালদহের সিল্কের সুতোর কারখানা। সিটুর জেলা সভাপতিকে ছাড়াই কারখানার মালিকপক্ষের সঙ্গে রবিবার বৈঠকে বসেছিলেন আন্দোলনকারীরা। তিন বছরে ২৬৬০ টাকা বেতন বৃদ্ধির দাবি মেনে নিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন শ্রমিকরা। কারখানার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর মনোজ জৈন বলেন, “কারখানা খোলার ব্যাপারে শনিবার আন্দোলনকারী ৫০ জন শ্রমিক আমাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। ওই বৈঠকে সিটুর জেলা সভাপতি কিংবা কোন ট্রেড ইউনিয়নের কোন নেতা হাজির ছিলেন না। শ্রমিকরা নিজেরাই কারখানা খোলার ব্যাপারে উদ্যোগী হন। কারখানা বন্ধ করে যে শ্রমিকরা তিনবছরে ২৮০০ টাকা বৃদ্ধির দাবিতে অনড় ছিল। কিন্তু গতকাল বৈঠকে সেই দাবি থেকে শ্রমিকরা সুর নরম করে ২৬৬০ টাকা দেওয়ার দাবি জানান। আমরা সেই দাবি মেনে নেওয়ায় কারখানা খুলল। সকাল থেকে কারখানার দরজা আন্দোলকারী শ্রমিকরা খুলে দিয়ে কারখানা কাজ শুরু করেছে। কারখানার এক্সিগিউটিভ ডিরেক্টর জানান, ইতিমধ্যে ১০ লক্ষ টাকার সিল্কের সুতো নষ্ট হলেও প্রায় ৪ কোটি টাকা পণ্য রফতানির সুযোগ হাতছাড়া হল না। এদিন সিটুর মালদহ জেলা সম্পাদক প্রণব দাস জানান, ইউনিয়নের নেতাদের বাদ দিয়ে শ্রমিকরা বৈঠকে বসেন। তাঁর মতে, “আন্দোলনে শ্রমিকদের জয় হয়েছে।”
কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রমিকদের সঙ্গে কারখানার মালিকপক্ষের বেতনের চুক্তি গত মার্চ মাসে শেষ হয়ে গিয়েছে। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও মালিকপক্ষ বেতন বৃদ্ধি নিয়ে কোন আলোচনায় বসেননি। এই অভিযোগে ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেল থেকে তিন বছরে ২৮০০ টাকা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সিটুর জেলা সভাপতি মেঘবরণ সেনের নেতৃত্বে কারখানা বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করে কারখানার পাঁচ শতাধিক শ্রমিক। এদিকে সিটুর জেলা সভাপতির নেতৃত্বে সিল্ক সুতোর কারখানা বন্ধ করে শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করায় অস্বস্তিতে পড়ে সিটুর রাজ্যে ও জেলা নেতৃত্বের একাংশ। বিষয়টি নজরে আসতেই সিটুর রাজ্য নেতৃত্ব নড়েচড়ে বসেন। কারা কিসের দাবিতে সিল্কের কারখানা বন্ধ করে আন্দোলন করছে সেব্যাপারে সিটুর রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী জেলা সিটু নেতৃত্বকে সংযত হওয়ার পরামর্শ দেন। রবিবার বেলা ১১ টা থেকে বিকেল ৪ টা পযর্ন্ত টানা পাঁচ ঘন্টা মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পরে আন্দোলনকারী শ্রমিকরা কারখানা খোলার কথা ঘোষণা করেন। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রমিকদের দাবি মেনে মালিকপক্ষ কারখানার প্রতিটি শ্রমিকের জন্য প্রথম বছর ১৫৬০ টাকা, দ্বিতীয় বছর ৬০০ টাকা ও তৃতীয় বছর ৫০০ টাকা, তিন বছরে ২৬৬০ টাকা বেতন বৃদ্ধি করেছেন। এদিকে কারখানা খোলার পর সিটুর জেলা সভাপতি বলেন, “এই আন্দোলন সিটুর ছিল না। সিটুর নামে অপপ্রচার করা হচ্ছিল।” |