নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শিলিগুড়ি ‘করিডর’-এর অবস্থানগত গুরুত্বের কথা মাথায় রেখেই গোটা শহরে নজরদারি বাড়াতে একযোগে ৫৫টি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর কাজে নামল শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এসজেডিএ) ও শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট। সোমবার মহালয়ার দিন শিলিগুড়ির গুরুত্বপূর্ণ ৭টি মোড়ে ওই সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সব মিলিয়ে ২২টি জায়গায় ২ থেকে ৩টি করে ক্যামেরা বসানো হবে। আপাতত মহানন্দা সেতুর মুখে এয়ারভিউ মোড়, শেঠ শ্রীলাল মার্কেট, হাসমি চক, পানিট্যাঙ্কি মোড়, সেবক মোড়, সেবক রোডের দুই মাইলে একটি শপিং মল লাগোয়া এলাকায় এবং নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন এই জায়গাগুলিতে ওই ব্যবস্থা চালু হল। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের অফিস এবং শিলিগুড়ি থানা এই দুটি জায়গা থেকেই ওই ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার মাধ্যমে পুজোর দিনগুলিতেও শহরে নজরদারি চালাবে পুলিশ। এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “অবস্থান গত দিক থেকে শিলিগুড়ির গুরুত্ব অনেক। একদিকে চিনের তিববত সীমান্ত, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ। সে কারণেই এই শহরের নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কথা মাথায় রেখেই শহরের নিরাপত্তা নিষ্চিত করতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসজেডিএ’র তরফে প্রায় ৭ কোটি টাকা খরচে বিভিন্ন জায়গায় ওই ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। পুজোর আগে ৭ টি জায়গায় বসানো হল। |
ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক। |
পরে বাকি জায়গাগুলিতেও বসানো হবে। এগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পুলিশের হাতেই তুলে দেওয়া হচ্ছে।” বিধায়ক শঙ্কর মালাকার জানান, শহরের কিছু আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। পুজোর সময় তারা গয়না পড়ে বার হতে পারবেন কি না ভাবছেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আতঙ্ক দূর করতে হবে। শঙ্করবাবু বলেন, “পুলিশ চাইলে হার ছিনতাই, বাইক ছিনতাই তো দূরের কথা মন্দির থেকে একটা চপ্পল কেউ চুরি করবে না। রুদ্রবাবুকে সাধুবাদ। এই ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর মধ্য দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে।” শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার জানান, এক বছর আগেই পুলিশের তরফে শহরের নিরাপত্তার জন্য ওই ক্যামেরা বসানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন তৎকালীন পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি। এর পরে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পুলিশ কমিশনার বলেন, “রুদ্রবাবু ব্যক্তিগত ভাবে বিষয়টি নিয়ে বিশেষ উদ্যোগ নেন। শহরের সুরক্ষা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নতিতে তা সহায়ক হবে। দেশ বিদেশের পর্যটকেরা এখানে আসেন। নিরাপত্তা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা ঠিক না থাকলে পর্যটকদের কাছে শহরের সম্মান থাকবে না।” অপরাধ মূলক কাজকর্ম দমনে পুলিশ প্রশাসন যে তৎপর সে ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন পুলিশ কমিশনার। পুলিশ কমিশনারেট হওয়ার পর খালিপদগুলিতে কর্মী-আধিকারিক নিয়োগের প্রক্রিয়াও চলছে বলে তিনি জানান। তার কথায় বাইরে থেকে দুষ্কৃতীচক্র এসে অনেক সময় অপরাধমূলক কাজ করে গা ঢাকা দেয়। মাদকাসক্ত কিছু লোকজন অপরাধ করে থাকে। সেগুলি দমন করতে হবে। এসজেডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্লোজড সার্কিট যে ক্যামেরা বসানো হচ্ছে সেগুলি ‘হাই সিকিউরিটি সার্ভিল্যান্স ক্যামেরা’। ৫৫টি ক্যামেরার দাম পড়ছে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা। তার ছাড়াই এগুলির সংযোগ ব্যবস্থা থাকছে। ভারত সঞ্চার নিগম থেকে ১৫ বছরের জন্য ওই বিশেষ সংযোগ ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রায় ২.২৫ কোটি টাকা খরচে। অন্তত ৩ বছরের জন্য তথ্য মজুত রাখতে দুটি ‘সার্ভার’-এর প্রতিটির জন্য ৬৫ লক্ষ টাকা খরচ পড়ছে। তা ছাড়া কিছু আনুসঙ্গিক সরঞ্জাম কেনার খরচ রয়েছে। অন্যান্য যে জায়গায় পরবর্তীতে সিসি ক্যামেরা বসানো হবে সেগুলি শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন এলাকা, জলপাইমোড়, ঝঙ্কার মোড়, টিকিয়াপাড়া, এনটিএস মোড়, নৌকাঘাট মোড়, তিনবাতি মোড়, ইস্টার্ন বাইপাস মোড়, নেতাজি মোড়, কোর্ট মোড়, ফুলেশ্বরী মোড়, বিধান মার্কেট অটো স্ট্যান্ড, চার্চ মোড়ের মতো বিভিন্ন এলাকায়। |