আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে যুযুধান দু’পক্ষই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। সিপিএম যেমন পঞ্চায়েত স্তরে ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া, তেমন তৃণমূলও পালাবদলের রাজ্যে পঞ্চায়েতে ‘লালদুর্গ’ হয়ে থাকা পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘাসফুল ফোটানোর সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ। নির্বাচন সংক্রান্ত নানা বিষয় দেখভালে তাই জেলাস্তরে একটি মনিটরিং (নজরদারি) কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নেতৃত্ব। দল সূত্রে খবর, রবিবার শহরে জেলা তৃণমূলের এক বৈঠক হয়েছে। সেখানেই ওই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তের কথা মানছেন দলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, “নির্বাচনের কাজকর্ম দেখভাল করার জন্য একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হবে। সভায় সেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরে এ নিয়ে ফের বৈঠক হতে পারে।”
আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় সিপিএমকে পযুর্দস্ত করতে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে তৃণমূল। জেলা নেতৃত্ব মনে করছেন, বিভিন্ন কর্মসূচিকে সামনে রেখে মানুষের কাছে দলের বার্তা পৌঁছনো গেলে ফল ভাল হবে। সমর্থনও বাড়বে। দলীয় সূত্রে খবর, রবিবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, দুই কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ ও নির্মল ঘোষ। সঙ্গে জেলার তৃণমূল বিধায়কেরা। দলেরই এক কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকায় গোপীবল্লভপুরের তৃণমূল বিধায়ক চূড়ামণি মাহাতো অবশ্য থাকতে পারেননি। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের রণকৌশল কী হবে, মূলত তা নিয়েই আলোচনা হয়। ইতিমধ্যে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগের প্রতিবাদ-সহ নানা দাবিতে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের মিছিল-সভা হয়েছে। মহকুমাস্তরেও এই কর্মসূচি হয়েছে।
জেলার বিভিন্ন প্রান্তেই গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার রাজ্যের নতুন শাসকদল। এর প্রভাব নির্বাচনে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। তৃণমূলেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, কী ভাবে গোষ্ঠীকোন্দল মেটানো যায়, তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে আলোচনা হয়েছে। দলীয় নেতৃত্বের ধারণা, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এ ভাবে লাগাতার রাজনৈতিক কর্মসূচি চললে দ্বন্দ্ব অনেকটাই কমবে। কারণ, কর্মসূচিতে সব পক্ষই ব্যস্ত হয়ে পড়বে। দু’পক্ষের’ নেতৃত্ব একই মঞ্চে এসে বসবেন। এতে দূরত্ব কমবে। আজ, মঙ্গলবার গড়বেতা-মেদিনীপুর-খড়্গপুরে তৃণমূলের সভা রয়েছে। সভায় উপস্থিত থাকবেন সাংসদ মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী। দলের জেলা নেতৃত্বের বক্তব্য, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ সিপিএমের দখলে রয়েছে। ফলে উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। সরকারি প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা পড়ে থাকছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতলেই গ্রামের উন্নয়ন সম্ভব। জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষের বক্তব্য, “মানুষ সিপিএমের সঙ্গে নেই। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফের তার প্রমাণ মিলবে।”
|