স্কুল নির্বাচনে সিপিএম সমর্থিতরা জিততেই অশান্তি ছড়াল মাদপুরে। সিপিএমের জোনাল কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। একটি শাখা কমিটির অফিসেও হামলা হয়েছে। সিপিএম-তৃণমূল দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ ৭ জন সিপিএম কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের বক্তব্য, তদন্ত চলছে। গোলমালে জড়িতদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
রবিবার খড়্গপুর ২ ব্লকের অন্তর্গত খাটরাঙা হাইস্কুলের পরিচালন কমিটির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন ছিল। ৬টি আসনের সবক’টিতেই নির্বাচনে জয়ী হন সিপিএম সমর্থিতরা। এরপরই সিপিএম কার্যালয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। মাদপুরে রয়েছে দলের লোকাল ও জোনাল কমিটির অফিস। দো’তলা বাড়ি। একতলায় লোকাল কমিটির কার্যালয়। দোতলায় জোনাল কমিটির। গভীর রাতে একদল তৃণমূল কর্মী-সমর্থক সেখানে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। গ্রিল ভেঙে চেয়ার, টেবিল, ফ্যান, আলমারি, টিভি, কম্পিউটর ভাঙচুর করা হয়। তার আগে সিপিএমের পপরআড়া শাখা কমিটির কার্যালয়েও একই ভাবে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ। |
প্রতিবাদ মিছিল। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
সিপিএমের মাদপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক কামের আলি বলেন, “স্কুল নির্বাচনে হেরে গিয়েই তৃণমূলের লোকজন আমাদের দলের কার্যালয়ে হামলা চালায়। সবকিছুই ভাঙচুর করা হয়েছে। কাগজপত্র পোড়ানো হয়েছে।” তাঁর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধেও। কামের আলির কথায়, “তৃণমূলই অশান্তি করল। অথচ পুলিশ বেছে বেছে আমাদের কর্মী-সমর্থকদেরই গ্রেফতার করেছে।” অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল নেতা অজিত মাইতির বক্তব্য, “স্কুল নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর স্বাভাবিক ভাবেই ওই এলাকায় উত্তেজনা ছিল। আমাদের কর্মী-সমর্থকেরা যখন বাড়ি ফিরছিলেন, তখন সিপিএমের লোকজনই তাঁদের উপর আক্রমণ করে। মারধর করে। আমাদের দু’জন কর্মী জখম হন।” তাঁর দাবি, “মাদপুরে যে ঘটনা ঘটেছে, তার পিছনে ওদেরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে।”
সোমবার সকাল থেকেই এলাকায় চাপা উত্তেজনা ছিল। এ দিন সিপিএমের মাদপুর জোনাল কার্যালয়ে একটি শিক্ষা-শিবির হওয়ার কথা ছিল। সেই কর্মসূচি স্থগিত রাখতে হয়েছে। সিপিএমের বক্তব্য, স্কুল নির্বাচনের ফল থেকে স্পষ্ট, এলাকার সাধারণ মানুষ তৃণমূলের থেকে দূরে সরে আসছেন। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে সন্ত্রাস ছড়াতেই এই হামলা। দলের জোনাল সম্পাদকের কথায়, “স্কুল নির্বাচনে অভিভাবকেরা আমাদের প্রার্থীদের সমর্থন করেছেন। ফলাফল দেখে তৃণমূল ভয়ে পেয়েছে।” তৃণমূল নেতা অজিতবাবুর অবশ্য বক্তব্য, “ওই স্কুলের পরিচালন কমিটি সিপিএমেরই ছিল। তাই আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।” ঘটনার পরপরই পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল তৃণমূল। সিপিএম সোমবার দুপুরে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মাদপুর ও তার আশপাশের এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। নজরদারি চলছে। গোলমালে জড়িতদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপই করা হবে। |