বাজারে চায়ের দোকানে বসে জনা কয়েক যুবক এবারের পুজো নিয়ে আলোচনায় মেতেছে। আকাশ কেমন থাকবে? এ নিয়ে চলছে বাজি ধরাও। চলছে বচসা, কার মণ্ডপ-প্রতিমা ভাল হবে সে সব নিয়ে। রাস্তার উল্টো দিকে কুমোরের দোকানে বসে ঘটে নক্সা করতে ব্যস্ত দাসু। দশকর্মার দোকানে চাঁদমালা, ফুলমালা-সহ প্রতিমার অস্ত্র সাজাতে ব্যস্ত দোকানদার। সব মিলিয়ে হওড়ার সাঁকরাইল ব্যস্ত দেবী-আবাহনে।
আন্দুল কামরাঙ্গু তরুণ সঙ্ঘের পুজো এ বার ৫২ বছরে পড়ল। ক্লাব সেক্রেটারি সঞ্জীবকুমার মাল বলেন, “এবারে আমাদের দুর্গাপুজোর থিম গুজরাতের সোমনাথের মন্দির। থিমের প্রস্তাবক অজিত পাত্র। অর্থাভাবে বহু গরিব মানুষ গুজরাতের সোমনাথ মন্দির দর্শনে যেতে পারেন না। আমরা এ বার সেই সুযোগ করে দিতে চেয়েছি। দেখে বোঝার উপায় নেই, কোনটা আসল আর কোনটা নকল। বাঁশ, কাট, প্লাই, থার্মোকল প্রভৃতি দিয়ে নির্মিত ওই মন্দির। ভিতরে আছে খোদাই করা গুজরাটি শিব মূর্তি। প্রতিমাতেও থাকছে অভিনবত্ব।” |
সাঁকরাইলের আমতলা শ্রীনিকেতনের পুজো এ বার ২৭ বছরে পড়ল। ক্লাব সম্পাদক শুভজ্যোতি ঘোষ বলেন, “এ বারে আমাদের পুজো মণ্ডপের থিম বাহামণির গ্রাম। খড়ের চাল, কুলো, কুনকে ও তুষের দেওয়াল দিয়ে গোলার আদলে এই মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। পাশে বিশাল এলাকা জুড়ে ধানের খেত। সামনের কাঁচা রাস্তা দিয়ে চলেছে গরুর গাড়ি। সব মিলিয়ে আমরা গ্রামকেই এ বারের থিম হিসাবে বেছেছি।”
সাঁকরাইলের চড়কতলার পুজো এ বার পড়ল ২৫ বছরে। সম্পাদক সব্যসাচী রায় বলেন, “এ বারে আমাদের দুর্গাপুজোর থিম পৌরাণিক স্থাপত্য। স্থানীয় একটি দুর্গা বেদীর অনুকরণে তৈরি হয়েছে এই মণ্ডপ। কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা পুরনো ভাঙা প্রাচীরের গায়ে বট, অশ্বত্থ গাছের শিকরের চাপে দেওয়ালে ধরেছে ফাটল। অজন্তা, ইলোরার মতো খোদাই করা মূর্তি শোভা পাচ্ছে দেওয়ালে। বাঁশ, কাট, থার্মোকল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে পৌরাণিক আবহ।”
|