|
|
|
|
পাড়া ঘুরলেই স্বর্গের খোঁজ |
সুব্রত সীট • দুর্গাপুর |
পাটের কাজ থেকে ফাইবারের উপরে নকসা, কিংবা স্বর্গ-মর্ত্যের মেলবন্ধন, দুর্গাপুরের সর্বজনীন পুজোর এবারের চমক এটাই।
দুর্গাপুরের প্রাণকেন্দ্র বিধাননগরের বড় পুজোটি ক্লাব স্যান্টোসের। তারই পাশাপাশি রয়েছে সেক্টর ২সি সর্বজনীন পুজো কমিটি। আর পাড়ার পুজো হিসেবে চার দশক ধরে সুনাম রয়েছে আদিবেদী কমিটির পুজোর।
বিধাননগরের প্রধান রাস্তার ধারে মাথা তুলেছে পুরীর জগন্নাথ মন্দির। আসল নয়, আদল। মণ্ডপের ভিতরটি সাজানো হবে পাটের কাজ ও ফাইবার দিয়ে। অসুরদলনী দুর্গার একশো রকম চিত্রে সাজানো হচ্ছে মণ্ডপ। প্রতি বারের মতো এ বারেও পুজোর ইউএসপি প্রতিমার সাবেকি ডাকের সাজ। উদ্যোক্তারা জানালেন, এ বছর ৪২ বছরে পা দিল এই পুজো। বাজেট প্রায় ৯ লক্ষ টাকা। বিশেষ আকর্ষণ, মণ্ডপের সামনের মাঠে স্থানীয় মহিলাদের খাবারের স্টল। নাম ‘আনন্দধারা’। উদ্যোক্তাদের দাবি, বছর বছর এই স্টলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। মহিলারা পসরা সাজিয়ে বসার সুযোগ পাচ্ছেন। পাড়ার বাসিন্দারাও তাঁদের হাতে তৈরি খাবার চেখে দেখার সুযোগ পাবেন। পুজো কমিটির সভাপতি দেবেশ বক্সি জানান, পঞ্চমীর সন্ধ্যা থেকে একাদশী পর্যন্ত পাড়ার ছোটদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক হৃদয় সাঁই জানান, অষ্টমী ও নবমীর দুপুরে সবাই এক সঙ্গে বসে খাওয়া-দাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে।
সেক্টর ২ সি-র পুজো এবার ২৫ বছরে পড়ল। পুজোর থিম, এক টুকরো স্বর্গ। স্বর্গের প্রবেশদ্বারের দু’দিকে বিশাল দুই হাতি দাঁড়িয়ে থাকছে। ভিতরে রয়েছেন ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর। মাথার উপর ফুটিয়ে তোলা হয়েছে শরতের নীল আকাশ। তার গায়ে মেঘের টুকরো। উদ্যোক্তাদের পক্ষে আশিস বসু ও কাঞ্চনকুমার দাস জানান, স্বগ-মর্ত্যের মেলবন্ধনই এবারের মণ্ডপের থিম। দেবীর গায়ে মাটির গয়না। তিন দিন ধরে পংক্তিভোজের ব্যবস্থা। এ ছাড়া রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে যেমন অংশ নেবেন পাড়ার শিল্পীরা, তেমনই বাইরে থেকেও আনা হবে শিল্পীদের। লোকগান থেকে আধুনিক গানের শিল্পী, সবাই থাকছেন সেই তালিকায়। এ ছাড়া আলোকসজ্জায় ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে প্যারিসের আইফেল টাওয়ার।
৪৩ বছর ধরে ঘরোয়া পরিবেশে পুজোর আয়োজন করে আসছে বিধাননগরের আদি বেদী দুর্গাপুজো কমিটি। তাঁরা জানালেন, পাড়ার বাসিন্দারা নিজেরাই চাঁদা তুলে পুজোর খরচ জোগাড় করেন। মন্দিরের আদলে তৈরি করা হচ্ছে মণ্ডপ। বিধাননগরের বাকি দুই পুজোর তুলনায় আড়ম্বর অনেকটাই কম। বাজেটও বেশ কম। আড়াই লক্ষ টাকা। পুজো কমিটির সদস্য পরিতোষ রাহার কথায়, “জাঁকজমক তত থাকে না। কিন্তু পুজোয় মণ্ডপ চত্বর মিলন মেলার রূপ নেয়। দুর্গাপুজোর মূল সুরও তো সেটাই!” |
|
|
|
|
|