রাজ্যে খেলাধূলার মান উন্নয়নে পরিকল্পনার অভাব রয়েছে বলে মনে করেন দোলা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়দীপ কর্মকারের মতো অলিম্পিয়ানরা। রবিবার শিলিগুড়িতে এ কথা জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ক্রীড়াবিদ সোমা বিশ্বাসও। তিনিও একই কথা জানিয়েছেন। মহালয়ার সকালে স্থানীয় একটি ক্লাবের রোড রেসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই এ দিন তারা শিলিগুড়িতে এসেছেন। সরকারি সাহায্য, পরিকল্পনার অভাবের জন্যই দোলাদেরকে অন্য রাজ্যের হয়ে খেলতে হচ্ছে বলেও তাঁরা জানিয়েছেন। ক্রিকেটের উন্নয়নের পিছনে বিসিসিআই এবং জগমোহন ডালমিয়ার কাজের প্রশংসা করেন সোমা। তিনি বলেন, “বিভিন্ন খেলাধূলার উন্নতির জন্য প্রতি ক্ষেত্রেই এক একজন জগমোহন ডালমিয়া দরকার। সরকারি পরিকল্পনার যা পরিস্থিতি তাতে যে কোনও খেলাধূলার উন্নতির জন্য তাঁর মতো মানুষ চাই।” অলিম্পিয়ান রাইফেল শু্যটার জয়দীপ জানান, কলকাতা তথা রাজ্যে হাতে গোনা কয়েকটি জায়গায় এই খেলার অনুশীলনের সুযোগ রয়েছে। সরঞ্জামেরও অনেক দাম। তাই অনেক অভিভাবকরা ছেলেমেয়েদের এ ব্যাপারে উৎসাহ দিলেও তা বেশি দিন ধরে রাখতে পারছেন না। সরকারি স্তরে তাদের সাহায্য করার মতো ব্যবস্থা এখনও সে ভাবে গড়ে ওঠেনি। জয়দীপের মতো রাহুল, দোলারা জানান, শুধু এ রাজ্যেই নয়, সরকারি স্তরে আগাম পরিকল্পনার অভাবেই দেশের হয়ে প্রতিযোগীরা আলিম্পিকের মতো আসর থেকে বেশি পদক আনতে পারছেন না। রাহুলের কথায়, “যখন অলিম্পিকে যোগ দেওয়ার জন্য সরকারি ভাবে প্রতিযোগীদের সাহায্য করা শুরু হয় তখন হাতে বেশি সময় থাকে না। অনেক আগে থেকে বিদেশে প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন শিবিরে অংশ নেওয়ার এ সব করতে পারলে ভাল হত। এ রাজ্যেও খেলারধূলার উন্নয়নে পরিকল্পনার অভাব রয়েছে।” |
গ্রামাঞ্চলে খেলাধূলার প্রসারে ‘পাইকা’ প্রকল্পে অন্যতম দায়িত্বে রয়েছেন সোমা। তিনি জানান, কেন্দ্র সরকার পাইকার মাধ্যমে খেলাধূলার উন্নতি করতে চাইছে। বছর চারেকের বেশি এই প্রকল্পে কাজ হচ্ছে। অথচ রাজ্যের তরফে পরিকল্পনা ঠিক মতো পাঠাতে না পারার জন্য ১ বছরের টাকা পাওয়া গিয়েছে। সেই টাকা খরচের শংসাপত্র এবং পরবর্তী পরিকল্পনা সময় মতো তৈরিই করা যায়নি। তাই রাজ্য পরবর্তী বছরগুলির জন্য ওই প্রকল্পে টাকা পাচ্ছে না। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের যেমন বিভিন্ন মহকুমা বা ব্লকে প্রশাসনিক অফিস রয়েছে। খেলাধূলার ক্ষেত্রেও সরকারি স্তরে ব্লকে প্রশাসনিক ব্যবস্থা থাকা দরকার। তাতে পরিকল্পনা মাফিক কাজ করা সম্ভব হবে। তা না থাকাতে সঠিক ভাবে তা পরিচালনা করা যাচ্ছে না। যুব কল্যাণ দফতর থাকলেও তা সেই কাজ করতে পারছে না।” তাদের মতো ২০১০ সালে এ দেশে কমনওয়েলথ গেমসের সময় প্রচুর টাকা খরচ করা হয়েছে। বহু কোটি টাকা খরচ করে দিল্লির নেহেরু স্টেডিয়াম সংস্কার করা হয়েছে। অথচ বিভিন্ন এলাকায় পরিকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকায় পরে থাকা উঠতি প্রতিভাদের সুযোগ করে দেওয়ার মতো পরিকাঠামো বা ব্যবস্থা এখনও গড়ে তোলা যায়নি। প্রতিটি রাজ্যে বিভিন্ন খেলাধূলার উন্নয়নে অ্যাকাডেমি গড়ে তোলা দরকার বলে মনে রাহুলও। |