পুরসভার নির্দেশে শিলিগুড়ির সেবক রোডে একটি বাণিজ্যিক ভবনে অবৈধভাবে তৈরি গ্যাংওয়ে খোলার কাজ শুরু করেছেন মালিকপক্ষ। সম্প্রতি অবৈধ ভাবে ওই বাণিজ্যক ভবনের একাংশ থেকে অপর অংশে যাতায়াতের জন্য ওই গ্যাংওয়ে তৈরির অভিযোগ ওঠে। পুরসভার তরফে ৩ দিন সময় দিয়ে তা খুলে ফেলতে বলা হয়েছিল। শনিবার সময় ফুরিয়ে যাওয়ার পরও এখনও কেন খোলা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওই ভবনের মালিক পক্ষের অন্যতম অনিল অগ্রবাল জানান, গ্যাংওয়ে খোলার কাজ শুরু হয়েছে। দুই এক দিনের মধ্যেই তা সম্পূর্ণ খুলে ফেলা হবে। অন্য দিকে রবিবার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে সেবক রোডের ধারে একটি শপিং কমপ্লেক্সের কাছে সন্ধ্যা থেকেই ছাদ ঢালাই করে অবৈধ নির্মাণ চলছিল বলে অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে পুরসভার বাস্তুকাররা গিয়ে রাতেই কাজ বন্ধ করান। পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা বলেন, “রাতের অন্ধকারে কিছু অসাধু প্রোমোটার এ ভাবে অবৈধ নির্মাণের চেষ্টা করছেন। শীঘ্রই জরুরি বৈঠক ডেকে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খবর পেয়েই এ দিন রাতে পুরসভার বাস্তুকারদের পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করানো হয়েছে।” |
অভিযোগ পাওয়ার পরেই এলাকার কাউন্সিলর অরিন্দম মিত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন মেয়র পারিষদ সীমা দেবী। তবে কাউন্সিলরকে না-পাওয়ায় পরে বাস্তুকারদের পাঠিয়ে তিনি কাজ বন্ধ করান বলে জানিয়েছেন। পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, সেবক রোডে শপিং কমপ্লেক্সের কাছে ওই ভবনটি পাঁচ তলা তৈরির কথা। নির্মীয়মান ওই ভবনের পিছনের অংশে নিয়ম মতো জায়গা ছাড়া রয়েছে। ওই অংশেই অবৈধ ভাবে কংক্রিকেটর সিঁড়ি তৈরি করে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছিল বলে অভিযোগ। দিন কয়েক আগেও অভিযোগ পেয়ে পুরসভার তরফে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। শনিবারও অবৈধ নির্মাণ কাজ করতে নিষেধ করা হয়। তার পরেও এ দিন রাতে ঢালাইয়ের কাজ হচ্ছে অভিযোগ পেয়ে পুরসভার বাস্তুকাররা গিয়ে অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করিয়েছেন। সম্প্রতি ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চেনাপট্টি এলাকায় অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে ওয়ার্ডের কাউন্সিলরই অভিযোগ তুলেছিলেন। পুরসভার তরফে নোটিসও পাঠানো হয়। তার পরেও অবৈধ নির্মাণ কাজ চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। পুরসভার নিষেধকে উপেক্ষা করে এ ভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রভাবশালী নেতাদের একাংশের হাত থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অবৈধ নির্মাণের অভিযোগে যাদের বাড়িতে পুরসভার তরফে অভিযান চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে তাঁরাও পুরসভার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কাউন্সিলরের তরফে বিষয়টি মেয়রকেও জানানো হয়েছিল। কাউন্সিলর রুমাদেবী বলেন, “অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে বাসিন্দাদের অভিযোগ পেয়েই মেয়র এবং পুর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে বিষয়টি এনেছিলাম। নোটিশ পাঠানো হলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” অভিযুক্ত বাড়ির মালিক প্রদীপ্ত সরকার জানিয়েছেন, সমস্যা মিটে গিয়েছে। তিনি বলেন, “পুরসভার অনুমোদন করা বাড়ির নকশা মেনেই কাজ করা হয়েছে।” বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা জানান, কাউন্সিলরের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে পুরসভার তরফে তা দেখা হয়েছিল। অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে দেখে বাড়ির মালিককে নোটিশও পাঠানো হয়েছে। তাতেও কথা না-শোনায় লোক পাঠিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করিয়েছিল পুরসভা। তাতেও কাজ হয়নি। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “অবৈধ নির্মাণ হয়ে থাকলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |