অবৈধ হোর্ডিং ভাঙবে পুরসভা
শিলিগুড়ির এয়ারভিউ মোড়ে ফুটপাত আটকে হোর্ডিং লাগাতে অবৈধ ভাবে বসানো লোহার স্তম্ভ ইতিমধ্যেই সরিয়ে নিতে বলেছে পুরসভা। অথচ যারা বসিয়েছেন তাদের তরফে রবিবারও পরিকাঠামো না সরানোয় ক্ষুব্ধ পুর কর্তৃপক্ষ। যে সংস্থার তরফে অবৈধ ভাবে তা বসানো হয়েছে তারা অবিলম্বে সরিয়ে না নিলে পুরসভার তরফেই তা ভেঙে দেওয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরসভা বা পূর্ত দফতর কারও অনুমতি না নিয়ে শনিবার আকাশের মুখ ঢেকে শিলিগুড়ির ওই মোড়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর ছবি সম্বলিত হোর্ডিং টাঙানো হয়। তা জেনে ক্ষুব্ধ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব রাতেই পুলিশকে বলে তা খোলানোর ব্যবস্থা করেন। তবে পরিকাঠামোটি এ দিন পর্যন্ত সরানো হয়নি।
যে সংস্থার তরফে ওই স্তম্ভ লাগানো হয়েছে তার কর্ণধার প্রদীপ্ত সরকার দাবি করেন, “শহরের নিরাপত্তার কাজে ৪ টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা কিনতে সাহায্য করেছি বলেই পুলিশের তরফে ওই জায়গায় হোর্ডিং বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে পুরসভা না চাইলে পরিকাঠামো সরিয়ে দেব।” পুরকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, প্রদীপবাবু মুখে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলছেন। অথচ শনিবার বলার পরেও এ দিন পর্যন্ত তিনি তা সরাননি। পুরসভাকেই তিনি কার্যত চ্যালেঞ্জ করছেন। এর পিছনে কারও মদত রয়েছে বলে তাঁদের ধারণা।
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য জানান, পুলিশকে তারা অন্তত ৫০ টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা কিনে নির্দিষ্ট জায়গা বসিয়ে দিচ্ছেন। তার পরেও পুলিশ ওই জায়গায় হোর্ডিং দেওয়ার বিনিময়ে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা নিয়েছে কি না তিনি খোঁজ নেবেন। সেতু লাগোয়া ওই অংশে হোর্ডিং থাকা উচিত নয় বলেই তিনি জানিয়েছেন। পুরসভার হোর্ডিং বিষয়ক মেয়র পারিষদ দেবশঙ্কর সাহা বলেন, “খোঁজ নিয়ে জেনেছি পুরসভা, পূর্ত দফতর, ট্রাফিক পুলিশ কেউই ফুটপাতের ওই অংশে হোর্ডিং লাগানোর ব্যবস্থা করতে অনুমতি দেননি। বিধি ভেঙেই ওই কাজ করা হয়েছে। অবিলম্বে হোর্ডিং লাগানোর কাঠামেটি সরিয়ে না নেওয়া হলে পুরসভার তরফে তা ভেঙে দেওয়া হবে।” মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত জানিয়েছেন, ফুটপাতের মধ্যে এ ভাবে স্তম্ভ বসাতে কেউ পারেন না। পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারাও এ ব্যাপারে কিছু জানেন না।
যে জায়গায় ওই হোর্ডিং লাগানো হয়েছিল সেখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য উপভোগ করা যায়। সে কারণে কোনও ধরনের হোর্ডিং-ই যাতে সেখানে লাগানো না হয় সে ব্যাপারে পুরসভাকে সতর্ক করে ছিলেন গৌতমবাবু। অথচ বিধি ভেঙে ফুটপাত খুঁড়ে লোহার স্তম্ভ বসানো এবং তাতে হোর্ডিং লাগানোর প্রতিবাদে স্থানীয় একটি ক্লাব এবং একাধিক স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরাও প্রতিবাদ জানান। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “ওই জায়গা থেকে পাহাড় ও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। যা কি না শহরবাসীর কাছে গর্বের। এখন ফুটপাত দখল করে হোর্ডিং বসিয়ে সেই গর্বের জায়গা ধ্বংস করা বাসিন্দারা মানতে পারবেন না।” পাশাপাশি, ওই ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর কমল অগ্রবালও অবিলম্বে হোর্ডিং সরানোর দাবি তুলেছেন। তৃণমূলের তরফেও একাধিক নেতানেত্রী পুজোর মুখে বিসর্জন ঘাটে যাতায়াতের ফুটপাত দখলের সমালোচনা করেছেন। পরিবেশপ্রেমী সংস্থা হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “অনুমতি নিয়েই হোক আর না নিয়েই হোক ওই জায়গায় হোর্ডিং বসানো কখনই মেনে নেওয়া যায় না। মন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত। হোর্ডিং বসানোর কাঠামোটিও খুলে দেওয়া হবে বলে আমরা আশাবাদী। না হলে শহরবাসী সরব হবেন।” পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ফুটপাত খুঁড়ে স্তম্ভ বসানো হচ্ছে জানতে পেরে ওই কাজে যুক্ত সংস্থার লোকদের নিষেধ করা হয়েছিল। অথচ তারা সেই নিষেধ কানে তোলেননি বলে অভিযোগ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.