|
|
|
|
খুন্তি-বঁটি নিয়ে প্রতিরোধ, ভাঙড়ে ডাক রেজ্জাকের |
শুভাশিস ঘটক • ভাঙড় |
সেই ভাঙড়। ফের ভিড়ে ঠাসা জমায়েত। সেখানে দাঁড়িয়ে রাজ্যে মহিলাদের উপরে নির্যাতনকে হাতিয়ার করে তৃণমূল নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াল সিপিএম।
কলকাতা-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে ধর্ষণ-শ্লীলতাহানির ঘটনার পরে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই সরব সিপিএম। রবিবার ভাঙড়ে থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে মহিলাদেরই এগিয়ে রাখল তারা। আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার নেতৃত্বে এবং সিপিএমের গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির উদ্যোগে প্রায় দেড় হাজার মহিলা (পুলিশের হিসেবে) থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে সামিল হন।
বেশ কিছু দিন ধরেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়-ক্যানিং এলাকায় সিপিএমের সঙ্গে শাসক তৃণমূলের দড়ি টানাটানি চলছে। কখনও তা সভা-পাল্টা সভাকে ঘিরে, কখনও কর্মী-সমর্থকদের দলবদল নিয়ে। মূল্যবৃদ্ধি এবং এফডিআইয়ের বিরুদ্ধে যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকে এ দিনই ভাঙড় থানা থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে বালিগাদা এলাকায় সভা করা হয়। পুলিশের হিসেবে শ’তিনেক মানুষ জমায়েত হন। তৃণমূলের দাবি, প্রায় ৭০০ লোক এসেছিলেন।
ভাঙড়-১ ব্লকের ৯টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬টি রয়েছে সিপিএমের দখলে। ৩টি তৃণমূলের। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে ওই এলাকায় দাপট বেশি তৃণমূলেরই। তবে, সম্প্রতি রেজ্জাকের নেতৃত্বে ওই এলাকায় সিপিএমের আন্দোলনে জোর এসেছে। এ জন্য অবশ্য দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছেন ওই এলাকার এক তৃণমূল নেতা। তাঁর মতে, “এখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এতটাই বেড়ে গিয়েছে, যে তার সুযোগ নিচ্ছে সিপিএম।”
এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ জমায়েতের কথা থাকলেও এক ঘণ্টা আগে থেকেই সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাত্তার মোল্লার নেতৃত্বে মোটরভ্যানে চেপে ভাঙড়ের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মহিলারা এসে থানার সামনে জড়ো হতে থাকেন। থানার অদূরে মঞ্চ বেঁধে সভা করা হয়। স্মারকলিপি দেওয়া হয় পুলিশকে।
রেজ্জাক বলেন, “১৯৭২-এ কংগ্রেসের অত্যাচারের বিরুদ্ধেও রাজ্যের মহিলারা রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। গণতন্ত্র ফিরে এসেছিল। আজ যাঁরা এখানে এসেছেন, তাঁদের বলতে চাই, ‘ওরা যদি বন্দুক, গুলি নিয়ে আসে, তা হলে আপনারা ঝাঁটা, খুন্তি, বঁটি নিয়ে প্রতিরোধ করুন। আবার গণতন্ত্র ফিরে আসবে।” পুলিশের প্রতি তাঁর মন্তব্য, “মহিলাদের উপরে অত্যাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নিরপেক্ষ হওয়ার চেষ্টা করুন। আমরা কয়েক বছর বাদেই ফিরছি। সব হিসেব রাখা হচ্ছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সম্পাদিকা তথা কলকাতা পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী রূপা বাগচি বলেন, “মহিলাদের উপর অত্যাচার, ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে চলেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মুখ্যমন্ত্রী সুষ্ঠু বিচারব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলার উপরে নজরদারি না করে উল্টে ধর্ষিতার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করছেন। এ এক অদ্ভুত ব্যবস্থা!” |
|
|
|
|
|