দশভুজা
ভাল থাকাই জরুরি, মনে করেন বিজয়া
হাজার কর্মব্যস্ততার মধ্যেও তিনি বাঁচিয়ে রেখেছেন মনের মধ্যে লালন করা স্বপ্নগুলো। করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক বিজয়া পোদ্দার বিশ্বাস করেন, ‘‘বেঁচে থাকার জন্য ভাল থাকাটা খুব জরুরি। আর ঠিক সেই কারণেই স্বপ্নগুলোকেও বাঁচিয়ে রাখা দরকার। নিজে ভাল না থাকতে পারলে অন্যদের ভাল রাখব কি করে?’’
আজ থেকে কয়েক দশক আগে বাবার চাকরিসূত্রে রাজ্যের নানা জায়গায় ঘুরতে ঘুরতে বিজয়াদেবীর করিমপুরে আসা। করিমপুর পান্নাদেবী কলেজ থেকেই ১৯৮০ সালে বিজ্ঞান নিয়ে প্রথম বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। তার কিছুদিন পরেই বিয়ে হয় শিকারপুর হাই স্কুলের শিক্ষক কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। পাশাপাশি পড়াশোনাটাও তিনি চালিয়ে গিয়েছেন পুরো দমে। বিয়ের পর বহরমপুরে থেকে তিনি সাড়ে তিন বছরের কমিউনিটি মেডিক্যাল কোর্স করেন। সেখান থেকে ফিরে এসে ১৯৮৫ সালে কমিউনিটি হেল্থ সার্ভিস অফিসার হিসাবে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে কর্মজীবন শুরু। ২০০০ সালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চার বছরের কনডেন্স মেডিক্যাল কোর্স শেষ করে ফের করিমপুর হাসপাতালেই তিনি অ্যাসিস্ট্যান্ট মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে যোগ দেন। পেশায় চিকিৎসক বিজয়াদেবী হাসপাতাল, রোগী, সংসার, সন্তান সামলেও স্বপ্নপূরণ করে চলেছেন। কী সেই স্বপ্ন? তিনি স্বপ্ন দেখতেন মস্ত মঞ্চে তিনি দাপিয়ে অভিনয় করছেন, আর বুঁদ হয়ে দর্শকরা দেখছেন সেই অভিনয়। এদিকে স্কুল শিক্ষক স্বামী কল্যাণবাবুও বরাবরই নাটক পাগল মানুষ। গতবছর অবসর নেওয়ার পর এখন পুরোদমে তিনি মেতে আছেন নাটক নিয়েই। বিজয়াদেবী বলেন, ‘‘সালটা ১৯৯০। বাড়িতে তখন প্রায়ই নাটকের লোকজন আসছেন। কথা চলছে ‘সাজানো বাগান’ নাটকটি মঞ্চস্থ করা হবে। স্বামীকে কথাটা বলতেই ও রাজি হয়ে গেল। সেই প্রথম স্বপ্নপূরণ তারপর থেকে নাটক নিয়ে আমাকে আর আক্ষেপ করতে হয়নি। এখনও পর্যন্ত নাটকটা টানা করে চলেছি। আর সেই সঙ্গে গানটাকে বাঁচিয়ে রেখেছি। সবকিছুই চলছে সমান তালে।’’
মাত্রাতিরিক্ত রোগীদের চাপে নুয়ে পড়া সীমান্তবর্তী করিমপুরের মতো একটি গ্রামীণ হাসপাতালে কাজ, সংসার, রান্নাবান্না সামলে সময় বের করেন কীভাবে? বিজয়াদেবীর কথায়, ‘‘সময় বের করাটা সত্যিই কঠিন। তবে ওই যে বললাম, ভাল থাকাটা জরুরি। সেই কারণেই প্রাইভেট প্র্যাকটিস করি না। করিমপুরে প্রতিবছরই নাট্যোৎসব হয়। এমন তো হামেশাই হয়, যে দিন রাতে নাটকের মহড়া থাকে, তার আগের দিন টানা চব্বিশ ঘন্টা হাসপাতালে ডিউটি করি। পরের দিনটা বাঁচিয়ে রাখি মহড়ার জন্য।’’
স্বামী কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘সংসার, সন্তান, চাকরি সব কিছু সামলেও বিজয়া গান, নাটক, বইপড়া নিয়ে দিব্যি আছে।’’ করিমপুরের দীর্ঘদিনের নাট্যকর্মী শিশির দাসের কথায়, ‘‘ বিজয়াদেবী নাটক, গান ও সংস্কৃতিচর্চার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন, সেটা সত্যিই একটা দৃষ্টান্ত।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.