ছিলেন ১৬ জন গ্র্যান্ডমাস্টার। ছিলেন ১৩ জন আন্তর্জাতিক মাস্টার। ৪ জন ফিডে মাস্টারও। তা-ও জাতীয় প্রিমিয়ার দাবায় যে ১৬ বছরের তামিল ছেলে চ্যাম্পিয়ন হল তার কোনও ‘টাইটেল’-ই ছিল না এতদিন।
কিন্তু রবিবারের পর থেকে চেন্নাইয়ের গণেশণ আকাশ তার নামের আগে ‘আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার’ লেখার ছাড়পত্র পেয়ে গেল। সেই সঙ্গে একটি গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম নিয়ে মায়ের সঙ্গে চেন্নাই ফিরছে আকাশ। রয়েছে পুরস্কার মূল্য এক লক্ষ ৭৫ হাজার টাকাও।
আকাশের বাবা জীবনবীমার পদস্থ অফিসার--গণেশন। তাঁর কাছেই প্রথম দাবার পাঠ। ৬৪ খোপের খেলার সঙ্গে পরিচয় আরও বাড়ে স্কুলে। আকাশের নিজের কথায়, “প্রাথমিক চালগুলো সব বাবার কাছে শিখি। ১০ বছর বয়সে। তার পর স্কুলে দাবার ক্লাসে আরও উৎসাহ বেড়ে যায়।” জওহর হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র আকাশের বিষয় কম্পিউটার সায়েন্স। চলতি বছরের ফর্ম তাকে আকাশছোঁয়ার স্বপ্নই দেখাচ্ছে। তিরুপল্লীতে জাতীয় ‘বি’ দাবায় তৃতীয় হয়ে হাতে পেয়েছিল কলকাতার প্রিমিয়ার দাবার টিকিট। কলকাতা তাকে উপহার দিল দাবা বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ। বিশ্বনাথন আনন্দ ও ম্যাগনাস কার্লসেনের ভক্ত আকাশ বলছিলেন, “বিরাট আত্মবিশ্বাস পেলাম এই মিট থেকে। এতটা ভাল ফল আশা করিনি।” |
ক্ষুদিরামে ১৪ দিনের টুর্নামেন্টে আকাশ হারিয়েছে তিন গ্র্যান্ডমাস্টারকেসুন্দররাজন কিদাম্বি, নীলোৎপল দাস এবং এম আর ভেঙ্কটেশকে। সবচেয়ে আলোচ্য ছিল ভেঙ্কটেশ-আকাশ লড়াই। সদ্য জিএম হওয়া ভেঙ্কটেশ শুক্রবার তাঁর কলকাতার সাময়িক আস্তানা কিড স্ট্রিটের এমএলএ হোস্টেল থেকে ক্ষুদিরাম আসার পথে বিশাল যানজটে পড়েন। মিট যেখানে শুরু হত দুপুর আড়াইটেয় সেখানে তাঁর পৌঁছতে দেরি হয়েছিল মাত্র তিন মিনিট। কড়া নিয়মের কারণে ওয়াকওভার পেয়ে যায় আকাশ। লটারিতে পরের রাউন্ডেও আকাশের বিপক্ষ ঠিক হয় ভেঙ্কটেশ। সে দিন অবশ্য ভাগ্যের সাহায্যে নয়, সম্মুখ সমরে এক পয়েন্ট তুলে নেয় আকাশ। মিটে দ্বিতীয় হলেন বিদিত গুজরাতি, তৃতীয় অরুণ প্রসাদ। জিএম দীপ সেনগুপ্ত চতুর্থ। শুক্রবার পর্যন্ত শীর্ষে থাকা ভেঙ্কটেশ হয়েছেন পঞ্চম। এ ছাড়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র বিতান বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই মিটে আই এম নর্ম পেলেন। দিব্যেন্দু বড়ুয়া অ্যাকাডেমি আয়োজিত এই মিটের জয়ীদের পুরস্কার দেন প্রাক্তন ফুটবলার পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়, হকি খেলোয়াড় গুরবক্স সিংহ, রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। হাজির ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রও। |