ঘণ্টি বেজে হুলস্থুল, ভল্ট থেকে বেরোল ধেড়ে ইঁদুর
দোকানপাট বন্ধ হয় হয়। রাত ৮টা। হঠাৎ ব্যাঙ্কের বিপদঘণ্টি বেজে ওঠায় হই হই করে ছুটে এলেন সকলে। গোঘাট থানা-সংলগ্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটির শাখা অফিসে দোতলা ভবনের আশপাশে চোখের পলকে লোক জমে যায়। রটে যায়, ‘ডাকাত পড়েছে ব্যাঙ্কে।’ ব্যাঙ্কের পাশেই থানা। দিনটা মোটের উপরে নির্বিঘ্নেই কেটেছিল। থানার পুলিশ কর্মীরাও হাল্কা মেজাজে। বিপদ ঘণ্টি শুনে হইচই পড়ে যায় পুলিশকর্মীদের মধ্যেও। বন্দুক বাগিয়ে ছুটে আসেন অনেকে। বড়বাবু যান লোকলস্কর নিয়ে।
থানা চত্বরেই র‌্যাফের আস্তানা। তারাই বা হাত গুটিয়ে থাকে কী ভাবে। পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে র্যাফের বেশ কয়েক জন জওয়ান আসেন ব্যাঙ্কের সামনে। হাতে বন্দুক নিয়ে ছোটাছুটি চলছে তখন রাস্তার উপরে। আশপাশের লোক বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে সে দিকে। কী হয় কী হয় ভাব। পুলিশ, র্যাফ মিলে ঘিরে ফেলে ব্যাঙ্ক। কিন্তু ব্যাঙ্কের মূল ফটকের সামনে গিয়ে তাজ্জব বনে যান বড়বাবু। সেখানে তালা ঝোলানো। তা হলে ডাকাত ঢুকল কী ভাবে? সর্ষের মধ্যে ভূত নাকি, কেউ কেউ ফুট কাটে পাশ থেকে। ইতিমধ্যে মিনিট পনেরো বেজে বেজে থেমে গিয়েছে বিপদ ঘণ্টি। চারি দিকে নিস্তব্ধতা। মুহূর্ত যেন আর কাটে না। খবর যায় ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজার ভরত মাঝির কাছে। তিনি আরামবাগ শহরে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। খবর পেয়ে হুড়মুড় করে আসেন গাড়ি নিয়ে। চাবি দিয়ে খোলেন মূল ফটক। টান টান উত্তেজনা।
কিছু ক্ষণ বাদে ব্যাঙ্কের ভিতর থেকে এক গাল হাসি নিয়ে বেরিয়ে আসেন ভরতবাবু। পুলিশ কর্তাদের মুখেও নিশ্চিন্ত হাসি। জনতা সমস্বরে জানতে চায়, হলটা কী? ম্যানেজার জানালেন, ইঁদুর ঢুকেছিল ব্যাঙ্কের ভল্টে। সেখানে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানো থাকে। ব্যাঙ্কের ভিতরে-বাইরে নিরাপত্তারক্ষী থাকে না। কর্মীরা বেরিয়ে আসার সময়ে ক্যামেরার ‘নাইটভিশন মোড’ চালু করে যান। যাতে রাতেও ভিতরের ছবি ধরা পড়ে। ম্যানেজার জানালেন, ভল্টে কিছু ঢুকলেই বিপদ ঘণ্টি বেজে ওঠে। যত ক্ষণ কেউ ভিতরে থাকে, তত ক্ষণই বাজে সেই ঘণ্টি। বেরিয়ে আসার পরেও পনেরো মিনিট ধরে বাজতে থাকে। কয়েকটি ধেড়ে ইঁদুরই ঢুকে পড়েছিল ভল্টে। সে জন্যই এই কাণ্ড। ইঁদুর ধরতে ব্যাঙ্কের ভিতরেও খাঁচা পাতা হবে বলে জানিয়েছেন ভরতবাবু।
সব মিলিয়ে নিশ্চিন্ত সব পক্ষ। একটু যেন খুঁতখুঁতানি থেকে গেল স্থানীয় বাসিন্দা ভাস্কর রায়, মনোজ দে-র মতো অনেকের মনে। ডাকাত-পুলিশ টান টান ‘অ্যাকশন’ হতে চলেছে ভেবে নিশ্বাস বন্ধ করে রেখেছিলেন তাঁরা। কয়েকটা ধেড়ে ইঁদুর সেই উত্তেজনায় জল ঢেলে দিল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.