রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় • কলকাতা |
মণ্ডপগুলির নজরকাড়া থিমের বাহারে মেতে উঠেছে ডোমজুড়ের মহিয়াড়ি। কোথাও রামায়ণ। কোথাও আবার অক্ষরধাম মন্দির। কোনও পুজো উদ্যোক্তা আবার শহরের বুকে তুলে এনেছেন এক চিলতে গ্রাম বাংলাকে। পুজোর বাকি আর মাত্র কয়েকটা দিন। দর্শনার্থীদের টানতে পুজোর উদ্যোক্তারা এখন থেকেই তাল ঠুকছেন।
তালপুকুরধার সর্বজনীন দুর্গাপুজোর মণ্ডপে এসে দেখা গেল মণ্ডপ শিল্পীদের ঘিরে ভিড় করেছে কচিকাঁচারা। মৃৎশিল্পী পিন্টু কর মণ্ডপের উপরে পাহাড়ে ১০ ফুট উচ্চতার একটি বাল্মীকি মুনির মূর্তি তৈরিতে ব্যস্ত। এই পুজো এ বারে পড়েছে ৪৯ বছরে। এ বারের থিম, রামায়ণ। দস্যু সরদার রত্নাকর কী ভাবে বাল্মিকী মুনিতে রূপান্তরীত হলেন, সেই বিষয়টি তুলে ধরা হবে মণ্ডপে। এ ছাড়াও বর্ণনা করা হবে লব ও কুশের জীবনকাহিনী। পুজোর উদোক্তাদের অন্যতম শুভঙ্কর মজুমদার বলেন, “মোট ৩০টি বিভিন্ন আকারের মডেলের সাহায্যে তুলে ধরা হবে এই পৌরাণিক কাহিনী।” মণ্ডপের দু’দিকের দেওয়ালে থাকছে এই সব মডেল। তৈরি হয়েছে পাহাড়ের উপরে ঝর্না। রয়েছে গাছগাছালি, ফুল পশুপাখির দৃশ্য। গাছের উপরে হনুমান ছাড়াও রয়েছে অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়া। লব এবং কুশের মূর্তি। |
পিছিয়ে নেই ফুলবাগান স্পোর্টিং ক্লাবের দুর্গাপুজোও। মণ্ডপ তৈরিতে তারা এ বারে বেছেছে গুজরাটের অক্ষরধাম মন্দির। এই মন্দিরের আদলেই তৈরি হচ্ছে এ বারের মণ্ডপ। উপকরণ বাঁশ, কাঠ, থার্মোকল, প্লাইউড এবং কাপড়। আলোকসজ্জার দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে। মণ্ডপের ভিতরে থাকছে বিশাল ঝাড়বাতি। এ ছাড়াও বাইরে থাকছে আকর্ষণীয় আলোকসজ্জা। উদ্যোক্তাদের অন্যতম গোরা মুখোপাধায় জানালেন, পুজো এ বার পড়ল ২৬ বছরে। তিনি বলেন, “আমরা বরাবরই মণ্ডপ তৈরির ক্ষেত্রে নতুন নতুন থিম দর্শনার্থীদের উপহার দিই। দর্শনার্থীদের আশীর্বাদও পাই আমরা। আশা করি এ বারেও তার ব্যতিক্রম হবে না।”
মহিয়াড়ি চামপিড়িতলা অগ্রণী ক্লাবের এ বারের দুর্গাপুজোর থিম হল গ্রাম বাংলার চিত্র। খড়ের চাল, মাটির দেওয়ালের ঘর, দেওয়ালে রয়েছে যামিনী রায়ের ছবি। পুজোর অন্যতম কর্মকর্তা সৈকত মণ্ডল বলেন, “চারিদিকে তৈরি হচ্ছে বহুতল। হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলা। আমাদের মণ্ডপে দর্শনার্থীরা এসে হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার একটা খণ্ডচিত্র দেখতে পাবেন।”
মহিয়াড়ি গত কয়েক বছর ধরে দুর্গাপুজোর আয়োজনে জেলায় সুনাম অর্জন করেছে। মহিয়াড়ি রোডের দু’ধারে বিভিন্ন পুজো কমিটির পক্ষ থেকে আলোকসজ্জা করা হয়। পুজোর কয়েকটা দিন আলোকমালায় ভাসতে থাকে এলাকা। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসেন দুর্গাপুজো দেখতে। জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের এক মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয় মহিয়াড়ি। |