বোমাতঙ্কে হুলস্থুল হাওড়ার শপিং মলে
পুজোর জামাকাপড় কিনতে সবেমাত্র শপিং মলের তিনতলায় একটা দোকানে সপরিবার পৌঁছেছিলেন শিবপুরের দিব্যেন্দু সরকার। ঢুকেই দেখেন, ভিতর থেকে ছুটে বেরোচ্ছেন মানুষ। সিঁড়ি বা এসক্যালেটর, যে যা পাচ্ছেন, হুড়মুড়িয়ে নীচে নেমে গেটের দিকে ছুটছেন। মলের ইমার্জেন্সি গেটও খোলা। আগুন লেগেছে? নাকি অন্য কিছু? বুঝে ওঠার আগেই কানে এল পুলিশের তল্লাশি শুরু হবে। খবর এসেছে, বোমা রাখা আছে মলে। ঘোষণা শুনে পুজোর বাজার মাথায়। মল থেকে বেরোতে পরিবারকে নিয়ে ছুটলেন দিব্যেন্দুবাবুও।
পুজোর আগে ভিড়ে ঠাসা শেষ রবিবারে এ ভাবেই বোমাতঙ্ক ছড়াল শিবপুরের জগৎ ব্যানার্জি ঘাট রোডে, হাওড়া শহরের অন্যতম বড় শপিং মলে। সেখানে তখন দশ থেকে পনেরো হাজার মানুষ কেনাকাটায় ব্যস্ত। মাল্টিপ্লেক্সের তিনটি হলে সিনেমা চলছিল। মলের দোকান বন্ধের পাশাপাশি সিনেমার শো-ও বন্ধ করে দিয়ে দর্শকদের বার করে দেওয়া হয়। খালি করে দেওয়া হয় পার্কিং জোনও। মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। যদিও সিআইডি-র বম্ব স্কোয়াড এবং জিআরপি পুলিশ-কুকুর দিয়ে রাত পর্যন্ত তল্লাশি করেও সন্দেহজনক কিছু পায়নি।
আতঙ্কের দৌড়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
পুলিশ সূত্রে খবর, দুপুর আড়াইটে নাগাদ ছ’তলা ওই মলের এক নিরাপত্তারক্ষীর মোবাইলে ইংরেজি হরফে হিন্দিতে একটি মেসেজ আসে। তার বক্তব্য, শপিং মলের কোনও একটি তলে বোমা রয়েছে। ঠিক চারটে তেত্রিশে সেটি ফাটবে। তড়িঘড়ি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেখান ওই রক্ষী। তখনই অবশ্য কর্তৃপক্ষ কিছু ঘোষণা করেননি। প্রথমে শিবপুর থানা ও পরে সিআইডি বম্ব স্কোয়াডে খবর দেন তাঁরা। পুলিশ আসার পরে মলের নিজস্ব পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমের মাধ্যমে বোমাতঙ্কের কথা জানানো হয়। মন্দিরতলা থেকে ওই মলে আসা রাহুল মজুমদার বলেন, “হঠাৎ দেখি প্রচুর পুলিশ। এক পুলিশকে জিজ্ঞেস করে বিষয়টা জানতে পারি। তখনই দ্রুত মল থেকে বেড়িয়ে আসি। পুজোর অনেক কেনাকাটা করার ছিল। আজ পুজোর বাজার শেষ করে দেব ভেবেছিলাম। কোথায় কী!”
ছ’হাজার বর্গফুটের এই শপিং মলে প্রায় ১৫০টি দোকান। রয়েছে তিনটি সিনেমা হলও। মল-কর্তৃপক্ষের তরফে সুবীর দাস বলেন, “আটটি গেট ছাড়াও সব ক’টি ইমার্জেন্সি গেট খুলে দেওয়া হয়। সব এসক্যালেটর চালানো হয় নীচের দিকে। খালি করে দেওয়া হয় মল। সকলেই নিরাপদে বাইরে বেরোতে পেরেছেন।” এক পুলিশকর্তা বলেন, “এসএমএসটি কোন নম্বর থেকে এসেছে, তা তদন্ত করে দেখছি।”
অন্য দিকে, কলকাতার পুজো বাজারের শেষ রবিবারের ইনিংস জমে যায় ‘স্লগ ওভারে’। দুপুর থেকে বৃষ্টির দাপটে সে ভাবে লোকে বারমুখো হননি। মুষড়ে পড়েন রাস্তার ধারের দোকানিরাও। সে ঘাটতি পুষিয়ে গেল বিকেলে। চারটের পর থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় দলে দলে মানুষ ভিড় করলেন বাজারে। রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত সর্বত্র বাজার ছিল জমজমাট। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ নিউ মার্কেটে এগোনোই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। একই অবস্থা দক্ষিণের গড়িয়াহাট বা উত্তরের হাতিবাগানে। বড় শপিং মলগুলিতে ভিড় উপচে পড়েছে, ক্রেতা সামলাতে হিমশিম খেয়েছেন রাস্তার ধারের দোকানিরাও।
কলকাতায় বাজার করতে আসা শহরতলির মানুষের ভিড়ে ঠাসাঠাসি ছিল হাওড়া-শিয়ালদহ স্টেশনও। রবিবার ট্রেন কম থাকায় প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে ভিড় উপচে পড়ে। এর মধ্যে হাওড়া স্টেশনের সাবওয়ের মূল গেটটি দুপুরে বন্ধ করে দেওয়াহয়েছিল। ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের দিকের গেটে জল জমে থাকায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে ওঠে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.