|
|
|
|
গুয়াহাটির দুর্গা |
চকের প্রতিমাই এ বার রিহাবাড়ির বড় চ্যালেঞ্জ |
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
গত বছর ছিল রাজমা। তার আগের বছর ঝিনুক। আর এ বছরের চমক চকখড়ির হাত ধরে।
সেই ১৯৬৬ সালে, শুরু থেকেই গুয়াহাটির রিহাবাড়ি বিলপাড় দুর্গা পূজা কমিটি একের পর এক চমক দিয়ে চলেছে। ইস্পাত, উল, বাঁশ, কাঠের গুঁড়ো, দেশলাই, ময়ূরের পাখা, কাচ কীসের না প্রতিমা বানিয়েছে বিলপাড়!
১৯৮৭ সালে তাদের বাঁশের দুর্গা প্রতিমা রাজ্য সংগ্রহশালায় স্থান করে নিয়েছে। সেই তালিকায় এবারের সংযোজন হাজার বাক্স চক! গুয়াহাটির প্রতিমা, কিন্তু তৈরি হচ্ছে চিরাং জেলায়।
গত বছর দুগ্গা প্রতিমা বানাতে বিলপাড়ের সঞ্জয় চন্দ প্রায় ৫০ কিলো রাজমা খরচ করেছেন।
এই বছর এ কে আজাদ রোডের এই পুজোয় ব্যবহার করা হবে এক হাজার বাক্স চক। আট ফুট বাই সাড়ে ৫ ফুটের প্রতিমা। ওজন প্রায় ৬৫ কিলোগ্রাম। সাদা চকের গায়ে, লালের ছোঁয়ায় পৃথক করা হবে প্রত্যঙ্গ ও অভিব্যক্তি। চকের পিছনে ঠেকনা দিচ্ছে থার্মোকল, স্ট্র, প্লাস্টার অফ প্যারিস আর সোনালি সুতো। প্রায় তিন মাসের চেষ্টায় প্রতিমার কাজ প্রায় শেষ করে এনেছেন সঞ্জয়রা। চিরাং-এ যখন গোষ্ঠী সংঘর্ষ পুরোদমে চলছে তখনই সেখানকার বাসুগাঁওয়ের বাসিন্দা সঞ্জয়, রাজা, শুভ মোদক, কিরণ চন্দ, ছোটন দাসদের হাতে মূর্ত হয়ে উঠছেন চকের দুর্গা ঠাকুর। |
|
শিল্পীর হাতে তুলির টান। ছবি: এএফপি |
সঞ্জয়বাবু জানান, ঝিনুক বা রাজমা নিয়ে কাজ করতে এত সমস্যা হয়নি। সেগুলো ভেঙে যাওয়ার সমস্যাও ছিল না। কিন্তু চককে নানা আকারে কাটতে হচ্ছে, তার উপর আবার তা ভঙ্গুর। সেই ভঙ্গুর প্রতিমাকে বাসুগাঁও থেকে গুয়াহাটি অবধি অক্ষত আনাটাই আপাতত সঞ্জয়বাবুর কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। পুজোর দিন পাঁচেক আগে, সগুষ্টি মা পৌঁছবেন রিহাবাড়ি। পুজো কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাপন রায় জানান, প্রতি বছরই প্রতিমার নতুনত্বের মধ্য দিয়ে তাঁরা সাধারণ্যে অসাধারণ হয়ে ওঠার বার্তাটাই ছড়িয়ে দিতে চান।
গত এক দশক ধরে তাঁদের প্রতিমার খরচ ৫০ হাজারের মধ্যে ছিল। গত বছর এক ধাক্কায় তা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ হাজারে। এ বছর প্রতিমার খরচ, মণ্ডপ, আলোর খরচ মিলিয়ে বিলপাড়ের বাজেট ৪ লক্ষ। তবে জেলা প্রশাসনের হুলিয়া ও খোলা নর্দমার জল আপাতত তাঁদের ঘুম কেড়েছে। প্রশাসনের নির্দেশ মেনে সিসিটিভি ও ক্যামেরা বসালে আরও ৫০ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়ে যাবে। পাশাপাশি, আর্টফেডের দেওয়াল ঘেঁষে থাকা খোলা নর্দমার জল পুজো মণ্ডপ-সহ গোটা এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাপনবাবুর ক্ষোভ, “নোংরা জলে পা রেখে ঠাকুর দর্শন হয় না কী? আশা করি পুজোর আগে পুরসভা এই নর্দমা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।” |
|
|
|
|
|