|
|
|
|
প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়ে ভি এস-কে ফের ভর্ৎসনা সিপিএমের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ফের দলের ভর্ৎসনার মুখে ভি এস অচ্যুতানন্দন! এ বার প্রসঙ্গ কুডানকুলাম পরমাণু প্রকল্প। দলের বিপরীত অবস্থান নেওয়ায় তিরস্কার করে পার্টি লাইন মেনে চলতে ভি এস-কে কড়া নির্দেশ দল সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি। এই নিয়ে সাম্প্রতিক কালের মধ্যে অজস্র বার দলের ভর্ৎসনা শুনতে হল সিপিএমের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ভি এস-কে!
কুডানকুলাম পুরমাণু প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সিপিএম কেন যোগ দিচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কেরলের বিরোধী দলনেতা। দলের অবস্থানের পরোয়া না-করে নিজে সেখানে যাওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন। তামিলনাড়ু সীমানায় পুলিশ অবশ্য তাঁকে আটকে দেয়। শেষ পর্যন্ত দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাটকে চিঠি লিখে তিনি কুডানকুলাম-প্রশ্নে অবস্থান পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান। দাবি তোলেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে এই নিয়ে আলোচনা করতে হবে। সেই আলোচনার শেষেই কেন্দ্রীয় কমিটি রীতিমতো প্রস্তাব পাশ করে রবিবার বলেছে, পার্টি কংগ্রেসে ঠিক হয়ে যাওয়া বিষয়ে সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের বিরোধিতা করে মোটেই ঠিক কাজ করেননি ভি এস।
কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি ছিল, স্থানীয় মানুষের জীবিকা এবং জীব-বৈচিত্র্য রক্ষার স্বার্থে কুডানকুলামের আন্দোলনে সমর্থন করা উচিত সিপিএমের। কিন্তু তাঁর দলের বক্তব্য, ভারত-আমেরিকা পরমাণু চুক্তি সই হওয়ার অনেক আগেই কুডানকুলামে দু’টি চুল্লির জন্য রাশিয়ার সহযোগিতা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ সময় নিয়ে এবং যথেষ্ট সময় নিয়ে তৈরি-হওয়া সেই চুল্লি এখন কাজ শুরু করার দোরগোড়ায়। জাপানের ফুকুশিমা দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে স্থানীয় বাসিন্দারা যে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন, তাঁদের সেই মতকে অবশ্যই কর্তৃপক্ষের মর্যাদা দেওয়া উচিত। আন্দোলন করলেই দেশদ্রোহিতার অভিযোগে ফাঁসানোর ঘটনার প্রতিবাদও করতে হবে। কিন্তু তা-ই বলে অসামরিক উদ্দেশ্যে পরমাণু বিদ্যুৎ তৈরির প্রকল্পকে আগাগোড়া বিরোধিতা করা যায় না।
সিপিএম সূত্রের খবর, দিল্লিতে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে কেরলের দুই নেতা টমাস আইজ্যাক এবং এ বিজয়রাঘবন কুডানকুলাম-প্রশ্নে দলের অবস্থান নিয়ে মুখ খোলেন। বিজয়রাঘবন কড়া ভাষায় ভি এসের অবস্থানের সমালোচনাও করেন। সিপিএম নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত কেরলের বিরোধী দলনেতার পক্ষে না-দাঁড়ানোয় ভি এস শিবির অবশ্য মনে করছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিবাদকে গুরুত্ব দেওয়া আবার একই সঙ্গে প্রবীণ নেতাকে ভর্ৎসনা দলের দ্বিচারিতাই প্রকট করে দিল।
ঘটনাচক্রে, তাঁর প্রতিবাদী অবস্থানের জন্য ভি এস-কে অভিনন্দন জানাতে গিয়েছিলেন প্রসেনজিৎ বসু। তাঁর বহিষ্কার প্রসঙ্গও এ বারের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আলোচনায় উঠেছে। কয়েক জন সদস্য প্রশ্ন তুলেছেন, প্রসেনজিৎ কেন্দ্রীয় ইউনিটের অধীনে গবেষণা শাখার প্রধান হয়েও দিল্লি রাজ্য কমিটির আওতাধীন জেএনইউ বা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কী ভাবে মাথা ঘামাতেন, সিপিএম-সুলভ শৃঙ্খলার মাপকাঠিতে তা যথেষ্টই বিস্ময়কর! |
|
|
|
|
|