|
|
|
|
উত্তরে বিস্তারের যুদ্ধে মমতার সেনাপতি কে ডি |
অগ্নি রায় • নয়াদিল্লি |
সাড়ে তিন দশকের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে পশ্চিমবঙ্গ দখলের পর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিশানায় এ বার উত্তর ভারত। সেখানে দলের দ্রুত প্রসারই যে তাঁর লক্ষ্য, সম্প্রতি দিল্লির যন্তর-মন্তরের সভায় তা খোলাখুলি জানিয়েও দিয়েছেন তিনি। আর এই ‘উত্তরায়নের’ গতি বাড়ানোর যুদ্ধে চণ্ডীগড়ের এক সফল পোল্ট্রি ব্যবসায়ীর উপরে অনেকটাই নির্ভর করছেন মমতা। তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মঞ্চে স্বল্প পরিচিত, কানোয়ার দীপ সিংহ ওরফে কে ডি সিংহ।
ইউপিএ থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করার পর যন্তর-মন্তরের সভা ছিল কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মমতার কার্যত প্রথম যুদ্ধ ঘোষণা। সেই সভায় হরিয়ানা, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা জনতা মমতা ছাড়া আর এক জনের নামেই স্লোগান দিয়েছে! তিনি কে ডি সিংহ! তৃণমূলের জনসভায় যে দৃশ্য একেবারেই দুর্লভ, সেটিও দেখা গিয়েছিল ওই সভায়। তা হল, হাজির জনতার টি-শার্টের এক পিঠে দলনেত্রীর মুখ, অন্য দিকে কে ডি-র! সভা নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি সমবেত ভিড়কে ‘আমার যোদ্ধা’ সম্বোধন করে মমতার জন্য হাততালি প্রার্থনা সবটুকুই করে গিয়েছেন অনায়াস দক্ষতায়।
সভায় আসা জনতাকে ‘আমার যোদ্ধা’ হিসেবে সম্বোধন করার বিষয়টি কিছুটা কানে লেগেছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁকে কাজে লাগানোর পিছনে তৃণমূল নেতৃত্বের নির্দিষ্ট অঙ্ক রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। আগামী মাসের গোড়া থেকে লখনউ, হরিয়ানা, দিল্লির মতো জায়গাগুলিতে সমাবেশ করবে তৃণমূল। সেগুলির নেতৃত্ব দিতে কে ডি-কেই দেখা যাবে। সম্প্রতি চণ্ডীগড়ে তৃণমূলের এক বিশাল এবং সুসজ্জিত দলীয় অফিস তৈরি করেছেন কে ডি, যার মাসিক ভাড়াই সাড়ে তিন লাখ টাকা।
কে ডি নিজে কী ভাবে দেখছেন গোটা বিষয়টা? তাঁর কথায়, “দলের বার্তা সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ আমাকে দেওয়া হয়েছে। সেটাতেই মন দিয়েছি। আপাতত হিমাচল প্রদেশের নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেটা দেখছি।”
তৃণমূলের মঞ্চে কে ডি-র ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে, তা বলার সময় এখনও আসেনি বলেই মনে করছেন অনেকে। এক সময় জেএমএম-এর হাত ধরে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন তিনি। কিন্তু পরে ঝাড়খণ্ডে ব্রাত্য হয়ে পড়েন তিনি। তার পরেই যোগ দেন তৃণমূলে। জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের প্রাসঙ্গিকতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক রেখচিত্র কী ভাবে এগোয়, সে দিকেই এখন নজর বিশেষজ্ঞদের। |
|
|
|
|
|