|
|
|
|
জম্মু থেকে চেন্নাই, পুজোর পটনায় থিমের ছোঁয়া |
স্বপন সরকার • পটনা |
পুজোর বাকি আর মাত্র কয়েকটি দিন। তারপরেই পাঁচ দিনের জন্য পটনা নেবে সর্বভারতীয় এক চেহারা। জম্মু থেকে চেন্নাই, সবেরই ছোঁয়া পাবে বিহারি পটনা। এ বারের দুর্গাপুজোয় এমনই সব নানা ‘থিম’ নিয়ে হাজির হচ্ছে পটনার দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তারা।
পটনার ডাকবাংলো চকের বড় বাজেটের পুজোয় এ বার গড়ে উঠছে চেন্নাইয়ের মহালক্ষ্মী মন্দির। নব যুবক সঙ্ঘের পুজো উদ্যোক্তরা পাট দিয়ে তৈরি করছেন অবিকল এই মন্দির। প্রায় ১০০ ফুট উচ্চতা হবে মন্দিরের। সঙ্ঘের দাবি, চেন্নাইয়ের মহালক্ষ্মী মন্দিরটি হবহু তুলে আনা হচ্ছে পটনায়। এর জন্য পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে নিয়ে আসা হয়েছে ২৫ জন শিল্পীর একটি দল। সঙ্ঘের সভাপতি সঞ্জীব প্রসাদ টোনি বলেন, “প্রতি বছর আমরা নতুন থিম নিয়ে হাজির হই। আমরা চাই, আমাদের মণ্ডপে এসে পটনাবাসী প্রতিবারই নতুনত্বের স্বাদ পান।” মণ্ডপের কাজ শুরু হয়েছে বিশ্বকর্মা পুজোর পর থেকেই। এর সঙ্গে থাকছে আলোক সজ্জা। চন্দনগরের আলো। ডাকবাংলো চকে মহালক্ষ্মী মন্দির তো রাজাবাজারে জম্মুর বৈষ্ণোদেবীর মন্দির। পাহাড়ের কোলে গড়ে তোলা হবে এই মন্দিরটি। এর সঙ্গে থাকবে শব্দ আর আলোর কারসাজি। পুজো সমিতির সদস্য কাঞ্চন কুমারের কথায়, “পাহাড়ের কোলে মন্দির এবার দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করবে বলেই আমাদের ধারণা।”
পটনার খাজপুরা শিব মন্দির পুজো সমিতি এবার তুলে আনছে ইসকন মন্দিরকে। কয়েক বছর আগে এই পুজো সমিতি তৈরি করেছিল রাজস্থানের লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির। এ বার তারাই ঝাড়খণ্ড বাংলার সীমান্ত এলাকা, জামতারা থেকে নিয়ে এসেছেন শিল্পীদের। কাপড় আর থার্মোকল দিয়ে তৈরি করা হবে মণ্ডপটি। বেইলি রোডের মুন ক্লাবের পুজোর এ বারের আকর্ষণ কর্ণাটকের বিধান সৌধ তথা বিধানসভা ভবন। মণ্ডপ শিল্পী কলকাতার। প্রতিমা তৈরি করবে জামতাড়ার শিল্পীরা।
পুজো কমিটির সভাপতি প্রকাশ সিংহ বলেন, “গত বার মণ্ডপের জন্য চার লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছিল। এ বার খরচ ধরা হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা।” এলাকার মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “এলাকার মানুষ পুজোয় স্বতস্ফূর্ত ভাবে চাঁদা দেন। তাতেই আমরা উৎসাহিত হয়ে পুজোকে ক্রমশ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।”অবশ্য এরই মাঝে গৌরীশঙ্কর কলোনির বাঙালীদের পুজোও কম যায় না। পাঁচ লক্ষ টাকা বাজেটের পুজোয় এ বার মূর্তি তৈরি করছেন কলকাতার শিল্পী। ঢাকি আসছেন বাঁকুড়া থেকে। এখানে দুর্গা মণ্ডপ পাকাপাকি ভাবে তৈরি থাকায় পুজোয় তেমন কোনও থিম থাকে না। সাবেকি পুজোয় মেতে ওঠে এই বাঙালি পাড়া। সপ্তমীর দিন গান, নাটক দিয়ে শুরু হয় পুজোর আনন্দ। এরপর তো আছে খাওয়া-দাওয়া। এখানকার পরিবারগুলি এক সঙ্গে জড়ো হয়ে খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। মণ্ডপের বাইরে থাকে খাবারের নানা ধরনের স্টলও। সেখানে থাকে ফুচকা থেকে আইসক্রিম, সব। সমিতির সম্পাদক চঞ্চল কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “পুজোর ক’টা দিন আমরা সকলেই একটা পরিবার হয়ে উঠি।” পটনায় বাঙালি পুজোর এই ঐতিহ্য এখনও যারা ধরে রেখেছে, গৌরীশঙ্কর কলোনি তাদের অন্যতম। |
|
|
|
|
|