...সময় এল কাছে পক্ষীরাজ থেকে ভাদু,
টুসুর গল্পে সাজছে মণ্ডপ
‘পুজোর ছুটিতে কলকাতা, নাকি শহরের বাইরে’ নিজের ফেসবুক ওয়ালে এই কথাটা লিখতে না লিখতেই একের পর এক মন্তব্য আসতে শুরু করল। ক্রমশ জমে উঠল রবিবাসরীয় আড্ডা আর তর্ক। প্রথম দিকে থাকা না-থাকার পক্ষে-বিপক্ষে কমেন্ট পড়ল ‘ফিফটি ফিফটি’। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই কলকাতার থাকার পক্ষে কমেন্টের সংখ্যা বাড়তে থাকল জোরকদমে। আর কলকাতায় কেনই বা নয়? এখানেই তো এ বার স্বয়ং দুর্গা আসছেন পক্ষীরাজে চেপে।
পক্ষীরাজ ঘোড়ায় চেপে দেবীর মর্ত্যে আগমন দেখতে গেলে আসতে হবে দমদমের জপুর ব্যায়াম সমিতিতে। দর্শকদেরও পক্ষীরাজ ঘোড়ায় চাপার অভিজ্ঞতা হবে। শুধু দেবী দুর্গাই নয় পক্ষীরাজে আসছেন পঞ্চশক্তির দেবতারাও। মানুষেরই সৃষ্টি করা দূষণ পৃথিবীকে ঠেলে দিচ্ছে ধ্বংসের দিকে। এ নিয়েই মানুষকে সচেতন করতে দেবী দুর্গা-সহ পঞ্চশক্তির দেবতাদের মর্ত্যে আগমন। গ্লাস পেন্টিংয়ে সাজছে পুরো মণ্ডপ।
পক্ষীরাজ ঘোড়া থেকে নেমে এ বার সোজা চলে যাওয়া যেতে পারে ফেলে আসা ছোটবেলায়। খিদিরপুরের নবরাগের এ বারের থিম ‘আমাদের ছেলেবেলা’। শৈশবের নানা কোলাজ ফুটে উঠবে পুজো মণ্ডপে। এর মধ্যে অনেক কোলাজ হয়তো আজকের শিশুরা চিনবে নতুন করে।
রথযাত্রা থেকে শুরু করে টুসু, ভাদু, ময়ূরপঙ্খী উৎসবও আসলে কিন্তু নারীশক্তিরই উদ্যাপন। এই উৎসবের নানা রূপ দেখতে হলে আসতে হবে রূপচাঁদ মুখার্জি লেন সর্বজনীন দুর্গোৎসবে। নতুন প্রজন্মের অনেকেই টুসু, ভাদু উৎসব সম্পর্কে জানে না।
এই উৎসবগুলির নানা অজানা দিক তুলে ধরা হবে মণ্ডপে। কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। কোনও উৎসব পেলেই মেতে ওঠে বাঙালি। খিদিরপুর ভেনাস ক্লাবের পুজো মণ্ডপে ফুটবে ছোট থেকে বড় নানা পার্বণের কোলাজ।
ভবানীপুরের নর্দার্ন পার্কের ২২ পল্লি শারোদৎসবের মণ্ডপে আবার দেখা মিলবে শতদল তরীর। এই তরী এক নিমেষ পৌঁছে যায় ‘আনন্দলোকে’। সমগ্র বিষয়টি ফুটিয়ে তুলতে তৈরি হচ্ছে সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চল। থাকবে মাছ ধরার নৌকা, বিশালাকার জাল ইত্যাদি। পুরীর শিল্পীরা ছবি আঁকবেন বালি দিয়ে। ১০৮টি ডিঙি দিয়ে তৈরি হবে মণ্ডপ। জেলেরা পুজো করলে কেমন হত তাঁদের মণ্ডপ?
উত্তর খুঁজতে হলে পৌঁছে যান ভবানীপুরের রাখাল মুখার্জি রোডের অবসরের মণ্ডপে। জেলে-গ্রামের দুর্গা পুজোর ভাবনা মাথায় রেখে সেজে উঠছে মণ্ডপ। জেলেদের ব্যবহৃত নানা জিনিস যেমন জাল, নৌকা, জেলে-টুপি ব্যবহৃত হচ্ছে মণ্ডপসজ্জায়।
ফেসবুকে জমে উঠেছে কমেন্ট। পুজোয় কলকাতায় থাকার পক্ষে যাঁরা, তাঁদের এক জন হঠাৎ লিখে ফেললো এ বার নিউ টাউনে কেদারনাথ। লেখার সূত্র ধরে জানা গেল নিউ টাউনের ইস্টার্ন হাই পুজো কমিটি বানিয়ে ফেলেছে একটা আস্ত কেদারনাথ মন্দির।
বালিগঞ্জ পূর্বপল্লি ক্লাবের থিম এ বছর ‘কাত্যায়ন ঋষির কর্মশালা থেকে আধুনিক থিম মেকারদের কর্মশালা’। কর্মশালার বিবর্তন ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে এই পুজোর বার্তা শিল্পের বিবর্তন হয়েছে মাত্র। আজকের শিল্পীদের কর্মকুশলতা সত্যযুগের দেব-তেজেরই সমান।
প্রতাপাদিত্য রোডের চতুষ্কোণ পার্কের শারদীয়া সম্মিলনী দেখাবে শিক্ষা লাভ থেকে কী ভাবে শক্তি সঞ্চয় হয়। আর সেখান থেকেই মেলে মুক্তির আস্বাদ। পাশাপাশি শিশুশিক্ষার গুরুত্বও বোঝানো হবে এই পুজো মণ্ডপে।
আজকের থিমের পুজো নয় বরং পুরনো দিনের দুর্গাপুজো কেমন ছিল তা জানতে হলে পৌঁছে যেতে হবে বেলতলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব পুজো মণ্ডপে। আজকের শিল্পীরা ফুটিয়ে তুলবেন সাবেক পুজো-মণ্ডপের সাজ সজ্জা। পুরনো ও নতুনের এক ‘ফিউশন’ তৈরি হবে মণ্ডপ জুড়ে। ফেসবুকে ভোটাভুটিতে জিতল শেষে পুজোয় শহরে থাকা। কত কমেন্টে জয়ী হল? দেখলে আঁতকে উঠতে হবে। গুনতে বসলে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে যাবে যে!
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.