একটা সময়ে পুজোর আগে বলিউডের ফ্যাশন নিয়েই মাথাব্যথা ছিল বাঙালির। দিন পাল্টেছে। এখন আর বলিউড নয়, পুজোর বাজার মাতাচ্ছে টলিউড এমনকী বাংলা ধারাবাহিকও। ছোট মেয়েদের জন্য মা ধারাবাহিকের ঝিলিক চুড়িদার তো পুরো সুপারহিট! পিছিয়ে নেই পাগলু ড্রেসও।
ছোটদের পুজোর পোশাকের মধ্যে এ বার সবথেকে চাহিদা বেশি পাগলু ড্রেস আর স্কার্টের। স্টক আনার সঙ্গে সঙ্গেই শেষ, এমনটাই দাবি বিক্রেতাদের। বর্ধমান শহরের বিসি রোডের রূপমহলের কাছে একটি দোকানের মালিক কমল আগ্রবাল বলেন, ‘‘মানুষের এত চাহিদা, যে মেটাতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। অনেকে তো অ্যাডভান্সও দিয়ে যাচ্ছেন। তবুও সময়ে বরাত সরবরাহ করতে পারছি না। সমান তালে বাজার জমিয়েছে বাচ্চাদের ধুতি প্যান্ট ও ঝিলিক চুড়িদারও।” |
শাড়ির বাজারে এ বার চাহিদা বেড়েছে সুতির জামদানি, রঙিন তসর ও মটকার। বর্ধমানের বিসি রোড কালিতলার তাঁতবস্ত্র বিক্রেতা অমল ঘোষ বলেন, “গত বারের চেয়ে তাঁতের শাড়ির চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যোগান মিলছে না। শাড়ির দামও আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।” ডোপিয়ান গিচা সিল্ক এ বার শাড়ির বাজারের অপর আকর্ষণ। তিন থেকে চার হাজার টাকার এই শাড়িও ক্রেতাদের পছন্দের হাওয়ায় উড়ে যাচ্ছে, জানালেন দত্ত সেন্টারের ব্যবসায়ী অলক চক্রবর্তী। রয়েছে পার্শি সিল্কও।
ছেলেদের জন্য এ বারের হটকেক ন্যারো জিন্স ও ফাঙ্কি টি- শার্ট। চাহিদা রয়েছে প্যানেল শর্ট শার্টেরও। দাম ৫৫০ থেকে ১২০০, ২৫০ থেকে ৭০০ বা ২৫০ থেকে সাড়ে ৬০০টাকার মধ্যে, জানালেন তেঁতুলতলা বাজারের ব্যবসায়ী মহম্মদ ইজাজ।
জুতোর বাজারে এ বারের আকর্ষণ বান্টু শু ও চটি। দামও তেমন বেশি নয়। মাত্র ২৬০-২৮০টাকা। বাচ্চাদের জন্য পছন্দের জুতো এয়ারি ও বকলেস। তাও মাত্র ১৫০-২৭০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। জানালেন বড় বাজারের জুতো ব্যবসায়ী শেখ জব্বর আলি। তাঁর কথায়, ‘‘পুজোর সঙ্গে ঈদের বাজার এক সঙ্গে পড়ে যাওয়ায় এখন নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই।”
দেবীপক্ষ তো পড়েই গেল। কয়েক দিন পরেই ঈদ। আর পার্লারে ভিড় হবে না? বর্ধমান শহরের টিকরহাটের একটি পার্লারের কর্ণধার জানালেন, এ বার পুজোয় পার্লারে টিন-এজারদের ভিড় বেশি। তবে পাল্লা দিচ্ছেন মধ্যবয়স্কারাও। টিন-এজারদের কাছে এ বার ‘নেল আর্ট’ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তেমনি মাথার চুলের রঙয়ে ‘হাইলাইটিং’-এর চাহিদাও তুঙ্গে।
|
নতুনগঞ্জে প্রাচীন বেদিতে হল মন্দির
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো একটি বেদিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠল কালী মন্দির। শহরের নতুনগঞ্জের গোড়ের মাঠের ওই মন্দিরের উদ্বোধন হবে আজ, সোমবার বিকেলে। স্থানীয় বাসিন্দা, পেশায় চিকিৎসক শিশির পাঁজা জানান, প্রায় ২৫০ বছর আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে ধূর্জটীপ্রসাদ নামে এক জন এখানে আসেন। তিনি একটি বেদি তৈরি করে কালী পুজো শুরু করেন। মাঝেমধ্যেই উধাও হয়ে যেতেন। ফিরেও আসতেন। শেষে এখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। তার পরে দীর্ঘ এক শতক ধরে এখানে পড়ে ছিল শূন্য বেদি। কিন্তু অনেক দিন ধরেই স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ওই বেদি নিয়ে বিভিন্ন ‘মিথ’ তৈরি হয়। ১৯৯১ সালে স্থানীয় মহিলাদের উদ্যোগে ফের কালী পুজো শুরু হয় বেদিতে। কিছু দিন আগে ওই বেদি ঘিরেই একটি মন্দির তৈরির কথা ভাবেন বাসিন্দারা। তাঁদের দানেই গড়ে ওঠে মন্দির। এলাকার বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, জয়ন্ত চৌধুরীরা বলেন, “এখানে দেবী খুবই জাগ্রত, শুনেছি। কালী পুজোর পরে কাঠামোটি খোলা আকাশের নীচে পড়ে থাকত। তাই ঠিক করি, ওখানে একটি মন্দির গড়তে হবে।” |