মহালয়াতেই সম্পূর্ণ আরাধনা
দেবীপক্ষের সূচনাতেই চার দিনের দুর্গাপুজো এক দিনেই সম্পূর্ণ করা হয় হিরাপুরের ধেনুয়া গ্রামে।
চোখ ধাঁধানো আলো বা অতিকায় মণ্ডপ নেই। তবুও এই পুজো ঘিরে উৎসাহের খামতি নেই। আশপাশের কয়েকটি গ্রামের লোকজন তো বটেই, অনেক দূর থেকে ভক্তদের সমাগম হয়। ফি-বছর ওই একটা দিনের জন্য ‘তারকা’ হয়ে ওঠে গ্রামটি।
হিরাপুর থানা এলাকার শেষ প্রান্তে দামোদরের পাড়ে রয়েছে ধেনুয়া গ্রাম। গ্রামের কালিকৃষ্ণ আশ্রমে প্রতি বছর মহালয়ার ভোরে এই অভিনব পুজো আয়োজিত হয়। এ বারও আজ, সোমবার, মহলয়ার ভোরে সূর্যের আলো ফোটার আগে দেবীর আবাহন শুরু হবে। আবার সূর্যাস্তের মুহূর্তেই বিসর্জিত হবেন দেবীদুর্গা। এই কালিকৃষ্ণ আশ্রম ঠিক কবে প্রতিষ্ঠিত হয় তার নির্দিষ্ট হিসাব দিতে পারেননি এলাকার বাসিন্দা ও ও আশ্রমের আবাসিকেরা।
হিরাপুরের ধেনুয়া গ্রামের মন্দির। ছবি: শৈলেন সরকার।
আশ্রমের বর্তমান কর্ণধার জ্যোতিন মহারাজ জানান, এই পুজো শুরু করেন তাঁর দাদা তেজানন্দ বহ্মচারী। ৩৫ বছর আগে এক দিন ভোররাতে তিনি স্বপ্নাদেশ পান। সেই বছর থেকেই তিনি এই দুর্গাপুজো শুরু করেন। তাঁর নির্দেশেই মহালয়ার ভোরে প্রথমে কালীপুজো করা হয়। তার পরে হয় দেবীদুর্গার বোধন।
এখন অবশ্য এই পুজোর সব দায়িত্ব সামলান জ্যোতিন মহারাজই। তিনি জানান, স্বাভাবিক নিয়মেই এখানে পুজো হয়। তবে সামন্য কিছু পার্থক্য রয়েছে। তাঁর কথায়, “চার দিনের পুজো এক দিনেই সারা হয়। প্রতিমার গায়ের রঙ এখানে আগুন রাঙা। দুর্গার চার সন্তান, মহিষ বা মহিষাসুর নেই কেউই। বদলে দেবীর দুই সহচরী জয়া, বিজয়া এখানে দুর্গার সঙ্গে পুজিত হন।” তিনি জানান, মহালয়ার আগের দিন প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু হয়। স্তোত্রপাঠ শুরুর মুহূর্তেই প্রতিমা নির্মাণ শেষ করতে হয়। এ রপরেই শুরু হয় কালীপুজো। ঘণ্টা দু’য়েকের মধ্যে কালী পুজো শেষ করে মহাষ্টমির পুজো শুরু হয়। দশমীর বিসর্জন হয়ে গেলে ভক্তরা মিষ্টিমুখ করেন।
পুজো হবে তাই সাজো সাজো রব আশ্রম জুড়ে। বিশাল আমবাগান পরিষ্কার করা হচ্ছে। রাস্তা সংস্কার হয়েছে। ঝোপাঝাড় কেটে ফেলা হয়েছে। রং করা হয়েছে আশ্রমটিও। আর এ সব কাজ দাঁড়িয়ে থেকে দেখাশোনা করছেন গ্রামেরই এক বাসিন্দা রামদাস মণ্ডল। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সারতে সারতে বললেন, “আর তো সময় নেই। পুজো তো কড়া নাড়ছে দরজায়। হাজার দশেক ভক্তের আগমন হবে। ব্যবস্থা পাকা করতে হবে তো!” ধেনুয়া গ্রামের বাসিন্দা ধরণী মণ্ডলের কথায়, “একদা এই তল্লাটের পাঁচ, ছটি গ্রামের জন্য ওই একটাই দুর্গাপুজো হত। চার দিনের পুজো এক দিনে সেরে ফেলায় বাসিন্দাদের আফশোসের শেষ ছিল না। বছর দশেক আগে ধেনুয়া গ্রামে একটি দুর্গাপুজো শুরু হয়েছে। আশপাশেও আরও কয়েকটি পুজো হচ্ছে। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য আসানসোল শহর পর্যন্ত বাস রাস্তা চালু হয়েছে। ফলে গ্রামবাসীরা এখন দূরেও ঠাকুর দেখতে যেতে পারছেন। তাই সেই অর্থে এখন আর সেই আফশোস নেই।” তাঁর দাবি, “তাই বলে ধেনুয়ার এই কালিকৃষ্ণ আশ্রমের এই পুজোর উৎসাহে বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি। বলা যায় মানুষের আগ্রহ অনেক বেড়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.