দলীয় নেতা খুনের পরপরই জেলার শিল্পাঞ্চল এলাকায় পালিয়ে গিয়েছিল ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত হারা শেখ। তার পরে বেশ কয়েক মাসের জন্য সে ছিল বাংলাদেশে। কিছু দিন আগে কলকাতায় ফিরে কাঁকুরগাছিতে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করছিল। আর সে খবর ছিল তাদের কাছে। হারা শেখকে গ্রেফতার করার পরে এমনটাই দাবি করল পুলিশ।
শনিবার ভোরে হারাকে গ্রেফতার করে কেতুগ্রাম ও মানিকতলা থানার পুলিশ। শনিবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে তাকে ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। তৃণমূল নেতৃত্ব জানান, হারাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।
গত বছর ৩১ ডিসেম্বর কেতুগ্রামের কান্দরার কাছে মালগ্রাম সেচখালের কাছে গুলিতে খুন হন তৃণমূল নেতা কৃপাসিন্ধু সাহা। কেতুগ্রাম থানা সূত্রে জানানো হয়, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কেতুগ্রাম থানায় হারা শেখ-সহ বেশ কয়েক জনের নামে অভিযোগ করেন। খুনের পরেই পালায় হারা। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চাঁদ শেখ ও ইসলাম মল্লিক নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। মে মাসে আদালতে চার্জশীট পেশ করে পুলিশ। হারা শেখ পলাতক থাকায় পুলিশ তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। তার বাড়িও ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, কৃপাসিন্ধুবাবুর খুনের পর থেকেই তাঁর অনুগামীরা হারাকে গ্রেফতারের জন্য নানাভাবে পুলিশকে ‘চাপ’ দিচ্ছিলেন। খুন ছাড়াও বোমাবাজি, বিভিন্ন সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগেও গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল তার উপর। অবশেষে খুনের প্রায় সাড়ে নয় মাস পরে তাকে ধরা গেল।
কেতুগ্রামের আইসি আবদুর গফ্ফরের দাবি, “ধৃতকে জেরা করে জানা গিয়েছে, মাস কয়েক আগে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় আসে সে। কেতুগ্রাম থানার শ্রীগ্রামের এক রাজমিস্ত্রী কাঁকুরগাছিতে বহুতল বাড়ি তৈরির কাজ করছিলেন। তার কাছে থেকে রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ের কাজ করছিল সে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, সেখান থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।”
ঘটনার পরে তৃণমূল কেতুগ্রাম ১ ব্লক সভাপতি রত্নাকর দে বলেন, “ও আমাদের দলের নেতা ছিল। কিন্তু খুন-খারাপিতে জড়িয়ে যাওয়ায় ওকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিক।” অন্য দিকে, সিপিএমের ভাগীরথী-অজয় জোনাল কমিটির সদস্য ফারুক মির্জার প্রতিক্রিয়া, “এক জন খুনিকে ধরতে পুলিশের ন’মাস লাগল। এটা লজ্জার। আমরা চাই এলাকার আরও দুষ্কৃতীরা গ্রেফতার হোক।” |