মূল অভিযুক্ত অধরা
পূর্বস্থলীতে ট্রেন থেকে ফেলে খুন ছাত্রীকে, ধৃত ১
ট্রেন থেকে ছাত্রীকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার গভীর রাতে পূর্বস্থলীর নসরতপুরের মধ্যপাড়া এলাকা থেকে শ্যামল বসাক নামে ওই যুবককে ধরা হয়। পুলিশ জানায়, যে যুবক ওই ছাত্রীকে ঠেলে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ, ধৃত তার দাদা। রেলপুলিশ জানিয়েছে, চলন্ত ট্রেন থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় আরও চার জন অভিযুক্ত।
প্রেম-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সত্যজিৎ বসাক নামে এক যুবক পূর্বস্থলীর সমুদ্রগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সুজয়া বসাককে (১৭) চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ। শনিবার সকালে নবদ্বীপে টিউশন থেকে তিন বান্ধবীর সঙ্গে ফেরার পথে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সুজয়ার পরিজনেরা কালীনগর স্টেশন থেকে রেললাইন ধরে হেঁটে গিয়ে এক জায়গায় তার দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। কালনা হাসপাতালের পথে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু রেলের তরফে খবর না পাওয়ায় রেলপুলিশ প্রথমে অভিযোগ নিতে চায়নি বলে দাবি মৃতার বাড়ির লোকজনের। প্রতিবাদে সন্ধ্যায় সাড়ে ৮টা থেকে তৃণমূলের নেতৃত্বে কালনা জিআরপি থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তাদের হস্তক্ষেপে কালনার রেলপুলিশ অভিযোগ নেয়।
লিখিত অভিযোগে সুজয়ার বাবা দুলাল বসাক জানান, তার তিন মেয়ের মধ্যে সুজয়া মেজো। পাড়ার ছেলে সত্যজিৎ ওরফে সন্তু তাকে প্রায়ই উত্তক্ত্য করত। দুলালবাবু অভিযোগ করেন, শুক্রবার বিষয়টি সত্যজিতের বাড়ির লোকজনকে জানাতে গেলে উল্টে তাঁদেরই গালিগালাজ করা হয়। তাঁর মেয়ের সম্বন্ধে খারাপ কথা বলা হয়। এমনকী, তাঁর মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল বলে দুলালবাবুর দাবি।
শনিবার সকালে সুজয়া নবদ্বীপে টিউশনে গিয়েছিল। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ফেরার সময়ে তিন বান্ধবীর সঙ্গে ট্রেন ধরার জন্য নবদ্বীপ স্টেশনে পৌঁছয়। অভিযোগ, সেই সময়ে সেখানে হাজির হয় সত্যজিৎ। তার সঙ্গে সুজয়ার বচসা শুরু হয়। ইতিমধ্যে ট্রেন চলে আসায় সুজয়া বান্ধবীদের সঙ্গে মহিলা কামরায় উঠে পড়ে। সত্যজিৎও সেখানে ওঠে। পেশায় তাঁতশ্রমিক দুলালবাবুর দাবি, “মেয়ের বান্ধবীদের থেকে জেনেছি, ট্রেনের মধ্যেও সুজয়ার সঙ্গে ছেলেটির তর্কাতর্কি হয়। চলন্ত ট্রেন থেকে আমার মেয়েকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় সে।” সুজয়ার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সমুদ্রগড় স্টেশনে নেমে সুজয়ার বাড়িতে খবর দেয় তার বান্ধবীরা। তারা জানায়, ব্যান্ডেল-কাটোয়া রেললাইনে নবদ্বীপ ও কালীনগর স্টেশনের মাঝে ঘটনাটি ঘটেছে। বাড়ির লোকজন হেঁটে গিয়ে নিমতলা এলাকায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ট্রেনে ঘটনার সময়ে সত্যজিতের সঙ্গে ছিল তার দাদা শ্যামল। এই ঘটনায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে খুন ও খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সত্যজিৎ ও শ্যামল ছাড়া অন্য অভিযুক্তেরা হল তাদের বাবা চন্দ্রনাথ বসাক, কাকা নারায়ণ বসাক ও জ্যাঠা সাধন বসাক। রবিবার শ্যামলকে কালনা মহকুমা আদালতে তোলা হলে তাকে তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। বাকি অভিযুক্তেরা পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রবিবার মৃত ছাত্রীর ময়না-তদন্ত হয় কালনা মহকুমা হাসপাতালে। মধ্যপাড়ার পঞ্চায়েত সদস্য শঙ্কর বসাক বলেন, “ঘটনার সময়ে ওই ছাত্রীর সঙ্গে থাকা তিন বান্ধবীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা খুব আতঙ্কে রয়েছে। পুলিশ তাদের সঙ্গে কথা বললেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।” পূর্বস্থলীর (দক্ষিণ) বিধায়ক স্বপন দেবনাথ বলেন, “পুলিশের কাছে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.