ম্যাচের দিনগুলোকে অন্য দিনের মতোই দেখি। আর পাঁচটা দিন যা করি, ম্যাচের দিনের রুটিনও তা-ই থাকে। ব্যাপারটাকে সহজ রাখি। সাধারণ মানুষ যা ভাবেন বা মিডিয়ায় যে রকম বলাবলি হয়, সে রকম যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি বা খুব লম্বা, ক্লান্তিকর মিটিংও হয় না। তবে হ্যাঁ, আজ যে ম্যাচ আছে সেই ভাবনাটা দলের সবার মনে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। আসলে ম্যাচ নিয়ে বেশি ভাবনাচিন্তা করলে কী হয় জানেন? সহজাত খেলাটা নষ্ট হয়ে যায়। তার জায়গায় কাঠ-কাঠ একটা মনোভাব চলে আসে।
ব্যক্তিগত ভাবে আমি ম্যাচ নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতেই পছন্দ করি। ম্যাচের দিন মাঝেমধ্যে টিভি-র দিকে খুব মন দিয়ে তাকিয়ে থাকি। কিন্তু মন পড়ে থাকে ম্যাচে। ম্যাচ পরিস্থিতি নিয়ে ভেবে যাই। আমার স্ত্রী নাতাশা এটা জানে। যার জন্য হোটেলের ঘরে জিনিসপত্র গুছিয়ে দিয়ে ও আমাকে নিজের মতো থাকতে দেয়। এখানে বলে রাখি, গোছগাছ করাটা আমার একেবারেই আসে না। নিজের ব্যাটটা কোথায় থাকে সেটাই শুধু জানি। বাকি কোথায় কী থাকে, কে জানে! আমার প্রিয় একজোড়া মোজা, অ্যাক্রেডিটেশন, জিঙ্ক ক্রিম, সানগ্লাসদৌড়োদৌড়ি করে নাতাশাকেই গোছাতে হয়। আই অ্যাম সরি নাতাশা! কথা দিচ্ছি এ বার থেকে এ সব খেয়াল রাখব।
আমার ঘরে যে জিনিসটা আমাকে টেনশনমুক্ত রাখে, সেটা আমার ব্যাট। নিশ্চয়ই অনেক ক্রিকেটারের ক্ষেত্রেই কথাটা খাটে। আপনাদের শুনতে অদ্ভুত লাগতে পারে, কিন্তু ব্যাটটা হাতে নিলেও মনের ভেতর কেমন একটা আশ্বস্ত ভাব আসে। ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালের আগের রাতটার কথা বলি। তখন বোধহয় এগারোটা-সাড়ে এগারোটা বাজে। হোটেলের ঘরে একা বসে বসে বড় ফাইনালের কথা ভাবছিলাম। লাসিথ মালিঙ্গাকে খেলতে হবে, ওর চ্যালেঞ্জটা নিতে হবেবারবার এই ব্যাপারটা মাথায় ঘুরছিল। এখনও মনে আছে, উঠে দাঁড়িয়ে ব্যাটটা হাতে নিলাম। তার পর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মনে মনে ভাবলাম, মালিঙ্গার তিনটে ওভার খেলছি! ধারালো ইয়র্কারগুলো ছিলই, লেগ সাইডে বল করলে কী করব তা-ও দেখে নিলাম। কত রান হয়েছিল আর গোনা হয়নি। কিন্তু হোটেলের বাথরুমে মালিঙ্গার স্পেলে অন্তত ২০ বা ২২ নট আউট ছিলাম। তার পরেই যাবতীয় টেনশন হাওয়া! সত্যি, আমাদের মস্তিষ্ক কী অদ্ভুত ভাবে কাজ করে!
দিল্লি ম্যাচের আগের রাতে এ সব করিনি। তবে ব্যাট হাতে ফরোয়ার্ড ডিফেন্সিভ স্ট্রোকটা ঝালিয়েছি। আপনারা যতক্ষণে এই কলামটা পড়বেন, ততক্ষণে জেনে যাবেন দিল্লি ম্যাচে ওই স্ট্রোকটা খেলেছি কিনা।
জো’বার্গে একমাত্র মাথাব্যথা বৃষ্টি। হাইভেল্ড লায়ন্সের সঙ্গে প্র্যাক্টিস ম্যাচটা ভেস্তে গেল। আজও ভাল প্র্যাক্টিস পেলাম না। স্যান্ডটন সান শপিং মল-এ ঘুরলাম। হোটেলের পাশেই। ভারতীয় দলের সঙ্গেও এই হোটেলে উঠেছি। কিন্তু এত বছর পরেও শপিং মলে হারিয়ে যাই। ভাগ্য ভাল নাতাশা মল-টা ভাল চেনে। এখন মল-এ যাচ্ছি মানিব্যাগ কিনতে। নাতাশা বলছে খয়েরি। আমার পছন্দ কালো। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কে জেতে!
|
আজ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টিতে |
চেন্নাই সুপার কিংস : সিডনি সিক্সার্স
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স : লায়ন্স |
|