সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উঁচুতে উঠে
পতন আইপিএল শৃঙ্গজয়ীদের
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নাইটদের উদ্বোধনী ম্যাচটা দেখে অনেকেই নিশ্চয়ই চমকে উঠছেন। নিশ্চয়ই ভেবে পাচ্ছেন না, যে টিমটা আইপিএল চ্যাম্পিয়ন, তাদের কী ভাবে এত ছন্নছাড়া দেখাল?
উত্তরটা খুব সহজ। সেঞ্চুরিয়ন আর চিপক এক নয়। আকাশ-পাতাল তফাত। গৌতম গম্ভীরের নাইট রাইডার্স যে ভারতের পাটা উইকেটে দুর্ধর্ষ টিম, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু যে পিচে বাউন্স থাকবে, বল মুখের কাছে ছিটকে আসবে, সেখানে এই নাইট রাইডার্সের উপর বাজি ধরলে হয়তো হারতে হবে। দিল্লির কাছে ৫২ রানে হারে তাই আমি অন্তত অবাক হচ্ছি না। বরং মনে হচ্ছে, নাইটরা সেঞ্চুরিয়নের এমন পিচের জন্য তৈরিই ছিল না। কালিসের মতো ব্যাটসম্যানও মর্কেলের বলে আঙুলে চোট পেয়ে গেল এই পিচে। ভাগ্য ভাল, চোটটা গুরুতর নয়।
ম্যাচটা যে নাইটরা হারবে সেটা তিন রানের মধ্যে তিন উইকেট চলে যাওয়ার পরই বুঝে গিয়েছিলাম। হারটা নয়, হারের ধরন নিয়ে আমার বেশ কিছু প্রশ্ন করার আছে গৌতম গম্ভীরকে। তোমার ব্যাটিং অর্ডারে এত ভুলভ্রান্তি কেন? কী ভেবে তুমি মনবিন্দর বিসলাকে নামালে? বালাজি নাগাড়ে শর্ট করে পরের পর ছয় দিচ্ছে দেখেও কেন ওকে ডেকে কিছু বললে না তুমি?
ব্যর্থ নাইট অধিনায়কও।
আমি বুঝে পাচ্ছি না, যে টিমে ব্রেন্ডন ম্যাকালাম আছে, সেখানে বিসলা কেন ওপেন করতে যাবে? ওর কোনও রঞ্জি টিম নেই। ম্যাচ প্র্যাক্টিস পায় না। কিপিংও খারাপ। এ দিনই তিনটে ক্যাচ ফেলল। আইপিএল ফাইনালে ভাল খেলেছে বলে যে সেঞ্চুরিয়নেও ওকে দিয়ে চলবে, এমন ভাবাটা বোকামি। মর্কেলের বলগুলো দেখলেন? বাউন্সার করে করে নাইটদের কাঁদিয়ে ছাড়ল। একমাত্র মনোজই ওকে যা সামলেছে। মনোজ পারবে আমি জানতাম। কারণ জাতীয় দলে ঢোকার ইচ্ছেটা ওর মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে। কিন্তু বাকিদের কথা যতটা কম বলা যায়, ততই ভাল।
গৌতমকে একটা জিনিস বুঝতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকার পিচে ব্যাটিংয়ে ভরসা করার মতো ওর হাতে চার জন। ও নিজে। কালিস। ম্যাকালাম। আর মনোজ। কিন্তু এদের ঠিকঠাক অর্ডারে নামাতে হবে। গম্ভীরের সঙ্গে ম্যাকালাম ওপেন করুক। তার পর আসুক কালিস আর মনোজ। তবে ইউসুফ পাঠান বা রজত ভাটিয়া যদি কিছু করে তা হলে সেটাকে বোনাস হিসেবে ধরতে হবে। ওরা খুব বেশি হলে ‘সাপোর্টিং অ্যাক্টর’। কিন্তু মূল চরিত্রে এরা চার জন।
দক্ষিণ আফ্রিকার পিচেও নায়ক সেই নারিন। দিল্লির আরও একটি উইকেট নিয়ে।
এই উইকেটে কোনও টিম ১৬০ তুলে ফেললে ম্যাচ বার করা এমনিতেই খুব কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যখন তুমি সহবাগ-জয়বর্ধনে-পিটারসেনকে তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে দিয়েছ, তাদের ১৬০ তুলতে দেবে কেন? বিশেষ করে বলব বালাজির কথা। শনিবারের সেঞ্চুরিয়ন নিশ্চয়ই গত বছরের ইডেনে আইপিএলের মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচের কথা ওকে মনে করিয়ে দিয়েছে। এক ওভারে ৩০ রান দেওয়াটা বড় কথা নয়। তা হলে তো ক্রিকেটবিশ্বের সবচেয়ে জঘন্য বোলারের নাম হয় স্টুয়ার্ট ব্রড। কিন্তু রস টেলরকে তুমি কি না শর্ট করবে? পায়ের গোড়ায় ফেলবে? যেখানে তুমি দিন কয়েক আগেই টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলে এসেছ? বালাজির বোলিংয়ে আমি কোনও ভাবনা-চিন্তার ছাপ দেখিনি। টেলরের উইকেট ওর পড়ে পাওয়া। আমি আরও অবাক হলাম, উন্মুক্ত চাঁদের হাতে বালাজি মার খাচ্ছে দেখেও বোলারকে সে ভাবে পরামর্শ দিল না গম্ভীর। ও তো ছোট থেকে উন্মুক্তকে দেখছে। বালাজিকে ডেকে তো গৌতমের বলা উচিত ছিল, উন্মুক্তকে অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট করা বন্ধ করো। ও অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড সফর করে এসেছে। শর্ট করে ওকে আটকানো মুশকিল।
বলছি না, প্ল্যানিংয়েই গলদ ছিল এ দিন। যা মনে হচ্ছে, সেটা শুনলে নাইট সমর্থকদের মন খারাপই হবে। এই কেকেআরের কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা খুব কঠিন। বরং আইপিএলের কোনও টিমের উপর বাজি ধরতে গেলে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের উপরই ধরব।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ১৬০-৮ (উন্মুক্ত ৪০, টেলর ৩৬, নারিন ৩-২১, বালাজি ২-৬১)।
কলকাতা নাইট রাইডার্স ১০৮-৭ (মনোজ ৩৩, উমেশ ২-১৩, ইরফান ২-১৯)।

চড়াইয়ের মুখে কেকেআর
• প্রথম ম্যাচের পর লিগ টেবিলে সবার শেষে কেকেআর। গম্ভীরদের এখন পরের তিনটে ম্যাচের মধ্যে অন্তত দুটোতে জিততেই হবে।
• দুটো টিম গ্রুপ থেকে সেমিফাইনালে যাবে। যা অবস্থা, নেট রান রেটের বিচারে নাইটদের (-২.৬০০) থেকে অনেক এগিয়ে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস (২.৬০০) এবং টাইটানস (১.৯৫০)। সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নাইটদের প্রধান চ্যালেঞ্জার টাইটানস।
• সোমবার অকল্যান্ডকে হারাতে হবে। নেট রানরেটও বাড়িয়ে রাখতে হবে।
• গ্রুপের শেষ ম্যাচে টাইটানসের সঙ্গে জিততে হবে।

ছবি: এএফপি




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.