সন্তোষ কাশ্যপ শনিবার দুপুরে ক্লাবকে পদত্যাগপত্র মেল না করলে তাঁকে বিকেলে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেন মোহনবাগান কর্তারা। করিম বেঞ্চারিফা, স্ট্যানলি রোজারিও, স্টিভ ডার্বির ‘আদর্শ’ অনুসরণ করে মোহন-কোচ নিজেই সরে যাওয়ায়, নতুন কোচ ঠিক করতে অঞ্জন মিত্রদের আর কোনও বাধা থাকল না।
প্রয়াগ ইউনাইটেডের কাছে হারের পরের সকালে সন্তোষ অনুশীলন ডেকেছিলেন ওডাফাদের। শুক্রবার ম্যাচের পর সাংবাদিক সম্মেলনে সেটা জানিয়েও ছিলেন। কিন্তু যুবভারতীর ড্রেসিংরুমে ফেরার পরই মোহন-কোচের কাছে ফোন আসে কর্তাদের। নির্দেশ দেওয়া হয়, শনিবার অনুশীলন বন্ধ রাখতে। সন্তোষ তখনই বুঝে যান, ক্লাব আর তাঁকে চাইছে না। ম্যাচের পর ড্রেসিংরুমে ও বাইরে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় ওডাফা-টোলগেদের কোচকে। এ দিন সকালে সন্তোষ খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেন, কর্তারা কী চাইছেন। তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, নিজে থেকে পদত্যাগ না করলে সরিয়ে দেওয়া হবে। শর্ত মেনে সন্তোষ অভিযোগ করেননি। কর্তারাও পাল্টা কিছু বলেননি। |
মুখে কিছু না বললেও সন্তোষের বিরুদ্ধে টিম ম্যানেজমেন্টের প্রধান অভিযোগ, ওডাফাদের ‘মোটিভেট’ করতে না পারার। সঠিক দল বাছতে ব্যর্থতার। প্রয়াগ ম্যাচের আগের দিন সকালে কর্তারা সন্তোষকে অনুরোধ করেন, টিম যাতে না হারে সে জন্য রক্ষণ সংগঠন জোরদার করতে। কোচ গুরুত্ব দেননি। দলে প্রচুর চোট-আঘাত কেন তা নিয়ে ফিজিওকে কয়েক দিন আগে প্রশ্ন করেছিলেন কর্তারা। ফিজিও জোসেফ রোনাল্ড লিখিত ভাবে জানিয়ে দেন, তাঁকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সেটাও সন্তোষের ব্যাপারে কর্তাদের নেতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করেছে।
১৬ অক্টোবর মহমেডানের বিরুদ্ধে মোহনবাগানের এয়ারলাইন্স কাপ ফাইনাল। পুলিশ-সমস্যা থাকলেও ম্যাচ হবে ধরে নিয়েই রবিবার থেকে অনুশীলন শুরু করে দিচ্ছেন ফিজিও রোনাল্ড ও গোলকিপার কোচ হেমন্ত ডোরা। কর্তারা চাইছেন সোমবারের মধ্যেই নতুন কোচ ঠিক করতে। কিন্তু নতুন কোচ কে হবেন?
নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করলেও মুখে কুলুপ কর্তাদের। তাঁদের মূল সমস্যা, ফেডারেশনের নির্ধারিত ‘এ’ লাইসেন্সের নিয়ম। এমনিতেই দেশে ‘এ’ লাইসেন্সধারী কোচ কম। স্ট্যানলি, সন্তোষের মতো যাঁদের ‘এ’ লাইসেন্স আছে তাঁদের আবার বড় দল চালানোর অভিজ্ঞতা নেই। ফলে বিদেশি কোচের দিকেই ঝুঁকে কর্তারা। স্বদেশি কোচের মধ্যে সুব্রত ভট্টাচার্যের নাম যে উঠছে না তা নয়। কিন্তু সমস্যা হল, সুব্রতকে কোচ করতে গেলে গত বারের প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো একজন ‘এ’ লাইসেন্সধারী কোচ নিতে হবে। কর্তারা তাই চেষ্টা চালাচ্ছেন ‘এ’ লাইসেন্স বা সমতুল্য ডিগ্রিধারী পরিচিত বিদেশি কোচ আনার। সেখানে বহু নাম ঘোরাফেরা করছে। ডেভিড বুথ, আর্থার পাপাস, করিম বেঞ্চারিফাঅনেক নাম। এঁদের মধ্যে মহীন্দ্রাকে আই লিগ জেতানো বুথ কর্তাদের তালিকায় শীর্ষে আছেন। বুথ এখন কম্বোডিয়ার জাতীয় লিগ চ্যাম্পিয়ন ক্লাব নম পেনে কোচিং করাচ্ছেন। তিনি কি সেই চাকরি ছেড়ে আসবেন? সেটাই বড় প্রশ্ন। ক্লাব সূত্রের খবর, করিম ইঙ্গিত দিয়েছেন সালগাওকরের চুক্তি ইচ্ছে করলে ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারেন। যদিও গোয়ার ক্লাবটির কর্তারা জানাচ্ছেন, সেটা সম্ভব নয়। |