|
|
|
|
সুর চড়াচ্ছেন কেজরিওয়ালরা |
কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়িয়ে দুর্নীতি-কাঁটায় বিদ্ধ খুরশিদ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
আরও একটা দুর্নীতির অভিযোগ এবং আরও এক দফা অস্বস্তির বোঝা। সব মিলিয়ে দুর্নীতির ভূত যেন কোনও ভাবেই পিছু ছাড়ছে না কংগ্রেসের।
সনিয়া গাঁধীর জামাতা রবার্ট বঢরা বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থিতিয়ে আসার আগেই তালিকায় নয়া সংযোজন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ ও তাঁর স্ত্রী তথা ফারুকাবাদের প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক লুই খুরশিদ। সিএজি-র খসড়া রিপোর্টে অভিযোগ, প্রতিবন্ধী কল্যাণের জন্য কেন্দ্রের অনুদানের বহু লক্ষ টাকা সলমন-লুই পরিচালিত ট্রাস্ট ঠিক মতো ব্যবহার করেনি। ট্রাস্টের অ্যাকাউন্টে অনিয়মের সঙ্গে সঙ্গে গোদের উপর বিষফোড়ার মতো একটি টিভি চ্যানেলের স্টিং অপারেশনে এমন অভিযোগও উঠেছে যে, কেন্দ্রের থেকে অনুদান পাওয়ার জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকারের এক আমলার সই জাল করা হয়েছিল।
অণ্ণা হজারে ও কেজরিওয়ালদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস যাঁদের সেনাপতি করেছিল, তাদের অন্যতম খুরশিদ। এখন সেই সেনাপতির গায়েই দুর্নীতির তির বেঁধার উপক্রম হওয়ায় যথেষ্ট বিপাকে তারা। তবে সলমন ও তাঁর স্ত্রী যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করার পাশাপাশি বেসরকারি চ্যানেলটির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার কথা জানিয়েছেন। অরবিন্দ কেজরিওয়াল-প্রশান্ত ভূষণরা সিএজি-র খসড়া রিপোর্টটি হাতে নিয়ে ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নেমে পড়েছেন। গত কাল প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে গ্রেফতার হন কেজরিওয়ালরা। আজ ফের তাঁরা সংসদ মার্গে ধর্না দেন। কেজরিওয়ালের দাবি, “খুরশিদকে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। যত দিন না প্রধানমন্ত্রী তা করছেন ততদিন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে।” খুরশিদকে সস্ত্রীক গ্রেফতারের দাবিও করেন তিনি।
সিএজি-র খসড়া রিপোর্টটি ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়ে গিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ২০০৯-২০১০ আর্থিক বছরে উত্তরপ্রদেশের ১৭টি জেলায় প্রতিবন্ধী কল্যাণে খুরশিদ ও তাঁর স্ত্রী পরিচালিত ট্রাস্টকে কেন্দ্র ৭১.৫ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছিল। ওই টাকা দিয়ে প্রতিটি জেলায় প্রতিবন্ধী কল্যাণের জন্য শিবির করার কথা ছিল। কিন্তু শিবিরের আয়োজন না করেই সলমনদের ট্রাস্ট ভুয়ো রিপোর্ট সরকারের কাছে পেশ করেছে। সিএজি-র মতে, এই অনিয়মের কারণে সংশ্লিষ্ট ট্রাস্টের থেকে ওই অর্থ সুদ-সহ ফেরত পাওয়া উচিত কেন্দ্রের। কিন্তু সে পথে না হেঁটে কেন্দ্র পরের আর্থিক বছরে ওই ট্রাস্টকে আরও ৬৪ লক্ষ টাকা দিয়েছে। অভিযোগ, ওই টাকা পাওয়ার জন্য এক আমলার সই জাল করা হয়েছিল। বেসরকারি চ্যানেলের স্টিং অপারেশনেও লুকনো ক্যামেরায় খুরশিদদের ট্রাস্ট নিয়ে বিস্তর অভিযোগ উঠে আসার পাশাপাশি জানা গিয়েছে উত্তরপ্রদেশের এক আমলার বক্তব্যও। যেখানে তিনি বলেছেন, ওই ট্রাস্ট খুরশিদের পরিচালিত না হলে তাদের অনেক আগেই ‘ব্ল্যাক লিস্টেড’ করা হত।
সলমন খুরশিদ এখন বিদেশে রয়েছেন। তাই আত্মপক্ষ সমর্থনে নেমেছেন লুই। তিনি বলেন, “সিএজি কোনও রিপোর্ট দেয়নি। মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে।” লুই আরও জানান, সিএজি তাঁর বক্তব্য এখনও শোনেনি। সোমবার সিএজি-র সঙ্গে দেখা করে তিনি তাঁর তরফের ব্যাখ্যা দেবেন।
দ্বিতীয় ইউপিএ জমানার শুরুর দিকে কংগ্রেস যেমন নিজের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠামাত্রই ব্যবস্থা নিচ্ছিল, এখন সেই কৌশল থেকে পিছিয়ে এসেছে। কারণ, তাতে কংগ্রেসই আরও কোণঠাসা হচ্ছিল। তবে রবার্ট বঢ়রার বিরুদ্ধে অভিযোগের মোকাবিলায় কংগ্রেস যেমন সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়েছিল, এ ক্ষেত্রে তা করেনি। কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি অবশ্য এ দিন বলেন, “কেবল অভিযোগের ভিত্তিতে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। যে রিপোর্ট নিয়ে হইচই হচ্ছে ,তা প্রকৃত সিএজি রিপোর্ট নয়।” |
|
|
|
|
|