অবশেষে দিনের আলো দেখতে চলেছে উত্তর কলকাতার বনহুগলিতে উদ্বাস্তুদের জন্য পরিকল্পিত আবাসন প্রকল্প। বেসরকারি লগ্নিতে খাস কলকাতায় উদ্বাস্তুদের জন্য আবাসন প্রকল্পের পরিকল্পনায় ছাড়পত্র দিল রাজ্য সরকার। সংশ্লিষ্ট দফতরের দাবি, এই প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়িত করতে নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ডিসেম্বর মাসে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
বিগত সরকারের আমলেই পুনর্বাসনের প্রকল্পের চেনা ছক ছেড়ে বেসরকারি লগ্নির দিকে হাত বাড়িয়েছিল রাজ্য। বনহুগলিতে ১৯৫০ সাল থেকে বাস করছেন ওপার বাংলার ছিন্নমূল ৮০০টি পরিবার। সরকারি অর্থে তৈরি মাথার ছাদ বহুদিন আগেই বেহাল। খাস কলকাতায় বি টি রোডের উপরে উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরের প্রায় ১৮ একর জমিতে বেসরকারি বিনিয়োগে আবাসন তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
এর পরে ছ’বছর কেটে গিয়েছে। সরকারি লালফিতের ফাঁসে আটকে যায় প্রকল্পের কাজ। পাশাপাশি ভাঙাচোরা বাড়ির মায়া কাটিয়ে অন্যত্র সরে যেতে আপত্তি জানান কিছু আবাসিকও। ১৬৬টি পরিবার ১০ লক্ষ করে টাকা ক্ষতিপূরণ নিয়ে সরে যায়। কিন্তু অধিকাংশ আবাসিকই পুরনো জায়গা ছাড়তে চাননি।
এ বার সেই সব সমস্যার সমাধানসূত্র পাওয়া গিয়েছে বলে জানান উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরের মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন এই প্রকল্প দ্রুত শেষ করতে। সেই অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ বা ফ্ল্যাট নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে।” মাস দুয়েক আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রকল্প সবুজ সঙ্কেত পায় বলে জানান তিনি।
সরকারি সূত্রের খবর, প্রকল্পের নকশা আগেই অনুমোদন পেয়েছে। প্রায় ৫০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে উদ্বাস্তুদের জন্য ৮০০ ফ্ল্যাট তৈরি হবে। ৬৫০ বর্গ ফুটের সেই ফ্ল্যাট নিতে রাজি না-হলে দেওয়া হবে এককালীন ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১১ লক্ষ টাকা। আর যে-সব আবাসিক অন্যত্র ভাড়া নিয়ে থাকবেন, তাঁদের প্রতি মাসে ২৫০০ টাকা দেবে নির্মাণ সংস্থা। উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরের দাবি, ফ্ল্যাট তৈরি করতে দু’বছরের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই জমির জন্য বিগত সরকারের আমলে রাজ্য পেয়েছে ২১.৩৬ কোটি টাকা। উদ্বাস্তুদের জন্য আবাসন তৈরির পরে বাকি জমিতে তৈরি হবে বেশি দামের ২৫টি ১৬ তলা উঁচু বহুতল। গোটা প্রকল্পের আর্থিক লাভ তুলতে বেসরকারি সংস্থা বাজার দরেই বিক্রি করবে বিলাসবহুল ওই ফ্ল্যাটগুলি। |