সঙ্কটের মুহূর্তে বিশ্বব্যাঙ্ক যদি সদস্য রাষ্ট্রগুলির অর্থসঙ্কট মেটাতে তাদের পাশে দাঁড়াতে না-পারে, তা হলে সেটা হবে চরম ‘বিপর্যয়’। ভারতের অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম আজ এখানে এই উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, বিশ্বব্যাঙ্কের মূলধনে টান পড়ায় এই মুহূর্তে তারা সে ভাবে বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রয়োজন মেটাতে অপারগ।
বিশ্বব্যাঙ্ক-আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার (আই এম এফ)-এর বার্ষিক বৈঠক উপলক্ষে এখানে এসে চিদম্বরম বিশ্বব্যাঙ্কের প্রশংসা করে বলেন, ২০০৮-’০৯ সালের আর্থিক মন্দার সময়ে মূলধন জোগানোয় প্রশংসনীয় ভূমিকা নিয়েছিল বিশ্বব্যাঙ্ক। কিন্তু হালে তাদের আর্থিক অবস্থার এতটাই অবনতি হয়েছে যে, তাদেরও হাত-পা বাঁধা বলে বিশ্বব্যাঙ্কের উন্নয়ন কমিটির বৈঠকে মন্তব্য করেন চিদম্বরম।
তিনি বলেছেন, বিশ্বব্যাঙ্ক যে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে, তাতে সন্দেহ নেই। তবে উন্নয়নশীল দুনিয়ার সামনেও তুলে ধরতে হবে সব তথ্য। চিদম্বরম জানান, সাধারণ সময়েই দীর্ঘ মেযাদি ঋণদানে বিশ্বব্যাঙ্কের মতো বহুদেশীয় ঝণদাতা সংস্থার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তার উপর এই সঙ্কটের মুহূর্তে পরিকাঠামো প্রকল্প হাতে নেওয়ার জন্য এ ধরনের ঋণের প্রয়োজন আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তার কারণ এই খাতে বেসরকারি পুঁজির জোগান ইতিমধ্যেই কমেছে। অথচ এ ক্ষেত্রে লগ্নি না বাড়লে আর্থিক বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান ব্যাহত হবে। সঙ্কটের মোকাবিলা বিশ্বব্যাঙ্ক কী ভাবে করতে পারে, সেটাই এখন দেখার।
ভারতের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক আর্থিক কমিটির বৈঠকে চিদম্বরম কবুল করেন, চড়া পণ্যমূল্যই এখনও উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা। এর জন্য বিশ্ব বাজারে খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির সমস্যাকেই দায়ী করেন তিনি।
আইএমএফে কোটা নিয়ে। আইএমএফে ভারতের মতো উন্নয়শীল দেশের প্রতিনিধিত্ব বা কোটা বাড়ানো প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন চিদম্বরম। বিশ্ব অর্থনীতির বাস্তব চিত্র মাথায় রেখেই ‘ক্ষমতা’র এই নতুন বিন্যাসের সূত্র নিয়ে পর্যালোচনা ২০১৩-র জানুয়ারির সময়সীমার মধ্যে সেরে ফেলার কথা। তবে ক্ষমতা বৃদ্ধি ও তার সঙ্গে ভোটদানের অধিকার বাড়লে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে যে আগের তুলনায় অনেক বেশি দায়িত্ব নিতে হবে, তাও স্পষ্ট করেছেন তিনি। ভারতের অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ওই সূত্র চূড়ান্ত করে ফেলা। যাতে ২০১৪ সালের মধ্যে পুরো বিষয়টির পর্যালোচনা সেরে ফেলা যায়।” |