ট্রাকের ধাক্কায় এক কিশোরের মৃত্যুর জেরে অবরোধ, আগুন লাগানো, লাঠিচার্জে অশান্ত হল দুর্গাপুরের সগড়ভাঙা। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃতের নাম রাহুল মিশ্র (১৪)। বাড়ি দিল্লিতে। দিন পনেরো আগে সগড়ভাঙায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল সে। ট্রাকের চালক পালালেও খালাসিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় একটি স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখতে যাচ্ছিল রাহুল। তেঁতুলতলার কাছে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাকে ধাক্কা মারে। |
গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হলেও রাস্তাতেই তার মৃত্যু হয়। ইতিমধ্যে মোটরবাইক নিয়ে এলাকার কয়েক জন ট্রাকটির পিছু ধাওয়া করে সেটিকে ধরে ফেলেন। বেগতিক বুঝে চালক নেমে পালায়। তাকে ধরতে না পারলেও খালাসিকে দিয়ে ট্রাকটিকে ফিরিয়ে আনা হয়। খালাসিকে এলাকার একটি ক্লাবঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে।
এ দিকে, রাহুলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেই আশপাশের কয়েকটি স্কুলের বেশ কিছু ছাত্র এসে লাঠি, ব্যাট, রড নিয়ে ট্রাক ভাঙচুর শুরু করে। ট্রাকে থাকা লোহার সামগ্রী ফেলে দিয়ে রাস্তায় বসে পড়ে অবরোধ করে ছাত্রেরা। এলাকার বেশ কিছু লোকজন আপত্তি করলেও তারা তা কানে তোলেনি। |
উল্টে পুলিশের সামনেই ট্রাকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। খালাসির খোঁজে কয়েক জন ক্লাবেও চড়াও হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধায় তারা নিরস্ত হয়। দমকলের একটি ইঞ্জিন আগুন নেভাতে এলে সেটিকেও বাধা দেওয়া হয়েছিল। এই সময়েই র্যাফ এসে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করলে ছেলেগুলি পালাতে থাকে। কয়েক জন লাঠির বাড়িও খায়। পরে ক্রেন নিয়ে এসে পুলিশ ট্রাকটিকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে।
|
ছবিটি তুলেছেন বিকাশ মশান। |
ট্রেন থেকে ফেলে ছাত্রী খুনের নালিশ
নিজস্ব সংবাদদাতা • কালনা |
প্রেম-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে বর্ধমানের কালীনগর স্টেশনের কাছে ঘটনাটি ঘটে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মেয়েটি মারা যায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃতার নাম সুজয়া বসাক (১৭)। বাড়ি বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে নসরতপুরের মধ্যপাড়ায়। সমুদ্রগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল সে। তার পরিবারের অভিযোগ, গত সাত মাস ধরে গ্রামেরই যুবক সন্তু বসাক তাকে উত্ত্যক্ত করছিল। নাদনঘাটে সন্তুর মোবাইল সারানোর দোকান আছে। সুজয়া বারবার আপত্তি জানালেও সে নিরস্ত হয়নি। এ দিন সকালে নদিয়ার নবদ্বীপ থেকে টিউশন পড়ে তিন বান্ধবীর সঙ্গে ফিরছিল সুজয়া। সন্তুও সেই কামরায় ওঠে। তর্কাতর্কির পরে সে-ই ট্রেন থেকে সুজয়াকে ঠেলে ফেলে দেয় বলে তার বন্ধুরা বাড়ির লোকজনকে জানিয়েছে। টেলিফোনে খবর পেয়ে সুজয়ার পরিজনেরা গিয়ে কালীনগর স্টেশন থেকে রেললাইন ধরে হেঁটে গিয়ে এক জায়গায় তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। কালনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। কিন্তু রেলের তরফে খবর না আসায় রেলপুলিশ প্রথমে অভিযোগ নিতে চায়নি। সন্ধ্যায় তৃণমূল এবং টিএমসিপি সমর্থকেরা কালনা জিআরপি অফিসে মৃতদেহ রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। শেষে রাত ১০টা নাগাদ রেলপুলিশ খুনের অভিযোগ নেয়। সন্তুর বাবা, কাকা ও জ্যাঠার বিরুদ্ধেও ঘটনায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে অনেক রাত পর্যন্ত কেউই গ্রেফতার হয়নি। |