এ মাসটাও বাদ গেল না। কর্মচারীদের বেতন, বোনাস, অগ্রিমের টাকা মেটাতে পুজোর মাসেও দু’হাজার কোটি টাকা বাজার থেকে ঋণ নিচ্ছে অর্থ দফতর। আজ শনিবার, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করতে চলেছে।
অর্থ দফতর সূত্রের খবর, অক্টোবর মাসের এই দু’হাজার কোটি টাকা ধরে গত ছ’মাসে রাজ্যের ঋণের পরিমাণ দাঁড়াল ১২ হাজার কোটি টাকা।
সব মিলিয়ে রাজ্য এ বছর মোট ২০ হাজার কোটি টাকা বাজার থেকে ঋণ নিতে পারবে। কিন্তু প্রথম সাত মাসেই ১২ হাজার কোটি টাকা ধার নেওয়া হয়ে গেল। ফলে বাকি পাঁচ মাসে ৮ হাজার কোটি টাকায় কী ভাবে চালানো সম্ভব হবে, তা নিয়ে চিন্তিত অর্থ দফতরের কর্তারা।
দফতরের এক কর্তার কথায়, প্রতি বছর পুজোর মাসে বাড়তি খরচ হয়। কর্মচারীদের অগ্রিম-বোনাস যেমন দিতে হয় তেমনই ঠিকাদারদের বড় অংশকে এই মাসে বকেয়া মেটাতে হয়। ঠিক একই ভাবে আর্থিক
বছরের শেষ তিন মাসে বকেয়া মেটানোর চাপ সবচেয়ে বেশি থাকে। সারা বছরের ঋণের কোটার সিংহভাগ টাকা সেই কারণেই বাঁচিয়ে রাখতে চায় প্রতিটি সরকার। কিন্তু এখানে এখনই যা অবস্থা, তাতে শেষ ক’টা মাস কী ভাবে চলবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে বছরের শেষের দিকে রাজস্ব আদায় বাড়ে। আপাতত সেটাকেই আশার আলো বলে মনে করেছেন দফতরের একাংশ।
এমনিতে রাজ্যের নিজস্ব আয় বাড়ছে বলে সরকারের দাবি। ভ্যাট, আবগারি শুল্ক, চুঙ্গি কর, স্ট্যাম্প ডিউটি সবই বেড়েছে। তা সত্ত্বেও ধার করে দৈনন্দিন খরচ চালাতে হচ্ছে কেন? প্রতি মাসে বেতন দিতেই বা কেন টাকা ধার করতে হচ্ছে? অর্থ দফতরের কর্তারা জানান, রোজগার যেমন বাড়ছে তেমনই পাল্লা দিয়ে খরচও বাড়ছে। পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতে বহু দফতর বাজেট বরাদ্দের চেয়েও বেশি খরচ করে ফেলেছে। প্রতি মাসেই আয়ের চেয়ে ব্যয় হচ্ছে বেশি। বিভিন্ন দফতর যে সংশোধিত বাজেট প্রস্তাব পেশ করছে, তা দেখেও চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়। এত টাকা কোথা থেকে আসবে? বেহিসেবি খরচ সামাল দিতে অতএব ঋণ নেওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই অর্থ দফতরের। |