রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানা শুরু হওয়ার পরে এই প্রথম একটি উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশ হতে চলেছে, যেখানে তৃণমূল লড়াইয়ে নেই! তবে সরাসরি লড়াইয়ের ময়দানে না-থাকলে কী হয়, তৃণমূলও তাকিয়ে আছে আজ, শনিবার জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের ফলের দিকে। কেন্দ্রের ইউপিএ সরকার থেকে মমতা সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরে কংগ্রেস রাজ্যের একটি কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রত্যক্ষ সাহায্য ছাড়া কেমন ফল করে, তার উত্তর দু’দলের কাছেই জরুরি। আবার সিপিএম দেখতে চাইছে, রাজ্য জুড়ে প্রবল কেন্দ্র-বিরোধী রাজনৈতিক তৎপরতার মধ্যে জঙ্গিপুরে তাদের ভাগ্যে ভাল কিছু ঘটে কি না!
মোট ১২ লক্ষেরও বেশি ভোটারসম্পন্ন জঙ্গিপুরে উপনির্বাচন হয়েছিল বুধবার। ভোটদানের হার ছিল ৬০%-এর বেশি। বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে ভোট হওয়ায় আজ, শনিবার দুপুরের মধ্যেই ফল স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা। কংগ্রেস প্রার্থী, রাষ্ট্রপতি-পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় এবং সিপিএম প্রার্থী, লোকশিল্পী সঙ্ঘের মোজাফ্ফর হোসেন, দু’জনেই জয়ের ব্যাপারে নিজেরা আশাবাদী বলে বিবৃতি দিচ্ছেন। অঙ্কের হিসাব বলছে, ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে জঙ্গিপুর থেকে প্রণববাবু জিতেছিলেন ১ লক্ষ ২৮ হাজার ২৫২ ভোটে। তার পরে ২০১১-র বিধানসভা নির্বাচনে জঙ্গিপুরের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ছ’টিতে বামেরা পিছিয়েছিল নোট ৬৯ হাজার ১৩ ভোটে। এই ৬টির মধ্যে সাগরদিঘিতে তৃণমূল সাড়ে চার হাজার ভোটে জেতে, বাকি ৫টিতে কংগ্রেস। আর নবগ্রাম যায় সিপিএমের দখলে। ওই দু’বারের ভোটেই বামেদের লড়তে হয়েছিল কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের বিরুদ্ধে। এ বার ছবিটা একটু অন্য। সৌজন্য দেখিয়ে রাষ্ট্রপতি-পুত্রের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেননি মমতা।
মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসের সংগঠন অবশ্য বরাবরই শক্তিশালী। তবে সিপিএম শিবিরের হিসাবে, তৃণমূলের ভোট কোন দিকে যাবে, তার উপরে উপনির্বাচনের ফলাফল খানিকটা নির্ভর করছে। জঙ্গিপুরে এ বার বিজেপি এবং অন্য দু’টি ছোট দলের দু’জন প্রার্থীও রয়েছেন। কংগ্রেস আসন ধরে রাখলে অধীর চৌধুরী বলতে পারবেন, মমতার সাহায্য ছাড়াই তাঁরা নিজেদের দুর্গ ধরে রাখতে জানেন। আর পরিস্থিতির ফেরে বামেদের কপাল ফিরলে কংগ্রেস-তৃণমূল সংঘাতে নতুন মাত্রা যোগ হওয়ার অপেক্ষায় থাকবে রাজনৈতিক শিবির। |