চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সত্যিকারের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইগুলো শুরু হচ্ছে আজ, শনিবার থেকে। আর প্রথম দিনেই মুখোমুখি আইপিএলের দুই বড় দল কলকাতা নাইট রাইডার্স আর দিল্লি ডেয়ারডেভিলস।
গত আইপিএলের প্লে অফে বীরেন্দ্র সহবাগের দিল্লিকে হারিয়েই ফাইনালে উঠেছিল গৌতম গম্ভীরের কলকাতা। তবে এ বারের ব্যাপারটা একেবারে আলাদা। কারণ, মরসুম শুরুর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাণবন্ত পিচ। ২২ গজের ফালি জমিতে সবুজ ঘাসও দেখা যাচ্ছে ভালই। যে ক’টা ম্যাচ এখনও পর্যন্ত হল সেগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে পেসাররাই দাপট দেখাবে এই টুর্নামেন্টে। এই পিচগুলো কিন্তু পরীক্ষা নেবে স্পিনারদের। সুনীল নারিনের মতো স্পিনারকে ব্যাটসম্যানের উপর রাজ করতে আরও চালাকির আশ্রয় নিতে হবে। স্ট্রোক প্লেয়ারদের জন্য আবার এ ধরণের উইকেট বেশ ভাল। বল ভাল ব্যাটে আসবে। শট নেওয়াও সহজ হবে।
যে কোনও দলের কাছেই টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। সে ক্ষেত্রে টসও জরুরি। মূলপর্বের যোগ্যতা অর্জনের ম্যাচগুলো দেখলে যে কেউ সেটা বুঝতে পারবে। ব্যাপারটা খানিকটা এই রকম-- টস জেতো, বিপক্ষকে ব্যাট করতে পাঠাও। আর পেস-আক্রমণের কড়াইতে সেঁকে ফেলো। এখানেই সবচেয়ে গুরুত্ব পাবে দু’দলের ওপেনাররা। তাদের হাত ধরেই ইনিংসের শুরুটা ভাল হতে পারে। সহবাগ নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়ে নিশ্চয় ব্যাটিংয়ে বেশি মন দিয়েছে। আইপিএলে অধিনায়কত্ব করা কখনও কখনও বেশ কঠিন!
তবে দুই টিমের দুই ওপেনারের মধ্যে একটাই মিল দু’জনেই এই মুহূর্তে ফর্মে নেই। দু’জনেই চাইবে নিজেদের ব্যাটিংয়ের চেনা ছন্দটা ফিরে পেতে। দীর্ঘ দিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে ওরা। ভাল করেই জানে, দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশন কিন্তু পরীক্ষা নেবে দু’জনেরই। বিদেশের মাঠে গৌতমের টেকনিক নিয়ে অনেক সময়ই সমালোচনা হয়েছে। ওর সামনে সুযোগ থাকছে তার জবাব দেওয়ার। আমি বিশ্বাস করি, বীরু আর গৌতম নিজেদের ফর্ম ফিরে পেতে এই টুর্নামেন্টকেই কাজে লাগাবে। সামনে যে আরও বড় সিরিজ দেশের মাঠে ইংল্যান্ডের মহড়া।
পেস বোলিংই যেখানে হতে চলেছে প্রধান অস্ত্র, সেখানে আমার মতে ডেয়ারডেভিলসরা নাইটদের থেকে এক ধাপ এগিয়ে। ইরফান পাঠানের সুইং ওখানকার পিচে বাউন্সের সাহায্য পাবে। তাতে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে। তার সঙ্গে থাকছে মর্নি মর্কেল আর উমেশ যাদবের পেস। কেকেআর-এর পেসারদের সম্বল অভিজ্ঞতা। ব্রেট লি, বালাজি, কালিস, প্রদীপ সাঙ্গওয়ানরা সবাই অভিজ্ঞ। কলকাতার দলটায় প্রচুর স্পিনার। এটাই দেখার গৌতম কী ভাবে তাদের এই কন্ডিশনে ব্যবহার করে। অতিরিক্ত পেসার হিসেবে সামি আমেদকে খেলাতে পারত। সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চোট।
ব্যাটিংয়েও সহবাগের দলে অনেক বৈচিত্র্য সদ্য অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপ জেতানো উন্মুক্ত চাঁদ, ডেভিড ওয়ার্নার, পিটারসেন, জয়বর্ধনে, রস টেলর, তার পরও নমন ওঝা-ইরফানরা থাকছে। কেকেআরের টিমে এক জন ব্যাটসম্যানের কাছে এই টুর্নামেন্টের গুরুত্ব বিশাল। ইউসুফ পাঠান। ও যদি ওর তূণ থেকে মারণাস্ত্রগুলো বের করে আনতে পারে তা হলে নিজের ক্রিকেট-জীবনের মোড় ঘোরাতে পারে।
তবে টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে মজার দিকটা হল, সব কিছুই নির্ভর করে ম্যাচের দিনটার উপর। কার কত শক্তি এই সব আলোচনার তখন কোনও গুরুত্ব থাকে না। ফলে শনিবার যে টিম ঝলসে উঠবে, তারাই জিতবে। |