যদি জিজ্ঞাসা করেন, আমাদের এই আফ্রিকান সাফারিতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ভাল লাগল কী, তা হলে বলব, এখানকার শান্তশিষ্ট প্রেস কনফারেন্স। দেশে আমাদের কোনও কোনও সাংবাদিক বৈঠকে তো রীতিমতো যুদ্ধ হয়। আমরা কেউ মাইক্রোফোনের সামনে বসলেই ফোটোগ্রাফাররা স্টেনগানের মতো ক্যামেরার শাটার টেপা শুরু করেন। সেকেন্ডে ১০০ ফ্রেম তুলতে পারলেই ওদের শান্তি। এখানে সম্পূর্ণ উল্টো ছবি। সাংবাদিক বৈঠকে বসে মনে হল কোনও গজল কনসার্টে বসে আছি।
তবে, আমি নিশ্চিত, মাঠে নেমে এমন অনুভূতি হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। সেঞ্চুরিয়নে শনিবার হাই ভোল্টেজ লড়াই অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। সেজন্য আমরা তৈরি। |
নাইট অধিনায়কের দুশ্চিন্তা, নাইট অধিনায়কের ভরসা |
|
|
ডেয়ারডেভিলসদের প্র্যাক্টিসে মর্নি মর্কেল। |
গম্ভীরের সঙ্গে কালিস ও পাঠান। |
|
সেই চেনা টেনশন, চাপা উত্তেজনা ফিরে এসেছে সবার মধ্যে। বিদ্যাটা আলাদা করে শিখতে হয়নি, দেখে দেখেই ঠিক রপ্ত করে ফেলেছি। সতীর্থদের শরীরের ভাষা পড়েই বুঝতে পারি, কার মনে কী চলছে। লক্ষ্য করলাম, ব্রেকফাস্ট টেবলে ব্রেন্ডন ম্যাকালামকে বসে বসেই কেমন সামনে-পিছনে বা পাশাপাশি হেলতে-দুলতে দেখা যাচ্ছে। খেতে খেতেই ও বোধহয় মর্নি মর্কেলের বাউন্সার এড়ানোর দৃশ্য কল্পনা করে। আমার স্ত্রী নাতাশার ধারণা, ও মশা-মাছি তাড়ানোর জন্য এ রকম করে থাকে। আমার কিন্তু তা মনে হয় না। বরং আমার ধারণা, দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিধ্বংসী বোলারকে সামলানোর ছবিই ওর সামনে ভেসে উঠছে সব সময়।
বালাজির কথাই ধরুন। যেভাবে ও সবুজ আপেলটাকে ধরে, তাতে মনে হয় এক্ষুনি ওটা দিয়ে একটা স্লোয়ার ডেলিভারি ছাড়বে। সেঞ্চুরিয়নের উইকেট কেমন হবে জানি না, তাই বালাজিও স্লো ডেলিভারি দেবে কি না, তাও জানা নেই। তবে এটা নিশ্চিত যে, ওরও প্রায় ম্যাকালামের মতোই অবস্থা। বালা কেমন বল করল, তা না হয় পরের লেখাতেই আপনাদের জানাব।
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটকে আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে গুলে খেয়েছে, সে জাক কালিস ছাড়া আর কে হতে পারে? এখানকার সব কিছু ওর হাতের মুঠোয়। ওর সঙ্গে কথা বললে বুঝতে পারবেন, জাক কেন চলমান ‘এনসাইক্লোপিডিয়া’। ‘স্টান্স’ থেকে ‘ফলো থ্রু’, কালিসের কাছে সব কিছুর নিখুঁত ব্যাখ্যা ও যুক্তি আছে। আমাদের তরুণ ব্যাটসম্যানরা ওর কাছ থেকে যে কত কিছু শিখতে পারে, তার কোনও সীমা নেই। ব্যাটিং-এর টেকনিক নিয়ে এত ভাল আলোচনা আর মাত্র দু’জনের মুখেই শোনা যায়, রাহুল দ্রাবিড় ও সচিন তেন্ডুলকর। ব্যাটিংয়ের ঈশ্বর বলে যদি কেউ থেকে থাকেন, তা হলে নিশ্চয়ই ওরা তাঁকে দেখেছে। |
|
ওরা সমানে আইপিএল
সেমিফাইনালের ক্লিপিংস
দেখিয়ে যাচ্ছে। উত্তেজনা তুঙ্গে।
অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। ইনশাল্লাহ, সিএল
টি টোয়েন্টি ম্যাচেও থাকতে চাই আমি।
টুইটারে শাহরুখ খান |
|
আমাদের ব্যাটিং নিয়ে যদি জানতে চান, তা হলে বলব, মূলত কালিস, আমি, ব্রেন্ডন, মনোজ ও সাকিবকেই আমাদের ব্যাটিংয়ের হাল ধরতে হবে। ইউসুফকে ওর নিজের মতোই ব্যাট করার স্বাধীনতা দিতে হবে। ও এমন একজন ব্যাটসম্যান, যে তার সেরা দিনে যে কোনও আক্রমণকে লন্ডভন্ড করে দিতে পারে। ওর শুধু দরকার আত্মবিশ্বাস, যা আমরা ওকে সমানে জোগানোর চেষ্টা করে চলেছি।
আমার পুরনো দল দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের সঙ্গে লড়াইটা যে আসলে আমাদের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে ওদের বোলারদের, এই নিয়ে আর বেশি বলার কী আছে? মর্নি মর্কেল, ইরফান পাঠান ও উমেশ যাদব যে বেশ কড়া চ্যালেঞ্জ, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। চ্যালেঞ্জটা উপভোগ করার মতোও। উইকেট দেখিনি। ব্যাপারটা নিয়ে কখনও খুব একটা ভাবিও না। তবে যা শুনেছি, তাতে এই উইকেটে সবারই সমান সুবিধা পাওয়ার কথা। দেখা যাক, উইকেট সত্যিই কতটা সাহায্য করতে পারে আমাদের। |