দুই শিল্পী ছাত্রের হাতেই সাজছে নীলনদের দেশ
হিসেব নেই দিন-রাতের। ফুরসত নেই দমটুকুও ফেলার। পুজো যে দোরগড়ায়। তাই অক্লান্ত খেটে চলেছেন দুই ছাত্র। ওঁদের হাতের ছোঁয়াতেই প্রাণ পাচ্ছে এক টুকরো মিশর।
মেদিনীপুর আর্ট কলেজের দুই ছাত্র হিরণ্ময় পট্টনায়েক ও প্রসেনজিৎ রাণার কাঁধে ভর দিয়েই গড় উঠছে মিশরীয় সভ্যতার অনুকরণে ইজিপ্টের আবু সিম্বলের মন্দির। মেদিনীপুর শহরের বিধাননগর (পূর্ব) সর্বজনীন দুর্গোৎসবের পুজো মণ্ডপ এভাবেই সাজছে এ বার। পুজোর এ বার ২য় বর্ষ। স্থানীয় বিবেকানন্দ ক্লাব ও নাগরিকবৃন্দের উদ্যোগে গত বছর মঙ্গলঘটের আদলে মণ্ডপ দিয়ে শুরু হয়েছিল পুজো। এ বার সেখানে আবু সিম্বলের মন্দির। পুজো কমিটির সম্পাদক চম্পক দত্ত বলেন, “নতুন কিছু তুলে ধরতে চাই। সেই থেকেই এই পরিকল্পনা। আশা করি, এ বারের থিমও দর্শকদের ভালো লাগবে।”
সৃজন-মগ্ন। হিরণ্ময় ও প্রসেনজিতের ছবি তুলেছেন রামপ্রসাদ সাউ।
হিরন্ময়, প্রসেনজিৎ দু’জনেই এ বছরই মেদিনীপুর আর্ট কলেজ থেকে পাশ করেছেন। নিজস্ব ভাবনায় মণ্ডপ তৈরির কাজ করার ইচ্ছে তাঁদের বরাবরই ছিলই। কয়েক মাস আগে সেই ইচ্ছেতেই ডানা জুড়ে দেন শহরের এক পুজো কমিটি। যোগাযোগের পরে আর পিছনে তাকানো নয়, মণ্ডপ তৈরির কাজ করতে রাজি হয়ে যান ওই দুই ছাত্র। দু’জনেই আগে মণ্ডপ তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন। শিক্ষকের নির্দেশ মতো কাজও করেছেন। তবে এ বারটা বেশ আলাদা। নিজেরাই শিক্ষকের ভূমিকায়। হিরন্ময় বলেন, “একেবারে নতুন অভিজ্ঞতা। একটু টেনশনও হচ্ছে। আগে মণ্ডপ তৈরির কাজে সহযোগিতা করেছি। তবে এ ভাবে সরাসরি মণ্ডপ তৈরির কাজে যুক্ত হইনি।” তাঁর কথায়, “আমাদের এই মণ্ডপ যদি দর্শকদের ভালো লাগে, সেটাই বড় প্রাপ্তি। সেজন্য সব রকম চেষ্টা করছি।”
প্রসেনজিতের গলাতেও একই সুর। তিনি বলেন, “সত্যিই নতুন অভিজ্ঞতা। মনপ্রাণ দিয়ে কাজ করছি। দর্শকদের ভালো লাগলেই পরিশ্রম সার্থক।” হিরন্ময়ের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার জোড়াপুকুরে। আর প্রসেনজিতের বাড়ি এ জেলারই ডেবরার ডুঁয়ায়।
হাতে সময় নামমাত্র। তাই দু’জনে মিলে দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন। থার্মোকল কেটে তৈরি হচ্ছে নানা কারুকার্য। এই সব সুদৃশ্য কাজই মণ্ডপে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হবে। মণ্ডপ তৈরির কাজে সহযোগিতা করছেন দেবাশিস বেরা, অমিত মাইতি’রা। দেবাশিস বলেন, “হাতের কাজ করতে সব সময়ই ভালো লাগে। সেই ভালো লাগা থেকেই মণ্ডপ তৈরি।” একই কথা অমিতের। তিনি বলেন, “এমন অভিজ্ঞতা এই প্রথম। আশা করি, দর্শকদের ভালো লাগবে।” পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সোমনাথ হালদার বলেন, “কয়েক মাস আগে আমরা আর্ট কলেজের এই দুই ছাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করি। নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানাই। এখন সবটা সুষ্ঠুভাবে মিটে যাতে দর্শকদের ভালো লাগে, সেই চেষ্টাই করছি।” এখন শহরবাসীরও অপেক্ষা এক টুকরো মিশরের মাঝে চেনা সেই মাতৃমূর্তিকে একটু অন্য ভাবে দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.