মুঘল আমল থেকে পুজো পান দেবী
যেন টাইম মেশিনে চড়ে নিমেষের মধ্যে পাঁচ শতক পিছিয়ে গেলেন ৮০ বছরের অনিলকুমার পাল। মুঘল আমল থেকে শুরু করে ওলন্দাজদের আগমন, প্রত্যাবর্তন সবই উঠে এল বৃদ্ধের কথায়। আসলে মুখল আমলেই তো শুরু হয়েছিল চুঁচুড়ার ষাণ্ডেশ্বরতলার পালবাড়ির দুর্গাপুজো। অনিলকুমার সেই বাড়িরই সদস্য।
কথিত আছে, বর্ধমানের রাজা প্রতাপাদিত্যের আমলে পাল পরিবারের তৎকালীন কর্তা সেবকরাম পাল সেখানকার জমিদার ছিলেন। এক সাধুর পরামর্শে তিনি চুঁচুড়ায় পুজো শুরু করেন। তবে, সেই সময় থেকেই এই বাড়িতে দুর্গার মূর্তিপুজো হয় না। দুর্গার পটচিত্রের সামনে ঘট পুজো হয়। দুর্গাদালানের উপরের ঘরে সারা বছর রাধামদন গোপালের মূর্তি পুজো হয়।
—নিজস্ব চিত্র।
গঙ্গার ধারে কয়েক বিঘা জমিতে পাল পরিবারের প্রকাণ্ড বাড়ি। বর্তমানে এই বাড়িতে ৮০টি পরিবারের বাস। গোটা বাড়িজুড়ে বনেদিয়ানার ছাপ। পরিবারের লোকজনের দাবি, সে সময়ে পরিবারের মেয়েরা স্নানের ঘাটে যেত বাড়ির মধ্যেই আধ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে। এখনও সেই রাস্তা রয়েছে। মূর্তি না থাকলেও সুদৃশ্য দুর্গাদালানে যাবতীয় আচার মেনেই পুজো হয়। দেবীর গয়নাও রয়েছে অনেক। ষষ্ঠীতে মায়ের বোধন হয়। পরিবারের চিরাচরিত প্রথা মেনে দেবীর পুজো হয়। দশমীর বিকেলে ঘট বিসর্জন দেওয়া হয়। ছ’-সাত পুরুষ ধরে একই ভাবে ধুমধাম করে পুজো চলে আসছে। পরিবারের যে সমস্ত সদস্য বাইরে থাকেন, পুজোর সময় তাঁরাও চুঁচুড়ার বাড়িতে চলে আসেন। অনিলবাবু জানালেন, পুজোর চারটে দিন কচিকাঁচা থেকে শুরু করে পরিবারের নানা বয়সের সদস্যদের উপস্থিতিতে গোটা বাড়িটা গমগম করে। একটা বাড়ি কার্যত পাড়ার চেহারা নেয়।
বৃদ্ধের কথায়, “মুঘলদের পরে ওলন্দাজ এল। ওরাও গেল। গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। যতটুকু শুনেছি, আমাদের বাড়ির পুজো কিন্তু সমানতালে চলে আসছে। এখনও পুজোর দিনগুলিতে পরিবারের সকলের একসঙ্গে পাত পড়ে।” ভবিষ্যতেও যাতে সুচারু ভাবে পুজোর আয়োজন করা যায়, সেই চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে পরিবারের বর্তমান সদস্যদের মাথায়। একটি ট্রাস্টি বোর্ড গড়ার কথাও ভাবছেন তাঁরা।
চুঁচুড়ার আরও কয়েকটি বাড়ির পুজো কয়েকশো বছরের প্রাচীন। আঢ্য বাড়ি, মুখোপাধ্যায় বাড়ি, মল্লিক বাড়ির পুজো এর মধ্যে অন্যতম। এখানে অবশ্য ঘট নয়, দেবীর মূর্তিই পুজো হয়। আঢ্যবাড়িতে দেবী দুর্গা শিবের কোলে আসীন। এই সব বাড়িতেও এখন সাজো সাজে রব। দালানে পড়ছে রঙের পোঁচ। রঙের প্রলেপ পড়ছে দেবীমূর্তিতেও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.