নামেই বিশেষ আদালত। দীর্ঘ অব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আলিপুর জেলের মধ্যে তৈরি ওই বিশেষ আদালতের এখন বেহাল দশা। তাই ৩ ডিসেম্বর খাদিম-কর্তা অপহরণ মামলার দ্বিতীয় পর্যায়ের শুনানি শুরু করার কথা থাকলেও তা শুরু করা যাবে না বলেই মনে করছে বিচার বিভাগ।
নিরাপত্তার কারণে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের মধ্যেই কুখ্যাত অভিযুক্তদের বিচারের বিশেষ ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। খাদিম-কর্তা পার্থ রায়বর্মন অপহরণ মামলার বিচার সেখানেই শুরু হয় ২০০৫ সালে। ২০০৮ সালের ২০ মে ওই মামলাতেই আফতাব আনসারি, আকিব আলি, হ্যাপি সিংহ-সহ পাঁচ অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। তার পরে ওখানে আর কোনও মামলাই হয়নি। হয়নি রক্ষণাবেক্ষণের কাজও। বিচার বিভাগ সূত্রের খবর, এই ভাবে পড়ে থেকে থেকে আদালত কক্ষের বাতানুকূল যন্ত্র, আলো, পাখা অকেজো হয়ে যাচ্ছে। জল পড়ে নষ্ট হচ্ছে ঘরের আসবাবপত্রও।
৩ ডিসেম্বর খাদিম-কর্তা অপহরণ মামলার দ্বিতীয় পর্যায়ের বিচারের শুনানি শুরুর কথা জানার পরেই মামলার বিচারক কাজি রফিউর রহমানকে চিঠি দিয়ে বিশেষ আদালতের এই জীর্ণ অবস্থার কথা জানান আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের সুপার চিত্তরঞ্জন ঘড়াই। সেই চিঠি পেয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখতে আলিপুর জেলে যান বিচারক, সরকারি আইনজীবী এবং অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা। আদালত কক্ষের বেহাল অবস্থা দেখে তাঁরা তাজ্জব। পরিস্থিতি যা, তাতে ৩ ডিসেম্বরে অপহরণ মামলার দ্বিতীয় পর্যায়ের শুনানির কাজ শুরু করা যাবে কি না, তার নিশ্চয়তা কেউই দিতে পারছেন না।
ওই আদালতের এই হাল কী ভাবে হল? এক জেল-কর্তা বলেন, “বিশেষ আদালতটি বিচার বিভাগের সম্পত্তি। আলিপুর জেলের অফিসের দোতলায় তৈরি হয়েছে ওই আদালত। তার ছাদ টিনের। ওই ছাদ থেকে জল পড়েই যত বিপত্তি। অবিলম্বে মেরামতি শুরু করার জন্য পূর্ত দফতরকে খবর দিয়েছেন জেল-কর্তৃপক্ষ।” হাইকোর্টও আলিপুরের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজকে জেলের ওই বিশেষ আদালতে বসেই অপহরণ মামলার দ্বিতীয় পর্যায়ে ছয় অভিযুক্তের বিচার চালানোর নির্দেশ দিয়েছে। বিচার শেষ করতে বলা হয়েছে ১০ মাসে। সরকারি আইনজীবী নবকুমার ঘোষ জানান, ছ’জন অভিযুক্তের মধ্যে চার জন রয়েছে প্রেসিডেন্সি জেলে। তারা হল মোজাম্মেল শেখ, তারিক মেহমুদ, ইশাক আহমেদ ও আখতার হোসেন। আলিপুর জেলে আছে নুর মহম্মদ ওরফে শাহবাজ ও আরশাদ খান। বিশেষ আদালতে বিচারের সুবিধার জন্য চার অভিযুক্তকেও আলিপুর জেলে আনার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। |