কোথাও শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহ, কোথাও আবার আমেরিকায় বোস্টন শহরের হিন্দু মন্দির। নানা ধরনের থিমের সম্ভার শিল্পাঞ্জল জুড়ে। হাতে যে আর সপ্তাখানেক। তাই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সারতে নাওয়া-খাওয়া ভুলতে বসেছেন উদ্যোক্তারা থেকে শিল্পীরা।
দুর্গাপুরের গোপালমাঠ যুব মহলের পুজো এ বার ২৭ বছরে পা দিল। কর্ণাটকের মহিশূর জেলার সোমনাথপুরের ঐশিলা মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। মেদিনীপুর থেকে মণ্ডপ শিল্পী এসেছেন। ঐশিলা মন্দিরটি ১২৬৮ খ্রিস্টাব্দে রাজা দণ্ডনায়ক প্রতিষ্ঠা করেন। এর আর এক নাম সোমনাথপুরা মন্দির। মন্দিরের গায়ে অপূর্ব সব কারুকার্য। মণ্ডপের দেওয়ালে সেই সব কারুকার্য হুবহু তুলে ধরতে দিনরাত এক করে কাজ করছেন মণ্ডপ শিল্পীরা। ঐশিলা মন্দিরের ব্রহ্মা মূর্তির আদলে তৈরি করা হচ্ছে প্রতিমাও। পুজো কমিটির সহ-সম্পাদক রূপক মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন মন্দির দেখতে দেখতে ঐশিলা মন্দিরটি পছন্দ হয়ে যায়।” উদ্যোক্তাদের দাবি, এ বার বাজেট প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।
দুর্গাপুরের নবারুণ ক্লাব সর্বজনীন দুর্গোৎসব এ বার ৪৫ বছরে পা দিল। পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সঞ্জয় পাল জানান, এ বার তাঁরা আমেরিকার বোস্টন শহরের একটি হিন্দু মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করছেন। মণ্ডপ তৈরির কাজ করছেন দুর্গাপুরেরই বিদ্যাসাগরপল্লির নবকুমার কর। মণ্ডপের কাজে কোনও রকম কিছু ত্রুটি রাখতে চান না উদ্যোক্তারা। শোলার উপরে মার্বেল ডাস্ট দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে মণ্ডপটি। মণ্ডপ জুড়ে রামায়ণ, মহাভারতের বিভিন্ন দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। বাড়তি সংযোজন, মনমাতানো আলোকসজ্জ্বা। এ বার তাঁদেরও পুজোর বাজেট প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা, দাবি উদ্যোক্তাদের। পুজো উপলক্ষে মণ্ডপের সামনের মাঠে বসে মেলা। দুর্গাপুর তো বটেই, অন্ডাল, রানিগঞ্জ থেকেও দর্শনার্থীরা ভিড় জমান তাঁদের মণ্ডপে। পুজো দেখার পাশাপাশি মেলার স্বাদও চুটিয়ে উপভোগ করে বাড়ি ফেরেন তাঁরা। এ বার মেলা চলবে ১৮ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত।
ইস্পাত নগরীর জয়দেব সর্বজনীন দুর্গাপুজো এ বার ৪৯তম বর্ষ। এ বার তাদের মণ্ডপ সাজছে শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহের আদলে। মণ্ডপটি তৈরি করছেন শান্তিনিকেতনের আর্ট কলেজের পড়ুয়ারা। পুজো কমিটির সদস্য খালেদ হোসেন জানান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আদর্শকে বেছে নিতেই তাঁদের এই ভাবনা। মণ্ডপের সঙ্গে মানানসই প্রতিমাও তৈরি করছেন তাঁরা। পুরুলিয়ার ছৌ ও কথাকলি নৃত্যশিল্পীর আদলে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। তৈরি করছেন চণ্ডীদাসের শিল্পী। উদ্যোক্তারা দাবি করেন, এ বার তাঁদের পুজোর বাজেট প্রায় সাত লক্ষ টাকা। পুজো কমিটির সম্পাদক বাবলু বিশি জানান, পুজোর চার দিনই থাকছে নানা অনুষ্ঠানও। |