নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
মাদক-পানীয় খাইয়ে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল বর্ধমানের রূপনারায়ণপুর নজরুল পলিটেকনিক কলেজে। চিত্তরঞ্জন রেল আবাসনের ওই তরুণীর অভিযোগ, র্যাগিং নিয়ে মুখ খোলায় তাঁর উপরে এই ভাবে ‘প্রতিশোধ’ নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলের ওই ‘ঘটনা’য় রূপনারায়ণ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের হয় বৃহস্পতিবার রাতে। অভিযুক্ত টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের এক নেতা-সহ তিন ছাত্রছাত্রী, এক নিরাপত্তারক্ষী ও এক বহিরাগত যুবক। শুক্রবার আসানসোল আদালতে ছাত্রীটির গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ জানান, পুলিশ ও গোয়েন্দা দফতর তদন্ত করছে। এক জন গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। কলেজের অধ্যক্ষ ঋতুপর্ণ বসু জানান, ক্যান্টিন ও ইউনিয়ন রুম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। বহিরাগতদেরও প্রবেশ নিষিদ্ধ।
ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনস্ট্রুমেন্টেশন বিভাগের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীর অভিযোগ, গত অগস্টে ভর্তির পরেই দুই সিনিয়র ছাত্র তাঁকে র্যাগিং করে। সে কথা নিজের দাদাকে জানালে তিনি ছেলে দু’টিকে ‘সতর্ক’ করেন। তারা ছাত্র সংসদে এক নেতার দ্বারস্থ হয়। ওই নেতার জন্মদিনে খাওয়ানোর নাম করে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ এক বান্ধবী তাঁকে ইউনিয়ন রুমে নিয়ে যায়। সেখানে ওই নেতা এবং আর এক ছাত্র ছাড়াও তৃণমূলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা বহিরাগত এক যুবক ছিল। ছাত্রীটিকে আমের শরবত দেওয়া হয়। তা খেয়ে তিনি চেতনা হারিয়ে ফেলতে থাকেন।
ছাত্রীর বাবার কথায়, “সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ মেয়ে এসএমএস করে বাঁচাও, আমি ইউনিয়ন রুমে আছি।” কিন্তু তড়িঘড়ি সেখানে গিয়েও তিনি কাউকে দেখতে পাননি। তাঁর দাবি, গেটে থাকা নিরাপত্তারক্ষী প্রথমে মুখ না খুললেও ধমকানোর পরে জানায়, দুই ছাত্র তাঁর মেয়েকে মোটরবাইকে চাপিয়ে বাড়ি নিয়ে গিয়েছে। বাড়ি ফিরে তিনি দেখেন, মেয়ে সংজ্ঞাহীন। বাড়ির লোকজন তাঁকে জানান, এই নিয়ে হইচই হলে মেয়ের নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করে দেওয়া হবে বলে ছেলে দু’টি শাসিয়ে গিয়েছে। ছাত্রীটিকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়।
টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি অশোক রুদ্র বলেন, “আমাদের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। এ ব্যাপারে কিছু বলার নেই।” স্থানীয় তৃণমূল নেতা ধরম কর্মকারেরও বক্তব্য, “লজ্জাজনক ঘটনা। পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নিক।” |