মালদহের জেলা পরিষদের দুই অফিসারের কাজিয়ার জেরে মালদহের এক কম্পিউটার ব্যবসায়ী ২৫ লক্ষ টাকার বিল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। কম্পিউটার সরবরাহের ১০ মাস কেটে যাওয়ার পরেও বিল না পেয়ে ওই ব্যবসায়ী মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন। ওই দুই অফিসার হলেন, জেলা পরিষদের এইও জয়দেব ঠাকুর ও জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক বিকাশ সাহা। বিকাশবাবু বর্তমানে কোচবিহারের মহকুমাশাসক। পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক থাকাকালীন বিকাশবাবু ২০১১ জনগননার জন্য জেলার ১৫ টি ব্লক ও দুইটি পুরসভাকে ৪২ টি কম্পিউটার, ২১ টি প্রিন্টার ও ৪২ টি ইউপিএস সরবরাহ করার জন্য প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার বরাত দেন ওই ব্যবসায়ীর সংস্থাকে। মাস খানেকের মধ্যে জিনিসপত্র সরবরাহও হয়। বিল না পেয়ে ওই ব্যবসায়ী তিন দফায় জেলাশাসকের দ্বারস্থ হন। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন। পরিতোষ সিংহ নামের ওই ব্যবসায়ী জানান, একমাসের মধ্যে কম্পিউটারের বিলের সমস্ত টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। জেলা পরিষদের এইও-র কাছে গেলে উনি বলছেন, যিনি বরাত দিয়েছিলেন তাঁর কাছে যান। আর বিকাশবাবু বলেছেন, আমি খালি বরাত দিয়েছি। টাকা আমি কী করে দেব। মুখ্যমন্ত্রীকে সব জানিয়েছি। দেখি কী হয় নইলে আদালতে যাব। জেলাশাসক শ্রীমতি অর্চনা বলেন, “অনুমোদন হওয়ার আগেই বরাত দিয়ে দেওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।” আর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উজ্জল চৌধুরী বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনে যদি কম্পিউটার কেনার বরাত দেওয়া হয়ে থাকে তবে বিলের টাকা না পাওয়ার কারণ নেই। আমি ফাইলপত্র দেখছি।” ওই দুই অফিসার একে অপরকে এর জন্য দায়ী করেছেন। এইও জয়দেব ঠাকুর বলেন, “বিকাশবাবু নিজে বরাত দিয়ে দেন। আমার সঙ্গে কোনও পরমার্শ করেননি। জেলা পরিষদ অন্ধকারে ছিল বিষয়টিতে। এরমধ্যে কোনও ব্যক্তিগত ব্যাপার নেই।” আর বিকাশবাবু বলেছেন, “সরকারি নির্দেশ মেনেই বরাত দেওয়া হয়েছিল। গত জুন মাসে ডব্লুবিসিএস অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে জয়দেববাবু আমাদের কাছে হেরে যান। আমি জেলা সম্পাদক হয়েছিলাম। এতেই আক্রোশের বশে উনি বিল আটকে রেখেছেন।” বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। তিনি বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনে কম্পিউটার কেনা হলে ব্যবসায়ীকে হেনস্থা করা মানা যায় না। একাংশ অফিসার রাজ্য সরকরকে বদনাম করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে নানা কাজ করছেন। এই বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।” |