|
|
|
|
|
কেশাগারের পাহারাদার
জেল, ব্লো-ড্রাই ইত্যাদির দাপটে চুল হারায় স্বাস্থ্য ও ঔজ্জ্বল্য। সংখ্যাতেও
কমে।
তাকে আবার চিকন, সুন্দর করে তোলে হেয়ার স্পা। নিমেষে, ঠিক ম্যাজিকের মতো।
পুজোর হেয়ার স্টাইল বাছার আগে স্পা কিন্তু করাতেই হবে। অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় |
|
|
অলস হিসেবে চিরদিনই বাঙালির খুব সুনাম আছে। বেলা করে ঘুম থেকে উঠে পাড়ায় আড্ডা দিয়ে দিন শুরু হত, বেশি চিন্তাভাবনা ছিল না, চুল থাকলে ভাল, না থাকলে টাকে হাত বুলিয়ে নানান বিষয়ে তর্ক করে দিন কাটত। জীবনযাপনের মধ্যে কোনও ব্যস্ততা ছিল না, সবাই সুখে বাঁচত। চুল না থাকাটাকে প্রকৃতির নিয়ম হিসেবে মেনে নিত। এখন রবিবারের সকালেও নিস্তার নেই। ছেলের ক্রিকেট কোচিং, বসের বেড়াতে যাওয়ার টিকিট বুকিং, সব রকম ঝঞ্ঝাট থাকে। এ সবের মাঝে চুল না থাকলে লুক আসে না।
আপনার কাজের সুবিধে-অসুবিধে মাথায় রেখে ক্লাব সালোঁ বিশেষ ব্যবস্থা করেছেন। স্পা-এর যাবতীয় আধুনিক চিকিৎসা আপনি পাবেন, কিন্তু আপনি যে স্পা করাচ্ছেন সেটা বুঝতেও পারবেন না। মনে হবে আপনি কোনও হামামে শুয়ে আছেন, দ্রাক্ষারস পান করছেন আর সামনে তন্বী-তুর্কিনি মৃদু সংগীতের সঙ্গে ছন্দ মেলাচ্ছেন। পার্লারে যাওয়ার থাকলে সবার আগে মাথার মধ্যে কাজের চাপগুলি সাঁতার কাটে। এখানে আপনি ল্যাপটপে যাবতীয় জরুরি কাজের সঙ্গে সুদূর আমেরিকায় বন্ধুপত্নীর সঙ্গে চ্যাট করতে করতে চুলকে বাঁচাতে পারবেন। |
|
সচেতন বাঙালি চুলের বিভিন্ন স্টাইলের সঙ্গে সঙ্গে চুলের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, সে দিকটাও খেয়াল রাখেন। আমরা সকলে তো পুজোর সময় চুলে ব্লো-ড্রাই, জেল, হেয়ার মুস প্রভৃতি গাদা গাদা জিনিস লাগিয়ে চুল সেট করি, তখন দেখতে ভাল লাগে ঠিকই, কিন্তু চুলের ক্ষতি অনেকটাই হয়। সুতরাং, পুজোর আগে যদি একটা ‘হেয়ার স্পা’ করিয়ে নিই, তবে চুলের ওপর ভাল ভাবে অত্যাচার চালানো যাবে।
প্রথম ধাপ: প্রথম ধাপে শ্যাম্পু করতে হবে। চুলের ধরন অনুযায়ী বিশেষ শ্যাম্পু বেছে নিতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপ: ক্রিম লাগিয়ে কিছু ক্ষণ রেখে দিতে হবে। দশ মিনিট পরে, স্ক্যাল্পে বিভিন্ন প্রেশার পয়েন্টকে সামলে মাসাজ করতে হবে। খেয়াল রাখবেন, যাঁদের চুল বেশি উঠছে, তাঁদের মাসাজ বেশি ক্ষণ চলবে না, কারণ এতে চুল বেশি উঠে যাবে।
তৃতীয় ধাপ: সাধারণ স্টিম দিয়ে কিছু ক্ষণ রাখতে হবে। তবে খেয়াল রাখবেন, খুশকি থাকলে স্টিম দেওয়া চলবে না।
চতুর্থ ধাপ: সাধারণ জলে ধুয়ে নেবেন।
সব শেষে আপনি লাগাবেন মরক্কো থেকে আগত তেল। লাগিয়ে ব্লো ড্রাই করে নিন। এই তেল প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং চুল ওঠা বন্ধ করে। এতে তৈলাক্ত ভাবটি এতটাই কম, যে আপনি তেলটি লাগিয়ে অনায়াসে বাইরে বেরোতে পারেন। এটি চুলের কেরাটিন বৃদ্ধি করে, ফলে চুল শক্ত ও মজবুত হয়। ফ্রিজি চুলের জন্য এই তেল খুব উপকারী। এই স্পা-র পর চুলে ডবল টং, ক্রিসপার, স্ট্রেটনিং যা-ই করুন, কোনও ক্ষতি হবে না।
|
সেরা অস্ত্র কেরাটিন ট্রিটমেন্ট |
চুল অতিরিক্ত ক্ষতিগ্রস্ত হলে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করাতে হবেন। কেমিক্যালি ট্রিটেড চুল অর্থাৎ স্ট্রেটনিং, পার্মিং, আয়রনিং এবং অতিরিক্ত চুলের রং পরিবর্তন করেন, তাঁদের জন্য এটি বেশি জরুরি। আমাদের চুল কেরাটিন ও জল দিয়ে তৈরি হয়। যারা অতিরিক্ত চুলের স্টাইল করেন, বেশির ভাগেরই চুল থেকে এই কেরাটিন উধাও হয়ে যায়। এই কেরাটিন ফিরিয়ে আনতে, এই ট্রিটমেন্টটি করাই। এটাকে অনেকে ময়শ্চার ট্রিটমেন্টও বলে। প্রথমে তাহিতিয়ান ফুল ও এক্সোটিক অর্গানস থেকে নির্যাস বার করে চুলে লাগানো হয়। এই বিশেষ নির্যাসটি চুলকে শুষ্কতা ও প্রাণহীনতা থেকে রক্ষা করে। প্রথমে কেরাটিন ও প্রোটিন বেসড শ্যাম্পু দিয়ে শ্যাম্পু করা হয়। পরের ধাপে থেরাপিন ক্রিম লাগিয়ে আয়রনিং করে নিতে হয়। শেষ ধাপে থেরাপিন ট্রিটমেন্ট অয়েল লাগিয়ে কিছু ক্ষণ রেখে দিতে হবে। সব শেষে চুল ধুয়ে ব্লো-ড্রাই করে নিন। |
|
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা
|
|
|
|
|
|