ওষুধের দাম বাড়ে এমন কোনও নীতি কেন্দ্র নিতে পারে না বলে সাফ জানাল সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের বক্তব্য, চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনে থাকা ওষুধের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
১৯৯৯ সালের পর থেকে আর কোনও ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের তালিকায় আনার চেষ্টা করেনি কেন্দ্র। ওষুধের দাম নিয়েও মামলাও চলেছে প্রায় ন’বছর। তাই বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখতে সুবিধা হয়েছে কেন্দ্রের। এই বিষয়েও সরকারের কড়া সমালোচনা করেছে কোর্ট। ওষুধ সংক্রান্ত নতুন নীতিতে দাম আরও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মামলার আবেদনকারীর আইনজীবী। বিচারপতি জি এস সিঙ্ঘভি ও এস জে মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চের বক্তব্য, অত্যন্ত জরুরি ওষুধের দাম বাড়ে এমন যে কোনও নীতি বাতিল করে দেওয়া হবে। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল সিদ্ধার্থ লুথরা জানিয়েছেন, ২৫ নভেম্বর ওষুধ সংক্রান্ত নতুন নীতির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। ২৭ নভেম্বর ফের এই মামলার শুনানি হবে।
রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের অধিকর্তা চিন্তামণি ঘোষ বলেন, “গোটা দেশের পক্ষেই সুপ্রিম কোর্টের এই রায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ওষুধের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে সাধারণ মানুষ ক্রমশ চিকিৎসার অধিকার হারাতে বসেছেন।” তাঁর কথায়, “এই রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান খুলে আমরা পরিস্থিতি খানিকটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি।”
ওষুধ নিয়ে আন্দোলন করে এমন একটি সংস্থার তরফে ফার্মাকোলজিস্ট স্বপন জানা বলেন, “১৯৭৯ সালে কেন্দ্র ড্রাগ প্রাইস কন্ট্রোল অর্ডার তৈরি করেছিল। সেই সময়ে প্রায় সাড়ে তিনশো ওষুধের দাম তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারত। সংখ্যাটা এখন কমতে কমতে ৭৪-এ এসে ঠেকেছে।”
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের খবর, ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে কী ভাবে রাখা যায় তা স্থির করতে কিছু দিন আগে একটি বিশেষ কমিটি গড়া হয়েছিল। কিন্তু সেই কমিটি এখনও কোনও পদক্ষেপ করে উঠতে পারেনি। সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি বৈঠক ডাকতে চলেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(হু)-ও জানিয়েছে, ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রিত না হলে ভারতের মতো দেশে চিকিৎসা ক্রমশ সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে। |